নাঈম সাব্বির : শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে চাঁচড়া ইউপি সদস্য শান্তি কে শর্টগান দিয়ে গুলি করার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে জনরোষের প্রবল চাপে সন্ত্রাসীরা হটে গেলে প্রাণে রক্ষাপান তিনি।
চাঁচড়া টু সাড়াপোল কালারহাট রোডে চালিত ইজিবাইক নসিমন ভটভটি থেকে তাদের উন্নয়নের কথা বলে রসিদের মাধ্যমে ২০টাকা হারে চাঁদা তোলেন জেলা শ্রমিকলীগের এক নেতা। যা নিয়ন্ত্রন করেন চাঁচড়া ইউপি বিএনপির ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগাঠনিক সম্পাদক সেলিম রেজা পান্নু ও তার গং।
আজ সকালে চাঁদা আদায়ের সময় তাদের বাঁধা দেন চাঁচড়া ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদ শান্তি। এ সময় শ্রমিকদের সাথে নিয়ে তিনি পান্নু গংয়ের সাথে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়লে শান্তির বুকে শর্টগান ঠেকিয়ে গুলি করার জন্য হুংকার দিতে থাকে পান্নু গংয়ের চিপ অব কমান্ড ও পান্নুর খালাতো ভাই সাগর। এক পর্যায়ে শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়ে পিছু হটেন সাগর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
সূত্র জানায় সাগরের কাছে থাকা শর্টগানটি বৈধ লাইসেন্স করা, যার মালিক চাঁচড়া ইউপি বিএনপির ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে জেলা শ্রমিক লীগের শ্রম-উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক সেলিম রেজা পান্নু।
ব্যক্তি নিরাপত্তার জন্য বৈধ অস্ত্র পাবলিক প্লেসে ভীতি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার ও প্রদর্শন বে-আইনি। সেখানে একজনের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে অপর কেউ হত্যা চেষ্টায় ব্যবহার করলে তা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সামিল এবং লাইসেন্সধারী ব্যক্তি ও ব্যবহারকারী ব্যক্তি দুজনেই আইনানুগ ভাবে অপরাধী।
এর পর চাঁচড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ সহ স্থানীয় গণ্যমাণ্যদের সাথে নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে স্থানীয়রা। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সেলিম রেজাপান্নুর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে অনতিবিলম্বে পান্নু ও তার খালাত ভাই সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
এদিকে যোগাযোগ করা হলে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ ও সদস্য সেলিম আহমেদ শান্তি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সেলিম রেজা পান্নু আ’লীগে অনুঃপ্রবেশ করেছেন এবং টাকার বিনিময়ে শ্রমিকলীগের একটি পদ কিনে এখন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।
এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করার জন্য আক্রান্ত ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদ শান্তি থানায় গেলে মামলা রেকর্ড না করে তাঁকে চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে শালিশি মিমাংসার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা চেষ্টা ঘটনা শালিশি মিমাংসায় বে-আইনি ও মিমাংসা যোগ্য নই। পান্নুর ও সাগরের বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা কেন নিলেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে ইউপি চেয়ারম্যান আজীজ বলেন উপরের নেতাদের কথামত তারা চলছেন।
মহা সড়কে ব্রীজ ও সেতু’র রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সেতু বা ব্রীজ অতিক্রমকারী যানবাহনের চালকদের নিকট থেকে রশিদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অংকের একটি টাকা (টোল) আদায় করা হয়, যা সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়। কোন ব্যক্তি বা গোষ্টি মহাসড়কের কোন স্থান থেকে এমন কর্মকান্ড পরিচালনা করলে তা বে-আইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সেলিম রেজা পান্নু টোল বা চাঁদা আদায় করার কে? এমন প্রশ্নে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা, শনিবারও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা। এর মধ্যে প্রশাসন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করলে রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে স্মারকলিপি প্রদান করবেন তারা।