খানজাহান আলী 24/7 নিউজ: যশোর সদর উপজেলাধীন রূপদিয়া বাজারে ভাই-ভাই মাংস ভান্ডারে মরা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগের বিপরীতে শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। মূলতঃ মরা নয় অসুস্থ গরুর মাংসই বিক্রি করছিলেন ভাই-ভাই মাংস ভান্ডারের ব্যবসায়ীরা। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন নরেন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুপ্রভাত মন্ডল।
এ নিয়ে স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। দিনব্যাপী নানা অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। গত ০৪ দিন আগে দড়িতে পেঁচিয়ে পা ভেঙে যাওয়া একটি কালো রংয়ের গরু চিকিৎসাধীন ছিলো। গরুটির প্রকৃত মালিক বলরামপুরের জাহাঙ্গীর আলম। গত কয়েকদিনের চিকিৎসায় অনেকাংশে সুস্থ হয়ে গেলে ঐ গরুর মালিক ভাই-ভাই মাংস ভান্ডারের কসাই আকের আলীকে গরুটি বিক্রি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আকের আলী সুস্থ্যপ্রায় ঐ গরুটি জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে নগদ ১৯,০০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। আজ ভোরো রূপদিয়া কশাইখানায় এনে নিজেরাই গরুটি জবাই করেছেন বলে দাবী করেন আকের আলী।
চিকিৎসা নেওয়া ওই গরুটির মাংসের রঙ ফ্যাকাশে হওয়া যাওয়ায় প্রচন্ড তাপ এবং লকডাউনে ক্রেতা কম থাকায় ঐ গরুটির মোট ৪৫ কেজি মাংশ কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন তারা। গরুটির প্রকৃত মালিক জাহাঙ্গীর আল এবং কশাই আকের আলীর বাসস্থান একই গ্রামে ও পাশাপাশি হওয়ায় অসুস্থ গরু ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরই সূত্র ধরে আজ সকালে রূপদিয়া বাজারে গোশত পট্টিতে অবস্থিত মেসার্স ভাই-ভাই মাংস ভান্ডারে মরা গরুর মাংস বিক্রি করার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া সহ মানুষের মুখেমুখে। এক পর্যায়ে বেলা ১০ টার দিকে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাজির হয় স্থানীয় প্রশাসন। এসময় প্রশাসনের সাথে পুরো বিষয়টি খুলে বলেন ঐ মাংস ব্যবসায়ীরা। পুরো বিষয় শুনে প্রশাসন এসব মাংস বিক্রি না করার মরামর্শ দিলে আকের আলী ও আইয়ুব আলী নিজে থেকেই মাংসগুলো নদীতে ফেলে দেয়। ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামীকাল (১ মে) ন্যায্য সমাধানের এবং মাংস পট্টিতে গঠনমূলক নীতিমালা প্রতিষ্ঠার সময় নির্ধারণ করে ঐ ব্যবসায়ীকে বাকি মাংস বিক্রির অনুমতি প্রদান করেন।
তবে এ নিয়ে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ক্রেতা সাধারণ ও একাধিক ব্যবসায়ীর অভিযোগ কোনো প্রকার নিয়মের তোয়াক্কা করে না এধরনের ঘৃণীত কর্মকান্ড করার দুঃসাহস করেছে তারা।
ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি কতটা যৌক্তিক? ঐ ব্যবসায়ীদেরকে জরিমানা বা শাস্তির ব্যবস্থা কেন করা হলোনা? এমন প্রশ্নেরও উত্তর মিলেছে। তারা বলেছেন, মৃত গরু বিক্রি হচ্ছে এমনটি শুনেই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে ঐ ব্যবসায়ীরা সত্য স্বীকার করে জানান গরুটি মৃত নয় অসুস্থ ছিলো। এসময় আমরা তাকে মাংশগুলো বিক্রি করতে বাধা দিয়েছি। তখনই ব্যবসায়ীরা এসব মাংশ বিক্রি করবেন না জানিয়ে নদিতে ফেলে দিয়েছে। এতে ঐ ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
আর পরিষদ কর্তৃক পশু জবাইয়ের জন্য কোনো তদারকি না করায় এধরনের কর্মকান্ড প্রায়ই ঘটে। অতিসত্ত্বর এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের আশু দৃষ্টি কামনা করেন সকল শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ।