যোগদানের সাড়ে ৬ মাস পর প্রত্যাহার হলেন যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ডিআইজি (প্রশাসন) কাজী ফজলুল করিমের স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
চিঠিতে যশোরের পুলিশ সুপারকে পরবর্তী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার নিকট দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে ঢাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট করার জন্য। তবে কি কারণে হঠাৎ এসপিকে প্রত্যাহার করা হল সেটি পরিষ্কার করা হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, বদলি সংক্রান্ত একটি চিঠি যশোরে পাঠানো হয়েছে। তবে বদলির কারণ সম্পর্কে তারা অবগত নন।
তবে তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে নানা বিষয় আলোচনায় উঠে আসছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত গত রোববার মণিরামপুর থানায় গ্রেপ্তার আসামিদের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট হামলা, ভাঙচুর, মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা। এছাড়াও জেলার আইনশৃঙ্খালার পরিস্থিতির অবনতি ও অপ্রতিরোধ্য স্বর্ণ চোরাচালানকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন যশোরের মানুষ।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট যশোরের পুলিশ সুপার পদে যোগদান করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জিয়াউদ্দীন আহমেদ। তার মেয়াদে যশোর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চাঁদাবাজি, খুন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনায় জনজীবনে আতঙ্ক নেমে এসেছে। একই সাথে পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসতে থাকে। সর্বশেষ রোববার মনিরামপুরে মাদকসহ ৪ আসামি ধরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মনিরামপুর থানার ওসিসহ কয়েকজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) অপসারণ দাবি করে মনিরামপুর থানার ফটকে বিক্ষোভ করে উপজেলা বিএনপির ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। থানা ঘেরাওকালে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আসামিদের ধরে আনছেন ঠিকই। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আদালতে সোপর্দ না করে থানা থেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন। দাগী অপরাধী হওয়ার পরও তাদেরকে ছেড়ে দেয়া ফ্যাসিস্টদের সহযোগিতার নামান্তর। এসবের নেপথ্যে পুলিশের অর্থ বাণিজ্য জড়িত বলে তারা দাবি করেন।