আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৪:০১

যারা গানের ‘গ’-ও বোঝে না, তারাই সমালোচনা করছে: এনটিভি অনলাইনকে ড. মাহফুজ।

খানজাহান আলী নিউজডেস্ক :

 

ড. মাহফুজুর রহমান। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান। এটিএন নিউজেরও চেয়ারম্যান তিনি। একসময় তিনি ছিলেন সফল পোশাকশিল্প (গার্মেন্ট) ব্যবসায়ী। একাধিকবার জাতীয় রপ্তানি ট্রফিও পেয়েছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত চ্যানেল এটিএন বাংলা পেয়েছে এমি অ্যাওয়ার্ডসহ বহু পুরস্কার। গান গাইতে ভালোবাসেন তিনি। এবার ঈদুল আজহায় এটিএন বাংলায় সম্প্রচারিত তাঁর একক সংগীতানুষ্ঠান ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক সফল্য, গানের জগতে নিজেকে জড়ানো এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এটিএন বাংলার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের সাংবাদিক নাইস নূর।

এনটিভি অনলাইন : দেশের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘এটিএন বাংলা’ সম্প্রতি ২১ বছরে পা রেখেছে। কোন অনুপ্রেরণা থেকে আপনি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল করার উদ্যোগ নিলেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : আমি প্রধানত গার্মেন্ট (তৈরি পোশাক রপ্তানি) ব্যবসা করতাম। এখনকার মতো ওই সময় বাংলাদেশে ভালো কাপড় তৈরি হতো না। উন্নতমানের কাপড় আমরা এখানে পেতাম না। সে কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের কাপড় কিনতে হতো। আমাকে প্রতি মাসে কাপড় কিনতে বোম্বেতে (ভারতের মুম্বাই) যেতে হতো। বোম্বেতে কাপড় আমদানির জন্য যে ব্যক্তি আমাকে হেল্প করতেন, তিনি একদিন আমাকে বললেন, ‘চলো, তোমাকে জিটিভি অফিসে নিয়ে যাই।’ তখন ভারতে মাত্র তিন-চারটা টিভি চ্যানেল ছিল। এটিএন মিউজিক নামেও একটি চ্যানেল ছিল। মাদ্রাজে (বর্তমান চেন্নাই) ছিল সানটিভি। যাই হোক, জিটিভি দেখতে গেলাম। দেখার পর আমি চিন্তা করলাম, বাংলাদেশে এ রকম চ্যানেল আমরা কেন করতে পারব না?
অন্যদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানির জন্য প্রায়ই আমাকে ইউরোপ ও আমেরিকায় যেতে হতো। আমি হোটেলে থাকতাম। ইতালি ও জার্মানিতে গিয়ে দেখলাম, সেখানকার টিভি চ্যানেলগুলো তাদের নিজস্ব ভাষায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। সে ভাষা আমি বুঝতাম না। কাজ শেষে হোটেলে গিয়ে ঘুমানো ছাড়া কিছুই করার থাকত না। বিদেশি ভাষার টিভি কি দেখা যায়? তখন আমি চিন্তা করলাম, আমরা যদি বাংলা ভাষায় একটা চ্যানেল করতে পারি এবং সেটা যদি পৃথিবীর সব জায়গায় নিয়ে যেতে পারি, তাহলে তো আমরাও বিদেশে বসে বাংলা টিভি দেখতে পারব।
আরেকটা বিষয় ছিল, স্যাটেলাইট টিভি কীভাবে করতে হয়, এ বিষয়ে আমার কোনো জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা ছিল না। পরপর কয়েকবার বোম্বেতে জিটিভির অফিসে আমি গেলাম। এরপর তাঁদের একজনকে বললাম, ‘ভাই, তোমাদের এখানে আমি অনুষ্ঠান চালাতে চাই।’ জিটিভি আমার প্রস্তাবে প্রথমে রাজি হলো। কিন্তু কিছুদিন পরে তারা আমাকে জানিয়ে দিল, তাদের ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাইরের অনুষ্ঠান জিটিভিতে চালাতে দেওয়া হবে না।
এরপর আমার এক ফ্রেন্ড আমাকে বলল, ‘চলো, তোমাকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাই। দেখ, তুমি চেষ্টা করো, কিছু হয় কি-না।’ সে আমাকে বোম্বের ‘এটিএন মিউজিক’ চ্যানেল অফিসে নিয়ে যায়। সিদ্ধার্থ শ্রীবাস্তব নামের এক ভদ্রলোক তখন চ্যানেলটা চালাতেন। আমরা তাঁকে ভালোভাবে বুঝিয়ে এটিএন মিউজিক চ্যানেলে সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা—এই এক ঘণ্টা একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচারের অনুমতি নিলাম। তাঁরা অনেক টাকা ডিমান্ড করেছিল। শুরুতে ওই এক ঘণ্টার অনুষ্ঠান চালানোর জন্য আমাকে এক লাখ ডলার দিতে হয়েছিল।
তখন আমার কাছে অল্টারনেটিভ কিছুই ছিল না। আমাদেরও অনেক লস (ক্ষতি) হয়েছে। এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানে এক লাখ ডলার খরচ করে সেই অর্থ তুলে আনা সম্ভব ছিল না। তারপরও দেশপ্রেম থেকে বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছিলাম। অভিজ্ঞতাও হয়েছিল। আমরা বাংলাদেশ থেকে অনুষ্ঠান নির্মাণ করে সেটাকে বেটা ক্যাসেট করে হংকংয়ে পাঠাতাম। বোম্বেতে তারা ওই অনুষ্ঠান প্রচার করত না, হংকং থেকে সম্প্রচার করত।

এনটিভি অনলাইন : এটিএন বাংলা নামটি কীভাবে এলো? ওই সময় কী ধরনের অনুষ্ঠান নির্মাণ করতেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : বাংলা নাটক ও গানের অনুষ্ঠান আমরা নির্মাণ করতাম। সিনেমা প্রচার করতে পারতাম না। কারণ, সিনেমায় দুই-আড়াই ঘণ্টা সময় লাগত। তবে সিনেমার গান চালাতে পারতাম। আর ছিল নাটক। এক ঘণ্টার ওই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা অনেক দর্শক পেয়েছিলাম। আমাদের তো অভিজ্ঞতা ছিল না। বিটিভির কিছু অবসরপ্রাপ্ত লোককে অনুষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য কাজে লাগিয়েছিলাম।
এর ছয় মাস পর ভারতের মোদি গ্রুপ মামলা করে এটিএন মিউজিক চ্যানেল বন্ধ করে দেয়। মোদি গ্রুপের সঙ্গে এটিএন মিউজিক চ্যানেলের লেনদেন ছিল, তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। এরপর চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা বিপাকে পরে যাই। এক ঘণ্টা হলেও অনুষ্ঠানটি তো জনপ্রিয়তা পেয়েছিল!
যাই হোক, এর পরে একবার সিঙ্গাপুরের এক মেলায় গিয়েছিলাম। সেখানে থাইল্যান্ডের থাইকম স্যাটেলাইটের লোকজনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। মালয়েশিয়াসহ অন্য আরো কয়েকটি দেশের স্যাটেলাইট কোম্পানির লোকজনও সেখানে ছিল। এরপর থাইকম স্যাটেলাইটের পক্ষ থেকে আমাদের একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারা বলেছিল, ‘তোমরা যদি আমাদের ২৪ ঘণ্টা নাও, তাহলে তোমাদের স্পেশাল রেট ও ফ্যাসিলিটি দেবো। আমাদের থাইল্যান্ডের টেলিপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে অনুষ্ঠান চালানোর ব্যবস্থা করে দেবো। আমরা স্টুডিও তৈরির ব্যবস্থাও করে দেবো।’ এতে আমরা রাজি হই এবং তাদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করি। থাইল্যান্ডে একটি স্টুডিও তৈরি করি। বাংলাদেশ থেকেও কয়েকজনকে থাইল্যান্ডে পাঠাই। বাংলাদেশে অনুষ্ঠান নির্মাণ করে সেটার বেটা ক্যাসেট ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিসে থাইল্যান্ডে পাঠাতে হতো। সোমবারের অনুষ্ঠান আমরা তিন-চার দিন আগে, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের মধ্যে পাঠিয়ে দিতাম।
তখন দেশে শুধু বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন) ছিল। বিজ্ঞাপনদাতারা সব বাজেট বিটিভির জন্য বরাদ্দ রাখতেন। আমরা নতুন একটা চ্যানেল করেছি। কিন্তু মাল্টিন্যাশনাল কোনো কোম্পানি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের জন্য বাজেট রাখত না। তখনো আমরা বাংলাদেশে আর্থ স্টেশন বসানোর অনুমতি পাইনি। সে সময় আমরা সরকারকে দেখাতাম, এই অনুষ্ঠানগুলো আমরা এক্সপোর্ট করছি। এটার জন্য আমাদের রেমিট্যান্সও আনতে হতো। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তখন বাংলাদেশের সবাই এটিএন বাংলা দেখতে পেত। এভাবেই এটিএন বাংলা চ্যানেলের জন্ম হয়।
থাইল্যান্ডে ক্যাসেট পাঠিয়ে প্রায় চার বছর বাংলাদেশে আমরা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছি। ভারতে এটিএন মিউজিক চ্যানেলটি যে বন্ধ হয়ে যায়, মূলত ওখান থেকেই চ্যানেলের নামের ধারণা আমরা নিয়েছি। বাংলাদেশে ‘এটিএন বাংলা’ নামে চ্যানেলের রেজিস্ট্রেশনও করি। নামটি নিয়েছি, কারণ এরই মধ্যে বাংলাদেশের দর্শক ওই চ্যানেলটির নাম জানতেন।
যা হোক, এটিএন বাংলার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা অনুষ্ঠানগুলো কিনতাম। তখন চ্যানেল আইয়ের ফরিদুর রেজা সাগর তাঁদের ইমপ্রেস টেলিফিল্ম থেকে নাটক, সিনেমা ও অনুষ্ঠান নির্মাণ করতেন। তাঁরা আমাকে তাঁদের নির্মিত অনুষ্ঠান দুই ঘণ্টা চ্যানেলে চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমিও সম্মতি দিয়েছি। তাঁরা দুই বছর পর্যন্ত দুই ঘণ্টা আমাদের এখানে স্লট ভাড়া নিয়ে অনুষ্ঠান চালিয়েছিলেন। এরপর তাঁরা সরকারের কাছে একটি চ্যানেল চেয়ে আবেদন করেন এবং পেয়ে যান।
আসলে তখন স্যাটেলাইট চ্যানেল কেউ বুঝত না। সবকিছু ছিল টেরিস্ট্রিয়াল। সরকার অনুমতি না দেওয়ার কারণে আমরা ভিডিও অনুষ্ঠান এক্সপোর্ট করার কথা বলেছিলাম। তখন সরকারকে রেমিট্যান্স দিতাম। আমি যেহেতু গার্মেন্ট ব্যবসা করতাম, দেশের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আমার অফিস ছিল। ব্যবসার আয়ের টাকা দিয়ে অনুষ্ঠান তৈরি করতাম।

এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশ থেকে এটিএন বাংলার খবর প্রচার এবং অন্যান্য কার্যক্রম কীভাবে শুরু হলো?
ড. মাহফুজুর রহমান : আর্থ স্টেশন ছাড়া টিভিতে নিউজ চালানো সম্ভব ছিল না। চ্যানেলে নিউজ চালানোর জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন করি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়ার তিন ঘণ্টা আগে আমাদের আর্থ স্টেশন বসানোর ও খবর পড়ার অনুমোদন দিয়েছিল। এরপর আমরা বাংলাদেশে আর্থ স্টেশন বসিয়েছি।
লাইসেন্স পাওয়ার পর ভালো লেগেছে। তবে দেশে চ্যানেল চালু হওয়ার চার বছর পরও থাইল্যান্ড থেকে আমাদের খবর সম্প্রচার করতে হতো। থাইল্যান্ডে এক-দুজন নিউজ রিডারকে পাঠিয়ে দিতাম। আর খবরগুলো ফ্যাক্সের মাধ্যমে পাঠানো হতো। ভিডিও ফুটেজও আলাদাভাবে পাঠানো হতো।
আরেকটা কথা শেয়ার করি। তা হলো, আর্থ স্টেশন বসানোর পর স্যাটেলাইটের টেকনিশিয়ান নিয়ে সমস্যায় পড়ে যাই। দেশে কোনো টেকনিশিয়ান নেই, অভিজ্ঞ লোক নেই। বিটিভির যাঁরা ছিলেন, তাঁদের শুধু টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল চালানোর অ্যাবিলিটি ছিল। বিটিভির অবসরপ্রাপ্ত কিছু লোককে আমরা চাকরি দিলাম, কিছু লোককে কাজ শেখানোর জন্য থাইল্যান্ডে পাঠালাম। আমাদের কিছু ইঞ্জিনিয়ার সেখানে পাঁচ-ছয় মাস অবস্থান করে দেশে ফিরে আসেন। এর মধ্যে থাইল্যান্ড থেকে থাইকম স্যাটেলাইটের একজন টেকনিশিয়ানকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। তিনি ছয় মাস এখানে থেকে আমাদের সব লোককে প্রশিক্ষণ দিয়ে চলে যান।
এনটিভি অনলাইন : এটিএন বাংলার স্লোগান ‘অবিরাম বাংলার মুখ’ কীভাবে এলো?
ড. মাহফুজুর রহমান : ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নির্মাতা হানিফ সংকেত এটা দিয়েছিলেন। চ্যানেলের জন্য একাধিক স্লোগান আমরা তৈরি করেছিলাম। বিভিন্ন জায়গা থেকে স্লোগান আহ্বানও করা হয়েছিল। কিন্তু হানিফ সংকেতের দেওয়া স্লোগানটি আমরা সবাই পছন্দ করি।
এনটিভি অনলাইন : এমি অ্যাওয়ার্ড, বজলুর রহমান স্মৃতিপদক, এশিয়ান ব্রডকাস্টার অব দ্য ইয়ার, ইউনাইটেড নেশনস করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ইউএনসিএ) অ্যাওয়ার্ডসহ এটিএন বাংলার ঝুলিতে অনেক পুরস্কার। আপনি নিজেও একাধিকবার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পেয়েছেন। এই অর্জনগুলো কীভাবে দেখছেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : ‘আমরা করবো জয়’ নামে একটি অনুষ্ঠান আমরা প্রচার করতাম। সেখানে ‘আমরাও পারি’ নামে একটা ডকুমেন্টরি আমরা প্রচার করি। ইউনিসেফ আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস ডে অব ব্রডকাস্টিং’ নামে একটি প্রতিযোগিতা রয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সারা বিশ্বের সব টিভি চ্যানেলকে আহ্বান জানানো হয়। প্রতিযোগিতায় বাচ্চাদের জন্য নির্মিত অনুষ্ঠান দেখানো হয়। সেখানে আমরা অংশগ্রহণ করি এবং ‘এমি অ্যাওয়ার্ড’ পাই। আমরা এশিয়া অঞ্চল থেকে পর পর ছয়বার এমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলাম। এটা অনেকের অজানা। নিউইয়র্কে ইউনিসেফের কার্যালয়ে অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানটি হয়। একবার ইউনিসেফ থেকে আমাদের বলা হয়, যদি আমরা আরো একবার মনোনয়ন পাই, তাহলে আমাদের লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট (আজীবন সম্মাননা) দেওয়া হবে। সৌভাগ্যবশত আমরা সপ্তমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছিলাম এবং ইউনিসেফ থেকে অ্যাওয়ার্ডটি গ্রহণ করি। এটা পৃথিবীর আর কোনো চ্যানেল পায়নি।
