আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ১০:৫৭

ঝিকরগাছা সুমাইয়া হত্যার প্রধান আসামী বাপ্পিসহ গ্রেফতার-০৩, মটরসাইকেল, মোবাইল জব্দ

গত ২৫/০৩/২০২২ তারিখ সকাল ০৬.০০ ঘটিকায় ঝিকরগাছা থানাধীন চাঁপাতলা সাকিনস্থ ঝিনুকদাহ মাঠে অজ্ঞাত এক মহিলার গলাকাটা লাশ পাওয়ার সংবাদ পেয়ে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ লাশটিকে উদ্ধার করে এবং পরিচয় সনাক্ত করে। নিহতের নাম সুমাইয়া আক্তার (২৭), পিতা- রেজাউল, স্বামী-আইয়ুব হোসেন, সাং- বুরুজবাগান, থানা-শার্শা, জেলা-যশোর। নিহতের পিতা রেজাউল বাদী হয়ে নিহত সুমাইয়ার বয় ফ্রেন্ড বাপ্পিকে সন্দেহ করে এজাহার দায়ের করলে ঝিকরগাছা থানার মামলা নং- ১৫ তাং-২৫/০৩/২০২২ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জেয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য থানা পুলিশ ও ডিবিকে কঠোর দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় ওসি ঝিকরগাছা থানা ও ওসি ডিবি রুপন কুমার সরকার, পিপিএম দ্বয়ের তত্ত্বাবধানে ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে ঘটনায় জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী আঞ্জুয়ারা বেগমকে ০১/০৪/২০২২ তারিখে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। তার দেওয়া তথ্য ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির এসআই শামীমের নেতৃত্বে একটি একটি চৌকশ টিম ইং ০৪/০৪/২০২২ তারিখ ভোর ০৫:৫০ ঘটিকার সময় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানাধীন বংশীপুর এলাকায় অভিযান করে চোরাই পথে সীমান্তবর্তী ভারতে পলায়নের সময় প্রধান আসামী আলামিন- বাপ্পিকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পি হত্যার দায় স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্য মতে হত্যার মিশনে ব্যবহৃত মটরসাইকেলটি লুকিয়ে রাখার দায়ে তার চাচা জুয়েলকে আটক করে মটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও হত্যায় ব্যবহৃত চাকুটি (ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত) যে দোকান থেকে ক্রয় করেছিল, সেই দোকান হতে চাকুর বক্স উদ্ধারসহ ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ২০১২ সাল থেকে সুমাইয়ার সাথে বাপ্পির প্রেম সম্পর্ক ছিল, ২০১৫ সালে বাপ্পি বিদেশে চলে গেলে সুমাইয়ার বিয়ে হয় শার্শা থানার লক্ষনপুর সাকিনের আইয়ুব হেসেনের সাথে। সেই ঘরে তাদের ১ টি পুত্র সন্তান হয়। ২০১৮ সালে বাপ্পি দেশে ফিরে সুমাইয়ার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করে এবং এক পর্যায়ে ১ বছর আগে সুমাইয়া ঘর সংসার ছেড়ে বাপ্পির নিকট চলে আসে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা হয়ে ফিরে গেলেও পুনরায় চলে এসে স্বানী স্ত্রীর মত যশোর শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকে বাপ্পি ও সুমাইয়া। বাপ্পির সাথে সুমাইয়া মাদকাসক্ত হয়ে একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্ক সুমাইয়ার দাবী বাপ্পির। যে কারনে রাগে ক্ষোভে সুমাইয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে ইং ২৪/০৩/২০২২ তারিখে সুমাইয়াকে ডেকে নিয়ে বেনাপোল পুটখালী এলাকায় গিয়ে ফেনসিডিল সেবন করে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় চাঁপাতলা ঝিনুকদাহ মাঠে নিয়ে হাতের রগ কেটে ও জবাই করে হত্যা করে সুমাইয়াকে।

রক্তমাখা কাপড় খোলে বাপ্পির মা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে, এবং বাপ্পির চাচা মোটরসাইকেলটি লুকিয়ে রাখে। বাপ্পি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়, পরে ফিরে আসলে আজ ভোরে তাকে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের নাম ঠিকানাঃ
১. আলামিন-বাপ্পি (৩২), পিতা- আলাউদ্দিন, সাং-কাউরিয়া চৌধুরী পাড়া, থানা- ঝিকরগাছা,
২. মোঃ জুয়েল (৩৬), পিতা-মৃত আবু বক্কর, সাং- মুক্তারপুর, থানা- মনিরামপুর উভয় জেলা- যশোর।

ইতোপূর্বে গ্রেফতার-
৩. আঞ্জুয়ারা বেগম (৫৫), স্বামী-আলাউদ্দীন, সাং- কাউড়িয়া চৌধুরী পাড়া,থানা- ঝিকরগাছা, জেলা-যশোর।

এ সময় আসামীদের কাছ থেকে ০২ টি মোবাইল, ০১ টি মটরসাইকেল, চাকুর বাক্স,ঘটনাস্থল থেকে চাকু উদ্ধার করা হয়।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত