আজ - মঙ্গলবার, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সকাল ১১:২০

ফিটলিস্টে নাম ছিল না-
প্রতিমন্ত্রীর চাপে ডিসি করা হয় কবীরকে

জামালপুরের সদ্য প্রত্যাহার হওয়া জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর ডিসি ফিটলিস্টের তালিকাভুক্ত না হয়েও ডিসি হয়েছিলেন। তৎকালীন এক প্রতিমন্ত্রীর চাপের মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে ডিসি পদে নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়। শুধু তাই নয়, ডিসি পদে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি যেখানে কর্মরত ছিলেন সেই যশোর স্থানীয় সরকার বিভাগে থাকাবস্থায় তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের অভিযোগ উঠেছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, আহমেদ কবীর ছিলেন যশোরে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডি-এলজি)। ২০১৬ সালের ৫ মে থেকে ১৭ সালের ৭ মে পর্যন্ত তিনি যশোরে ছিলেন। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায়ই নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন। ওই সময় থেকেই তৎকালীন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের সঙ্গে তার যোগাযোগ তৈরি হয়। তিনি প্রতিমন্ত্রীর আস্থা অর্জন করেন এবং ঘনিষ্ঠ হন। এরই সূত্র ধরে ২০১৭ সালের ৮ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি একক আদেশে আহমেদ কবীরকে জামালপুরের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, ওই সময়ে আহমেদ কবীরকে ডিসি করার প্রস্তাব উত্থাপন হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা তার বিরোধিতা করেছিলেন। তারা যুক্তিও দেখিয়েছিলেন। প্রতিমন্ত্রীকে বুঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। বলেছিলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ডিসির যে ফিটলিস্ট করেছে তাতে তার নাম নেই। এমনকি কোনো ক্রাইটেরিয়াতেই আহমেদ কবীরকে ডিসি ফিটলিস্টে নেওয়ার সুযোগ নেই। ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার। কিন্তু তৎকালীন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক তার অবস্থানে অনড় থাকার কারণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বাধ্য হয়েই ডিসি ফিটলিস্টের বাইরে থেকেই তাকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ আদেশ দিতে বাধ্য হয়। যদিও ফিটলিস্টের বাইরে ডিসি নিয়োগের নজির রয়েছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, আগে ফিটলিস্টের বাইরে যে দু-একজনকে ডিসি করা হয়েছিল তাদেরকে যোগ্যতার ভিত্তিতে এবং মাঠে কাজ করার অভিজ্ঞতার আলোকে দেওয়া হয়েছিল। কোনো চাপে বা তদবিরে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু আহমেদ কবীরের ক্ষেত্রে সেটি পরিপূর্ণ ছিল না এবং অনেকের আপত্তি ছিল। সূত্র জানায়, আহমেদ কবির যশোরে স্থানীয় সরকার বিভাগের ডিডি থাকাকালীন সেখানে নানা অনিয়মে জড়িয়ে ছিলেন। এমনকি নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগও ছিল। যা স্থানীয়রা ভালোভাবে নেননি। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ওই সময় কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করার সাহস করেননি।

আরো সংবাদ