আমি ১০ বছর গার্মেন্টের সর্বোচ্চ এক্সপোর্টার ছিলাম। এ জন্য পরপর আটবার প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। এটা পর পর খুব কম মানুষ পেয়েছেন। অবশ্যই এটা ভালো লাগার কথা। আসলে আমার প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম ছিল। চেষ্টা না করলে কেউ কোনোদিন সফল হতে পারে না। চেষ্টাটাই বড় কথা। আমার সফলতার প্রধান কারণ অত্যধিক জেদ। আমি যদি বলি এই কাজটা করব, তাহলে সেই কাজটা যেভাবেই হোক, করেই ছাড়ব। আমি লাইফে খুব কম কাজে আনসাকসেসফুল (ব্যর্থ) হয়েছি।

তবে একটি কাজ আমি করতে পারিনি। যখন আমি ক্লাস নাইন-টেনে পড়ি, তখন আমার শখ হয়েছিল বেহালা বাজানোর। আড়াই হাজার রুপি দিয়ে একটা বেহালাও কিনেছিলাম। বেহালা কেনার পরদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সেটি বাজানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। শোঁ শোঁ শব্দ হয়েছিল, কিন্তু বেহালায় আওয়াজ তুলতে পারিনি। পরে রাগ করে বেহালাটা ভেঙে ফেলি।
এরপর আমার গিটার শেখার শখ হয়েছিল। আমার বোন গিটার বাজাতে পারতেন। আমি কোনো টিচারের কাছে না গিয়ে তাঁর কাছেই গিটারে সা-রে-গা-মা-পা তোলা শিখি। এরপর একদিন সারা দিন গিটার বাজানোর চেষ্টা করি এবং সেদিনই রাত ১০টার পর ‘আমার জীবনে এত খুশি কই গেল’ গানটি গিটারে তুলতে পেয়েছিলাম।
একবার কোরবানি ঈদের আগের দিন ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট মহিলা বেহালাবাদকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমি তাঁকে আমার ছোটবেলায় বেহালা বাজানো শেখার সেই ঘটনা বলেছিলাম। তিনি শুনে পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাকে বেহালা বাজানো শিখিয়ে দিয়েছিলেন।
একটা কথা বলি, এনটিভির ম্যানেজমেন্ট খুব ভালো। এনটিভির নাটক খুব ভালো। এনটিভির অনুষ্ঠানপ্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ অনেক ইফোর্ট দেন। এনটিভির চেয়ারম্যান ও এমডি মোসাদ্দেক আলী ভাইয়ের সঙ্গে আমার হৃদ্যতা আছে। তাঁর সঙ্গে আমার মতের মিলও আছে। তিনি হানড্রেড পারসেন্ট মন থেকে আমাকে সমর্থন করেন। আমার পেছনে তিনি কখনো কোনো কথা বলেননি।

এনটিভি অনলাইন : প্রতিভা অন্বেষণে ‘এটিএন তারকাদের তারকা’, ‘নবীনবরণ ও শাপলা শালুক গোল্ড মেডেল’-এর মতো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। আবার বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল লিগ স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি সম্প্রচার করেছে এটিএন বাংলা। কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : আমরা ‘এটিএন তারকাদের তারকা’ নামে রিয়েলিটি শোর আয়োজন করি। ওই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১০ জন সংগীতশিল্পী ও ১০ জন নাট্য অভিনেতা আমরা খুঁজে বের করি। ৭২ হাজার প্রতিযোগী এতে অংশ নিয়েছিল এবং বাছাই করাটা অনেক অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। ইন্ডিয়ার রিয়েলিটি শোগুলো দেখে এই প্রতিযোগিতা করার আইডিয়াটা মাথায় এসেছিল। ‘নবীনবরণ ও শাপলা শালুক গোল্ড মেডেল’ প্রতিযোগিতার আয়োজনও আমরা করেছিলাম। তবে এটা এটিএন বাংলার নিজস্ব অনুষ্ঠান ছিল না। বাইরের প্রযোজকের কাছ থেকে এটা আমরা নিয়েছিলাম।
শুধু ফুটবল নয়, হা-ডু-ডু, বাস্কেটবল, ক্রিকেট খেলাও আমরা দেখাতাম। পিসিএল নামে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট দুবাই থেকে আমরা দেশে সরাসরি সম্প্রচার করেছিলাম। তখন প্রচুর দর্শক আমরা পেয়েছিলাম। একটা কথা আছে, ‘পথ চলে সবাই, পথ দেখায় কেউ কেউ’। আমরাই প্রথম ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মধ্য থেকে ইউরোপে যাই। ২০০৪ সালে মার্চে আমেরিকায় সরাসরি এটিএন বাংলা সম্প্রচার শুরু করি। এরপর আমেরিকায় ইন্ডিয়ার কিছু চ্যানেল সেই পথ অনুসরণ করে।
এনটিভি অনলাইন : এবার আপনার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানতে চাই। আপনি সংস্কৃতিমনা। গানও গান। গানের ভুবনে নিজেকে জড়ানোর গল্পটা আমাদের বলবেন কি?
ড. মাহফুজুর রহমান : আমাদের বাসায় আমার বোনকে গান শেখাতে দুজন গানের টিচার আসতেন। আমার বাবা আমাকেও গান শিখতে বলতেন। কিন্তু আমি মাঠে খেলাধুলা করতে খুব পছন্দ করতাম। তখন স্কুলে পড়ি, ঘরে বসে গান শেখার বিষয়ে গুরুত্ব দিইনি। দেশ-বিদেশে আমার বাবার ব্যবসা ছিল। বাবা কলকাতা থেকে মসলা ইমপোর্ট করতেন। ব্যবসার কাজে প্রতি মাসে কলকাতায় যেতেন। সেখান থেকে তিনি বিখ্যাত লেখকদের বই নিয়ে আসতেন। সেই সময় ছিল গ্রামোফোন রেকর্ডের যুগ। বাবা বিভিন্ন শিল্পীর গানের রেকর্ড কলকাতা থেকে আনতেন। ১৯৭১ সালে আমাদের বাড়ি লুট হয়ে যায়। আমার মায়ের গয়না, বাড়ির আসবাব সবকিছু লুট হয়। যুদ্ধের পর ইন্ডিয়া থেকে এক বছর পর দেশে আসার পর আমার সবচেয়ে আফসোস হয় গানের রেকর্ড আর বইগুলোর জন্য। অনেক খারাপ লেগেছিল। সেগুলো অরজিনাল বইয়ের প্রিন্ট ছিল। রাতে আমি পাঠ্যবই পড়তাম না, গল্পের বইগুলো পড়তাম। সেই বইয়ের সংগ্রহ আমি এখনো করতে পারিনি। তাহলে বুঝুন, কত বই ছিল! ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ বইটা আমি এখনো মুখস্থ বলে দিতে পারব।
এটিএন বাংলা শুরু করার পর আমরা অনেক শিল্পী তৈরি করেছি। ইভা রহমান ছোটবেলায় গান শিখত, এর পরে শেখেনি। সেই ইভা রহমানকে আমরা জনপ্রিয় শিল্পী হিসেবে তৈরি করেছি। আমার যদি সুর আর তালের জ্ঞান না থাকত, তাহলে আমি শিল্পী তৈরি করতে পারতাম না। আমি গানের মাস্টারিং পর্যন্ত করি। ইভা রহমানের এক থেকে আটটি গানের অ্যালবামের ফটোগ্রাফি ছিল আমার। ভিডিও এডিটিংও আমি করেছি। গানের প্রতি ছোটবেলা থেকেই আমার দুর্বলতা ছিল। পরে শিল্পী তৈরি করতে গিয়ে গানের ভুবনে জড়িয়ে পড়লাম। তবে আমি কারো কাছ থেকে গান শিখিনি।
এনটিভি অনলাইন : ছোটবেলায় আপনার কী হওয়ার ইচ্ছা ছিল—সংগীতশিল্পী, নাকি ব্যবসায়ী?
