ঝালকাঠির সেই ‘হার না মানা’ নারী নাপিত শেফালী রানী শীলের পাশে দাঁড়ালেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান এমপি। কাঠালিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা দোগনা বাজারের একমাত্র নাপিত শেফালী রানী শীল। প্রায় দুই যুগ ধরে এলাকার লোকজনের চুল কাটছেন তিনি।
সেই শেফালীকে বাড়ি করে দেবার ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন খাস জমি বন্দোবস্ত দেবার জন্য। সেখানেই মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ করে দেবে দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি।
আগামী সোমবার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে শেফালীর পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যাবার কর্মসূচির কথাও জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান এমপি।
তিনি বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে একজন নারীর জন্য এমন একটি পেশা বেছে নেয়া বেশ কঠিন ও চ্যালেঞ্জের। তা সত্ত্বেও তিনি প্রথাগত পেশার ধারণা ভেঙে জীবন ও জীবিকার তাগিয়ে নাপিতের কাজ বেছে নিয়েছেন। কেবল তাই নই, এর বাইরে দোকানে দোকানে পানি সরবরাহ করে সেই অর্থ দিয়ে সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করছেন।
এটাই আমার কাছে অসাধারণ ও প্রেরণাদায়ক মনে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে ‘হার না মানা’ নারী নাপিত শেফালী রানী শীলের ওপর প্রতিবেদন দেখে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি তার পাশে দাঁড়াতে। প্রাথমিকভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেফালীকে ১০ হাজার টাকা নগদ বরাদ্দ দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী সেইসব দুঃস্থ মানুষদের মন্ত্রণায়ের পক্ষ থেকে বাড়ি নির্মাণ করে দেই, যাদের অন্তত দুই শতাংশের মতো জায়গা আছে। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, শেফালী রানী শীলেও সেটাও নেই। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যদি সরকারিভাবে জায়গা সুবিধাজনক স্থানে পাওয়া না যায় তবে আমি নিজেই ব্যক্তিগত তরফে সেই জায়গা কিনে দেব। আমি নিজেই তার বাড়িতে যাব। কারণ শেফালী রানী শীলরা নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক। তাকে নিজে গিয়ে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাবো তার সাহসী জীবন সংগ্রামের জন্যে।
এর আগে শনিবার সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান তার ফেসবুক পেজ থেকে ‘হার না মানা’ নারী নাপিত শেফালী রানী শীলকে সহায়তা করার বিষয়ে পর পর দুটো পোস্ট শেয়ার করেন।
এ প্রসঙ্গে খানজাহান আলী 24/7 নিউজ থেকে যোগাযোগ করা হয় শেফালী রানী শীলের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিকেল ৫টার পর প্রশাসনের অনেক লোক এসে আমার বাড়ি-ঘর দেখে গেছেন। আগামীকাল আবার আসবেন বলে জানিয়েছেন। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন বলেও জানালেন তিনি।
একই বিষয়ে কথা বলতে খানজাহান আলী 24/7 নিউজ থেকে কাঠালিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীনের অফিসিয়াল নম্বরে কয়েকবার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, গেল ২৭ জুন বিবিসি বাংলা নিউজে গ্রামের একমাত্র নাপিত ‘হার না মানা’ নারী শেফালী রানী শীল শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই সংবাদের প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান এমপি তার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।