আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৮:৪৬

আত্নশুদ্ধিতে বোধোদয় হোক জাতির : রিয়াজ।

বহুদিন যাবৎ মন খারাপ হয়ে আছে । তাই লিখতে বসলেও কিছু লিখতে পারিনা । একটা অজানা ভয়-ভীতি চাপা আতঙ্ক বিরাজ করে মনের ভেতর । সব সময় একটা চিন্তায় মাথার ভেতর ভন ভন করে ঘোরে যে কেমন কি করে বাংলাদেশের চিত্রপট পাল্টে যাচ্ছে । নষ্ট হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থা জীবন -যাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে । অনিরাপত্তায় ভুগছি আমরা । কারো জীবন এখন নিরাপদ না । এর পেছনে কারা রয়েছে ? খুজেও পাচ্ছিনা । কিন্তু দেখা যাচ্ছে মহল্লায় মহল্লায় ধর্ষক , ঘরে ঘরে ধর্ষক । এরপরে এলো গুজব রটনাকারীরা । ফেসবুকে গুজব রটিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে । এদেশে শিক্ষার হার 66 % প্রায় তারপরেও গুজবে বিশ্বাস করে জাতি । ভাবতে কষ্টে বুকটা চিরে যায় । কাদতে ইচ্ছা করে খুব । কত শান্তিতে ছিলাম। চারিদিকে উন্নতির ছোয়া । যেখানে ছোটবেলাতে দেখেছি বাবা সরকারী চাকরী করে সাড়ে 4 হাজার টাকা বেতন পেত এখন একজন ইজিবাইক ওয়ালাও মাসে 20 হাজার টাকা আয় করে খাচ্ছে । দেশ আজ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ। আগে যেখানে আমরা প্রতি ঈদ আসলে জামা কিনতাম অথবা রোযার ঈদের জামা কোরবাণী ঈদে পরতাম এখন প্রতি মাসে কি সপ্তাহেই জামা কিনে পরছি । কোন অভাব নেই কারো । বেশ ভালোই কাটছিলো সবার দিনকাল । সরকার বৃদ্ধদের বয়স্ক ভাতা দেন । শিশুদের কয়েক দফা 9/10 হাজার করে টাকা দিচ্ছে । 2010 সালের আগেও মাধ্যমিকের বই কেনার অভাবে অনেকের লেখাপড়া বাদ যেত । আর আজ সব ক্লাসের বই ফ্রি । উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে সব মিলিয়ে স্বনির্ভর বাংলাদেশে ভালোই ছিলাম । কিন্তু প্রযুক্তির অপব্যবহারে ভয়াল গ্রাসে মাত্র কয়েকদিনে জীবনটা বিষাক্ত হয়ে গেছে । আমরা জাতীয় জীবনেও কেমন হিংস্র হয়ে গেছি । দয়া মায়া বলে আর কিছু নাই এই রক্ত মাংসের শরীরে । সামান্য কারণে এখন খুন করছি আমরা । আমাদের বোনেরা -মায়েরা ধর্ষিত হচ্ছে । শিশু বাচ্চারো রেহাই নাই । এই সবকিছুর জন্য দায়ী আমরা । কিন্তু আমরা বলছি রাষ্ট্রের দোষ , আইনের দোষ ।
প্রায় 18 কোটি মানুষের এই দেশে মাত্র 3 লাখ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি করবে ?? আমরা যেমন বলি ঐ রকম হলে প্রতি ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে হবে । যা কখনোই সম্ভবনা । নিজেকে বদলাতে পারলেই সমাজে শান্তি সম্ভব । বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ কখনোই অন্যায় মেনে নিবে না । জঙ্গিবাদ এদেশে স্থান পায়নি তেমনি কোন ধরনের অশুভ শক্তি বাংলাদেশকে বিফল রাষ্ট্র বানাতে পারবেনা । এখনি জেগে ওঠার সময় । আমাদেরকে জাগতে হবে । একটা সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক বিপ্লব দরকার যার নেতৃত্ব থাকবে সরকারের হাতে । বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলো সেই বাংলাদেশ বিনির্মান করা তখনই সম্ভব যখন একটা সামাজিক বিপ্লব সংঘটিত হবে ।

আজ বাংলাদেশের মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে , শিরায় – উপশিরায় দুর্নীতি ,লোভ -লালসা , ধর্ষণ,কুংস্কার বয়ে চলছে । তাদের রক্ত আজ দূষিত ।। রাষ্ট্রের যত উন্নয়নই হোক না কেন সেই উন্নয়ন ফলপ্রসূ কখনোই হবেনা যতক্ষণ না জাতি কুংস্কারা মুক্ত হবে , জ্ঞানের শিখরে পৌছবে । জাতির আত্নিক মুক্তি দরকার । তবেই সকল অর্জন সম্ভব। যারা জাতির জন্য শত্রু তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দমন করতে হবে কখনোই ব্যক্তি নিজ হাতে আইন তুলে নিবেনা । বিচার নিশ্চিত সংস্কৃতিতে কখনোই ব্যক্তি নিজের হাতে আইন তুলে অপরাধী হবেনা । জাতির সন্তানরা ছোট থাকতে তাদেরকে ধর্মীয় শিক্ষাতে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে । দেশপ্রেম ও নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে । দেশ ও দশের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে ।

এমন প্রচেষ্টা যদি জাতীয় থেকে পারিবারিক পর্যায়ে করা যায় তাহলে ফললাভ হবেই । আমরা যাযাবর না আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের গুজবে আকৃষ্ট জাতি । আমাদের শুধরাতে হবে ।

যৌবনের গান গেয়ে অন্ধকারে আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে আমি এই সমাজের একজন পথপ্রদর্শক রুপে মহাপুরুষের আবির্ভাব কামনা করছি ।

আত্নশুদ্ধিতে বোধোদয় হোক জাতির।

লেখক মোঃ রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ

কো-অর্ডিনেটর , মাগুরা জেলা।

মানবাধিকার ও পরিবেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র( ইয়াস)।

বি: দ্র: এই কলামে লেখার দ্বায়ভার সম্পূর্ণ লেখকের।

আরো সংবাদ