ড. মাহফুজুর রহমান : ক্লাস টেন পর্যন্ত আমি কখনো দ্বিতীয় হইনি। প্রথম হয়েছি। যারা ক্লাসে প্রথম থাকে, তারা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। আমিও ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। ডাক্তারি ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছিলাম। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় গিয়ে আউট হই। আর ডাক্তারি পড়া হয়নি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্সে পড়াশোনা করি। গান গাইব—এ রকম ভাবনা আমার কখনো ছিল না। আবার টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করব, সেটাও ভাবিনি। হঠাৎ করেই এগুলো হয়েছে। আর পারিবারিকভাবেই তো আমাদের ব্যবসা ছিল।
এনটিভি অনলাইন : ২০১৬ সালের ঈদুল আজহায় এটিএন বাংলায় ‘হৃদয় ছুঁয়ে যায়’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানে আপনি প্রথম গান করেন। এ বছর ঈদুল ফিতরে ‘প্রিয়ারে’ নামে একটি অনুষ্ঠানেও শ্রোতারা আপনার গান শুনেছেন। সর্বশেষ ঈদুল আজহায়ও ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ নামে একটি একক সংগীতানুষ্ঠানে আপনি গেয়েছেন। তিনটি অনুষ্ঠান থেকে দর্শক-শ্রোতাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পেয়েছেন?ড. মাহফুজুর রহমান : প্রথমেই বলি, ফেসবুকে বিভিন্ন মানুষ আমার গানের অনেক সমালোচনা করেছেন, অনেকে জঘন্য জঘন্য কথা বলেছেন। অনেক সাংবাদিকও এর মধ্যে আছেন। আমার সবচেয়ে দুঃখ লাগে যখন দেখি, এঁরা না বুঝে সমালোচনা করছেন। আমার গানের সমালোচনা যদি সাবিনা ইয়াসমিন বা রুনা লায়লা করতেন কিংবা অন্য কোনো ছেলেশিল্পী করতেন, আমার আপত্তি থাকত না। কিন্তু যারা গানের ‘গ’-ও বোঝে না, তারাই ফেসবুকে সমালোচনা করছে।ফেসবুকে এমনও অনেকে লিখেছে, ‘মাহফুজুর রহমানের মতো কত গায়ক আসছে, কত গেছে। দুই দিন পর ঝরে যাবে।’ আমিও এখন তাদের চ্যালেঞ্জ করে বলব, আমি ঝরে যাওয়ার জন্য আসিনি। আমি প্রতিবছর দু-তিনটা গান আপনাদের উপহার দেবো। গত ঈদে আমার গান টিআরপিতে ওপরে ছিল। এবারও দেখবেন, আমার গান টিআরপিতে ওপরেই থাকবে। আমি দেখাতে চাই, মানুষ চেষ্টা করলে, ইচ্ছে করলে পারে না এমন কোনো কাজ নেই। যাঁরা এখন সমালোচনা করছেন, তাঁরাই একদিন আমার কাজ স্বীকার করে নেবেন।ফেসবুকে অনেকে ভালো ভালো কমেন্টও করেছেন। কোটি কোটি দর্শক-শ্রোতা গানগুলো দেখেছেন। সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন, ‘গানগুলো আরো ভালো হতো যদি মিক্সিং আরো ভালো হতো।’ তার মানে, গান ভালো হয়েছে। বাদশা বুলবুলও গানের প্রশংসা করেছেন। আমি তো প্রফেশনাল শিল্পী নই, শখের বশে গান করছি, ভালো লাগা থেকে গান করছি। আমি তো কোনো শিল্পীর ভাত মারছি না। এ পর্যন্ত হয়তো আমার ২০টি গান প্রচার হয়েছে। তবে আমার গাওয়া ৫০টিরও বেশি গান রয়েছে। অনেক টেলিফিল্মেও আমার গান ব্যবহার করা হয়েছে।আবারও বলব, যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা না বুঝেই করছেন। তাঁরা যদি সুর আর তালে এক লাইন গানও গাইতে পারেন, তাহলে আমি স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁদের সমালোচনা গ্রহণ করব। তাঁরা বাদে কোনো শিল্পী যদি সমালোচনা করতেন, তাহলে আমি সমালোচনা গ্রহণ করতাম।
এনটিভি অনলাইন : আপনার গাওয়া ‘তোমাকে দেখে মন ভালো হয়ে যায়’, ‘এ জীবনের অর্থ কী’, ‘চার দেয়ালের মাঝখানে আজ’, ‘তোমার এ হৃদয় জুড়ে’, ‘বেঁচে থাকা বড় কঠিন’, ‘হাত বাড়াও আমি আছি’ গানগুলোতে প্রেম যেমন রয়েছে, তেমনি বিরহও রয়েছে। আপনার গানে রোমান্টিকতা ও বিরহের প্রাধান্য কেন?

