সিলেটের ওসমানীনগরে অচেতন অবস্থায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী পাঁচজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেছে। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওসমানীনগরের তাজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলচ-ী সড়কের একটি বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহতরা হলেন- উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই (খাতুপুর) গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও রফিকুলের ছোট ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৬)।
হাসপাতালে ভর্তি আছেন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) এবং মেয়ে সামিরা ইসলামকে (২০)।
খাবারের বিষক্রিয়ায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূইয়া।
তিনি বলেন, ‘অসুস্থ তিনজন আইসিইউতে আছেন। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিষাক্ত বিষজাতীয় কোনো খাবার খাওয়ানোর ফলে এমনটি হতে পারে। তবে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। নিহতদের ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’
ওসমানীনগর থানার ওসি মাইনুল বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আমরা তাজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলচ-ী সড়কের একটি বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় পাঁচজনকে উদ্ধার করি। তাদের কক্ষের দরজা ভেতর থেকে সিটকিনি লাগানো ছিল। আমরা সিটকিনি ভেঙে ঘরে প্রবেশ করি।’
তিনি জানান, উদ্ধারের পর পাঁচজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ২টার দিকে দুইজন মারা যান। কীভাবে এ ঘটনা ঘটল তা তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বাসায় থাকা চার আত্মীয়কে থানায় নেওয়া হয়েছে।
প্রবাসীরা যে বাসায় ভাড়া থাকতেন তার মালিক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অরুনদোয় পাল ঝলক। তিনি বলেন, ‘দুপুরে আমি খবর পাই তারা ঘর বন্ধ করে আছেন। ডাকলেও সারা দিচ্ছেন না। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে।’
এই ফ্ল্যাটের অন্য কক্ষে প্রবাসীদের কয়েকজন আত্মীয় থাকেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা সুস্থ আছেন। এ ঘটনার ব্যাপারে তারা কিছুই বলতে পারেনি। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে যাই।’
যুক্তরাজ্য প্রবাসী একই পরিবারের পাঁচজন গত ১২ জুলাই দেশে ফিরেন। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসা শেষে ১৮ জুলাই ওসমানীনগরে বাসা ভাড়া নেন।