আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৮:২২

যশোর বেনাপোল ইছামতি থেকে ৩ টি লাশ উদ্ধার।

শার্শা ও বেনাপোল প্রতিনিধি: ভারত সীমান্তের ইছামতী নদীর তীর থেকে ৩ বাংলাদেশি যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে পৃথকভাবে যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ভারতীয় ইছামতি নদীর ফকিরবাড়ী ঘাট থেকে জাহাঙ্গীর কবির (৩৭) ও পুটখালী চরের মাঠ ঘাট থেকে সাবুর আলী (৩৫) এর লাশ উদ্ধার হয়। একইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার সময় পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ইছামতি নদী থেকে সাকিবুল ঢালী (৩০) নামে আরেক যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার হয় ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনস্থ এলাকা থেকে। তিনজনের মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত জাহাঙ্গীর কবির বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর গ্রামের ইউনুছ মোড়লের ছেলে। তার লাশ পাঁচ ভুলোট এলাকা থেকে উদ্ধার করে শার্শা থানা পুলিশ এবং সাবুর আলীর লাশ দুই কিলোমিটারের ব্যবধানে পুটখালী চরের মাঠ এলাকা থেকে উদ্ধার করেন বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ। সাবুর আলী একই থানার দিঘীরপাড় গ্রামের উত্তরপাড়ার আরিফ হোসেনের ছেলে। বিকেল সাড়ে ৪টায় উদ্ধার হওয়া নিহত সাকিবুল একই গ্রামের জামিনুর রহমানের ছেলে। সে দীর্ঘদিন বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘীরপাড় গ্রামে নানা জাবেদ আলীর বাড়িতে বসবাস করতো। তার পৈত্রিক বাড়ি যশোর জেলার চৌগাছা থানার শাহাজাদপুর গ্রামে।

স্থানীয়রা বলেছেন, তারা রাতের আঁধারে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করায় তাদেরকে ভারতীয় বিএসএফ পিটিয়ে হত্যা করেছে। পরে, তাদের লাশ এপাশে ফেলে রেখে গেছে।

নিহত জাহাঙ্গীর কবিরের ভাই বলেন, আমার ভাই ১৫ বছর ধরে ভারত থাকেন। সেখানে বিয়ে করে ওই দেশের নাগরিক হয়ে বসবাস করছিলো। সেখানে তার একটি কন্যা সন্তান আছে। সে কয়দিন আগে ভারত থেকে বাড়ি আসে। গতরাতে সে সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে ভারতে যাওয়ার সময় এঘটনা ঘটে।

নিহত সাবুর আলীর স্ত্রী হাসি বেগম বলেন, ‘একজন আমার বাড়িতে এসে খবর দেয়’ পুটখালী আমবাগানে আমার স্বামীকে কে বা কারা মেরে ফেলে রেখে গেছে। পরে আমি একটি ইজিবাইক নিয়ে সেখানে যেয়ে দেখি আমার স্বামী অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। তখন তাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথের মধ্যে সে মারা যায়।

পুটখালী বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার সলিমুল্লাহ ও পাঁচ ভুলোট বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার বাচ্চু মিয়া জানান, ১৮ ডিসেম্বর সকালে সীমান্তের ইছামতি নদীর তীর থেকে দুই বাংলাদেশি যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ইছামতি নদী থেকে আরেক যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। তবে, কে বা কারা তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি।

শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমির আব্বাস জানান, পাঁচ ভুলোট সীমান্ত থেকে উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীরের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বিকেলে সাকিবুল নামে আরেক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

বেনাপোল পোর্ট থানার সেকেন্ড অফিসার ও সুরতহাল রিপোর্টকারী লিখন কুমার জানান, পুটখালী সীমান্ত থেকে সাবুর আলীকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও পথিমধ্যে সে মারা যায়। তার শরীরে একািধক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে ৫ যুবকের একটি দল চোরাই পণ্য আনতে পাঁচভুলোট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যায়। এরমধ্যে ৩ যুবকের পিটিয়ে হত্যা করা লাশ ভারত সীমান্তের ইছামতি নদীর তীর থেকে উদ্ধার হলেও এখনও পর্যন্ত ২ জনের কোন খবর পাওয়া যায়নি।

আরো সংবাদ