ড. মাহফুজুর রহমান : আমি কাউকে হারাইনি, কারো প্রেমেও আমি ব্যর্থ হইনি। ছোটবেলা থেকেই আমি বিরহের গান বেশি শুনতাম। আমার সংগ্রহে বিরহের গান বেশি থাকত। বিরহের গানগুলো আমার গলার সঙ্গে যায়, তাই আমি গাই। আমি রক গান গাইতে গেলে পারব না। রক ও ফাস্ট গান আমাকে দিয়ে হবে না। আমার গলায় সেট হয় রোমান্টিক গানগুলো। বিরহের গানগুলো রোমান্টিক হয়। আমার লেখা একটা গল্প ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’। এই গল্প থেকে কিছুদিন পর একটি এক হাজার পর্বের সিরিয়ালের শুটিং শুরু হবে। এই সিরিয়ালের টাইটেল সং হবে ‘চার দেয়ালের মাঝখানে আজ’। গানটি সংগীত পরিচালক মান্নান মোহাম্মদের স্ত্রী লিখেছিলেন। গান লেখার সময় সিরিয়ালের কাহিনী তাঁকে জানানো হয়েছিল। গল্পের কাহিনী হচ্ছে, একটি হিন্দু মেয়ের সঙ্গে একজন মুসলিম ছেলের প্রেমের সম্পর্ক থাকে। মেয়েটির সঙ্গে ছেলেটির বিয়ে দিতে রাজি হয় না তার পরিবার। তখনই ছেলেটি ‘চার দেয়ালের মাঝখানে আজ’ গানটি গাইবে। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিজের বাড়িতে বসে গানটি সে গাইবে। ব্যর্থ প্রেমের গান আমার ভালো লাগে। গানগুলো অনেক মেলোডিয়াস হয়। বিরহের গান করা আমার শখ। রবীন্দ্রনাথের বিরহের গানগুলো আমি পছন্দ করি, ধুম-ধাড়াক্কা গান ভালো লাগে না।

এনটিভি অনলাইন : আপনার পরিবার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েটি অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করত। এখন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের ওপর পড়াশোনা করছে। বড় ছেলে ক্লাস নাইনে আর ছোট ছেলে ক্লাস সিক্সে পড়ে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার গানগুলো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন লোকেশনে চিত্রায়ণ করা হয়েছে। আপনি নিশ্চয়ই ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : ছোটবেলায় আমার বিদেশ ভ্রমণ করার অনেক ইচ্ছা ছিল। কলেজে পড়ার সময় এক গণককে (জ্যোতিষী) হাত দেখিয়েছিলাম। গণককে বলেছিলাম, ‘দেখেন, বিদেশে যাওয়ার আমার খুব শখ। আমি বিদেশ যাইতে পারব কি‌-না?’ গণক আমার হাত দেখে বলেছিলেন, ‘তুমি বিদেশ যাবা, এই নমুনা আমি খুঁজে পাচ্ছি না।’ তাঁর কথা শুনে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই মেজো ভাইয়ের সঙ্গে দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম। তিন মাস ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরেছি। ঘুরে আসার পর পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে সেই গণকের সঙ্গে আবার দেখা করি। তখনো তিনি আমার হাত দেখে বলেছিলেন, আমি বিদেশে যেতে পারব না। এরপর তাঁকে আমার পাসপোর্ট-ভিসা দেখিয়েছিলাম। আমার মনে হয়, হাতেগোনা কিছু দেশ ছাড়া আমি সব দেশে ঘুরেছি। ২০৪টি দেশের মধ্যে আমি ৫০ কিংবা ৬০টি দেশে যাইনি। এর মধ্যে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে যাওয়া হয়নি।
এনটিভি অনলাইন : অবসর সময়ে আপনি কী করেন?
ড. মাহফুজুর রহমান : এখন আসলে অবসর নেই। যতটুকু অবসর পাই, এটিএন বাংলার গানের স্টুডিওতে যাই। গান গাই কিংবা অন্য শিল্পীরা গান গাইলে তাঁদের গান শুনি এবং পরিচালনা করি।
এনটিভি অনলাইন : গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাই…
ড. মাহফুজুর রহমান : এবার দেখেছেন, আমার গান নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্নজন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। অনেকে বলেছেন, আমি ঝরে যাব। কিন্তু আমি প্রমাণ করে ছাড়ব, মাহফুজুর রহমান ঝরতে আসেনি, মাহফুজুর রহমান চিরকাল থাকতে এসেছে। এটাই আমার পরিকল্পনা।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত