আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:৪৫

করোনায় মৃত্যু যশোরের পরিচিত মুখ মাহাবুবের

স্টাফ রিপোর্টার : চলে গেলেন যশোরের সুপরিচিত ব্যক্তি মোহাম্মদ মাহাবুবুল হক (৬৯)।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে মারা যান তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
এই খবর গেল রাতে সুবর্ণভূমিকে জানান, নিউ ইয়র্কে বসবাসরত যশোর জেলা যুবমৈত্রীর সাবেক নেতা শফিকুল আলম কলি।
মাহাবুবুল আলম যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। তার স্ত্রী কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। রয়েছেন দুই ছেলেসন্তান; একজন নিউ ইয়র্কে, অন্যজন ঢাকায়।
মাহাবুবুল হকরা পাঁচ ভাই ও দুই বোন। এর মধ্যে বেঁচে আছেন দুই ভাই ও এক বোন। তার ছোট বোন নূরজাহান ইসলাম নীরা আওয়ামী লীগ নেত্রী ও যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
আজ দুপুরে মাহাবুবুল হকের সন্তান মো. ইয়াসির হাসান রেইন সুবর্ণভূমিকে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তার বাবা করোনাভাইরাসে শনাক্ত বলে এপ্রিলের ১১ বা ১২ তারিখে শনাক্ত হন। এর পর কয়েকদিন তিনি বাসায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৬ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পয়লা রমজান তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। আর মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক সময় বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি মারা যান।
মাহাবুবুল হক কর্মজীবনে ছিলেন সমবায় ব্যাংক যশোরের ব্যবস্থাপক। চাকরি শেষে বছর খানেকের মাথায় তিনি বড় ছেলে আমেরিকায় বসবাসরত মাজহারুল ইসলাম অনিকের কাছে চলে যান। প্রায় পাঁচ বছর তিনি নিউ ইয়র্কে অবসর জীবনযাপন করেন। এই সময়কালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। দেশের সমসাময়িক অবস্থা নিয়ে তিনি ফেসবুকে নিয়মিত পোস্ট দিতেন। যোগাযোগ ছিল যশোরসহ এই অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তার বন্ধু, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে।
শফিকুল আলম কলি মরহুমের বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানান, মাহাবুবুল হক ১৯৬৯ সালে তৎকালীন যশোর কলেজ (বর্তমানে এমএম কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। ১৯৭১ সালে তিন মাস ভারতে কাটিয়ে তিনি দেশে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সেই সময় যশোরের বিভিন্ন গ্রামে গেরিলা যুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন তিনি। দেশ স্বাধীনের পর মাহাবুব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন। যশোরে সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর সেখানে ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করেন।
যশোরে থাকাকালে তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যশোর ইনসটিটিউট ও লায়ন্স ক্লাবের সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি।
ছেলে রেইন জানান, নিউ ইয়র্কে ইসলামিক সোসাইটির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আগামীকাল বা পরশু হাসপাতাল থেকে মরদেহ গ্রহণ করবে। এরপর জানাজা শেষে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক নিউ ইয়র্কেই দাফন করা হবে মাহাবুবুল হককে।
এক প্রশ্নের জবাবে রেইন বলেন, তার বাবা ও তিন চাচা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তবে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সার্টিফিকেট নেননি।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত