যৌন দুর্বলতা দূর করে যৌন শক্তি বৃদ্ধি ও চির যৌবন প্রাপ্ত হওয়ার নেশায় পুরুষাঙ্গ রিপ্লেসমেন্ট করার জন্য বাঘারপাড়ার -ধুপখালী পড়ার বৃদ্ধ নকিম উদ্দিনের (৬০)কে হত্যা করে পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখ নিয়ে পালিয়ে যায় চুয়াডাঙ্গা জেলার মোহাম্মদ জামা এলাকার লিটন মালিতা (৪০)।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের তান্ত্রিক কবিরাজ আঃ বারেককের (৬৩) নির্দেশে এ ঘটনা ঘটান। যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে ঘাতক লিটন ও কবিরাজ বারেক আটক হওয়ার পরে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে এসেছে।
ঘাতক লিটন মালিথা চুয়াডাঙ্গা জেলার মোহাম্মদ জামা গ্রামের মৃত হানিফ আলী ছেলে। ও আটক তান্ত্রিক কবিরাজ চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে।
গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এ সময়ে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি উপর ভিত্তি করে অভিযান চালিয়ে নিহতের একটি পুরুষাঙ্গ, ১টি অন্ডকোষ, ১টি চোখের মনি, হত্যা কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু-রশি,তান্ত্রিক কবিরাজীর বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে।
উল্লেখ্য গত ৩০ই মে ২০২২ তারিখে বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা পাইক পাড়া পশ্চিমপাড়ার চাষী বেনজির আহমেদের বাড়ি থেকে ধান কাটার শ্রমিক নকিম উদ্দিন (৬০) এর মৃতদেহ উদ্ধার করে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ। এ সময়ে পুলিশ নিহতের সুরতহাল শনাক্ত করেন তাকে হত্যা করে তার পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর নিহত নকিম উদ্দিনের ছেলে ৩১শে মে ২০২২ ইংরেজি তারিখে অজ্ঞাত নামে বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকার বলেন, তান্ত্রিক কবিরাজ আঃ বারেক এর নির্দেশে বিকৃত মানসিকতার অধিকারী লিটন যৌন শক্তি বৃদ্ধি ও চির যৌবন প্রাপ্ত হওয়ার নেশায় দীর্ঘদিন যাবৎ নর-হত্যা পূর্বক পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি সংগ্রহ
করার চেষ্টা করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে কৃষানের কাজ, রিক্সা চালনা করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে হত্যার চেষ্টা ও পুরুষাঙ্গ,অন্ডকোষ ও চোখের মনি সংগ্রহের চেষ্টার একপর্যায়ে ইং ২৬শে মে ২০২২ তারিখে বাঘারপাড়া সাতিয়ানতলা বাজারে এসে কৃষান হিসেবে
নিয়োজিত হওয়ার আগে নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের সাথে তার পরিচয় হয়। নকিম উদ্দিনকে টার্গেট করে তার সাথে গৃহস্থ বেনজির আহম্মেদ এর বাড়ীতে কৃষানের কাজে নিয়োজিত হয়। একপর্যায়ে সে ২৯শে মে ২০২২ তারিখ দিবাগত রাতে কবিরাজ বারেকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তার নির্দেশে রশি দিয়ে নকিম উদ্দিনের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে বিকৃত মানসিকতার অধিকারী আসামী লিটন। হত্যা পর পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক লিটন নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কর্তন ও ডান চোখের মনি নিয়ে পালিয়ে যায়। শুধু তাই নয় ইতোপূর্বে তান্ত্রিক কবিরাজ আঃ বারেক তাকে যৌন শক্তি বৃদ্ধির প্রলোভন দেখিয়ে লিটনের সাথে একাধিকবার সম-কামি যৌন সঙ্গম করে বিকৃত মানসিকতা সৃষ্টি করেন। এর পর থেকে কবিরাজ বারেকের নির্দেশে লিটন বিভিন্ন পুরুষ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক করে প্রকৃতির নিয়মের বাহিরে যৌন সঙ্গম করে এবং পরিকল্পনা মোতাবেক পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও চোখের মনি সংগ্রহের নিমিত্তে নর-হত্যার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। মামলাটি ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হাওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার মামলাটির তদন্তভার দেন যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকারের নিকটে। একপর্যায়ে আমি মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের চৌকস অফিসার
এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শহিদুল ইসলামকে। একপর্যায়ে তারা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিম কে সঙ্গে নিয়ে ৩১শে মে ২০২২ তারিখে ১লা জুন ২০২২ ইংরেজি তারিখের দুপুর পর্যন্ত ছদ্মবেশে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর চর ঘিওর মাঠে কৃষান সেজে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকারী কৃষান লিটনকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নিহত কৃষান নকিম উদ্দিনের চোখের মনি, অন্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ একটি খড়ের পাল্লা (বিছালী) এর মধ্য থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে কারোক্তি মোতাবেক একই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা লোকনাথপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তান্ত্রিক কবিরাজ আব্দুল বারেক কে আটক করতে সক্ষম হয়।এ সময়ে কবিরাজের বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেন চৌকস দলের সদস্যরা।