আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:৫৮

কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম চলছে

দেশের কযেকটি জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি ঘটেছে। উজানে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং গংগা-পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার নদ নদীর ‘পানি-সমতল’ বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যাঞ্চলীয় মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ি, শরিয়তপুর ও ঢাকা এবং উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বগুড়া ও নঁওগা- এই ১৬ টি জেলার বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘন্টায় আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া,ঢাকা জেলাসহ আশেপাশের নদীগুলোর ‘পানি সমতল’ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে মেঘনা ও সুরমা অববাহিকার নদ নদীর পানি-বৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকায় এ অঞ্চলের বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘন্টায় আরো উন্নতি হতে পারে। তবে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নি¤œাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকার সম্বাভনা রয়েছে।
এদিকে,বন্যা কবলিত এলাকার দুর্গত মানুষের মাঝে সরকারে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মাঠ পর্যায়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় এ পর্যন্ত নগদ ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১২ হাজার ১০ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ২১ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্ত্র সংবাদ বিজ্ঞপ্তি,বাসস’র রাজশাহী অফিস ও জেলা সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ি,সারাদেশে পর্যবেক্ষণাধীন ১০১টি ‘পানি-সমতল’ স্টেশনের মধ্যে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৩টি স্টেশনের পানি বেড়েছে। আর হ্রাস পেয়েছে ৫৮টির। একই সময়ে ১৭টি নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বাসস’র রাজশাহী অফিস জানায়,গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষন ও উজানে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় পদ্মা অববাহিকার নদ নদীর ‘পানি সমতল’ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহী জেলাসহ এ বিভাগের কযেকেটি জেলা নি¤œাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে।
এ বিভাগের সিরাজগঞ্জ, বগুড়া,নাটোর,নওগাঁ,রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার নদ নদীর পর্যবেক্ষাণাধীন ১৩টি পয়েন্টের মধ্যে ১১টি পয়েন্টেই পানি বেড়েছে। আর ২টি পয়েন্টে পানি কমেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে বাসস’র রাজশাহী অফিস জানায়, রাজশাহী,হার্ডিঞ্জব্রীজ,তালবাড়িয়া ও গোয়ালনন্দ পভৃতি পয়েন্টে এখন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির প্রবনতা লক্ষনীয়।
বাসস’র সিলেট অফিস জানায়, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এ দুই জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর ‘পানি পর্যবেক্ষনাধীন’ সব পয়েন্টেই পানি হ্রাস পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বাসসকে জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত কমবে এবং এ দু’জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরো স্বভাবিক হবে।
পাউবো’র সিলেট ও সুনামগঞ্জ অফিস জানিয়েছে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি উচ্চতা ছিলো ১২ দশমিক ৬২ মিটার, যা, বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় এ পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। একই সময়ে সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানির প্রবাহ ছিল ১০ দমমিক ২৫ মিটার। এখানে পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় এ পয়েন্টে পানি কমেছে ২২ সেন্টিমিটার।
শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর পানির উচ্চতা ছিলো সিলেটের জকিগঞ্জ আমলশিদ পয়েন্টে ১৫ দশমিক ৩১ মিটার। শুক্রবারের চেয়ে এই পয়েন্টে আজ পানি ৮ সেন্টিামটার বাড়লেও বিপদ সীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত