আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ৯:৫৫

আরব সাগর থেকে ধেয়ে আসছে ঘুর্নিঝড় আসনা।

আরব সাগর থেকে ধেয়ে আসছে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’। এটি আছড়ে পড়বে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে। আরব সাগরের উত্তরাংশে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ইতোমধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে অগ্রসরের সঙ্গে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’য় পরিণত হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, গত ৪৮ বছরের মধ্যে প্রথমবার আগস্ট মাসে কোনও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে আরব সাগরে। শেষবার আগস্ট মাসে আরব সাগরে এমন দুর্লভ ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। হাওয়া অফিসের দাবি, এর সব চেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে গুজরাট ও উত্তর মহারাষ্ট্রের উপকূলে। ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চিন্তার বিষয় হল বৃষ্টি। এই বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত গুজরাটের কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্রে প্রায় ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাধারণত ওই এলাকায় সর্বোচ্চ ৪৩০ এমএম বৃষ্টি হয়। ফলে চলতি বছর বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। এর উপর ‘আসনা’র জেরে হাল আরও খারাপ হতে পারে গুজরাটবাসীর। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে প্রশাসন। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঝড়টি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুপুরের দিকে এটি কেন্দ্রীভূত হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়বে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে ভারতের গুজরাটের ভুজ অঞ্চল থেকে ১৯০ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে এবং পাকিস্তানের করাচি থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারতের গুজরাট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত বুধবার রাত থেকে চলমান অতি ভারী বৃষ্টিপাতে গুজরাটের জামনগর, সুরাট, পোরবন্দর, মোরবি, স্বর্কা এবং কুচ জেলার অনেক এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

আইএমডির জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ রামাশ্রয় যাদব এনডিটিভিকে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় কচ্ছ জেলায় ৮৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি। এছাড়া সুরাট এবং কুচ জেলাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণ হয়েছে। ’
ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ নামটি দিয়েছে পাকিস্তান। এর অর্থ সর্বোচ্চ, উজ্জ্বলতম এবং প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশে আসনার প্রভাব কেমন পড়তে পারে প্রশ্নে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, ভারতের গুজরাটে একটি ঘূর্ণিঝড় (আসনা) তৈরি হয়েছে। এটি উত্তরপশ্চিম দিকে গিয়ে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে কিছুটা মিলিত হতে পারে। এছাড়া পশ্চিম-মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ অবস্থান করছে। এটিও ধীরে ধীরে স্থলভাগে উঠে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হতে পারে। দুইয়ের প্রভাবে ৩ বা ৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শনিবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং বাকি বিভাগগুলোর দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণও হতে পারে। সারা দেশে আজ দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টি কমবেশি একই রকম থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আরো সংবাদ