আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:২৯

ইমন হত্যার নেপথ্যে এমপি নাবিল,মোহিত নাথ :: দাবী ছাত্রলীগের।

নাঈম সাব্বির : যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যার প্রতিবাদে আজ দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। এ সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন যশোর সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদের নির্দেশে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিতকুমার নাথ ইমন হত্যা মিশন পরিচালনা করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসান। এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি রওশন আলী শাহী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘যশোর সদর আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কাজী নাবিল আহমেদ নিজ দলের প্রতিপক্ষদের দমনে হত্যামিশনে নেমে পড়েন। তার নির্দেশেই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিতকুমার নাথ এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছেন।’

মোহিত কুমার নাথ।

 

ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘দলের সভানেত্রী যখন আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা ঠাঁই না পায়, সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছেন, তখন এমপি নাবিল আহমেদ নিজের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের জন্য দলে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের স্থান করে দিচ্ছেন। শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী মেহবুব রহমান ম্যানসেলকে দলে ভিড়িয়ে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছেন তিনি। সর্বশেষ কাজী নাবিল আহমেদ ও মোহিত নাথের ইন্ধনে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমনকে হত্যা করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মোহিত নাথের মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ইমনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যাকাণ্ডের পুরো পরিকল্পনা হয় মোহিত নাথের বাসায় বসে। এখন এমপি কাজী নাবিল আহমেদ হত্যাকা-কে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ করছেন।

এমপি নাবিল।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘২০১৪ সালের পর থেকে এমপি নাবিল আহমেদের নির্দেশনায় মোহিত নাথ দলের প্রতিপক্ষ নেতাকর্মীদের হত্যা করে আসছেন। এর আগে যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর রশিদ, যশোর পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান, এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ঝাউদিয়া আওয়ামী লীগ কর্মী শহিদুল ও এজাজ আহমেদসহ আরো বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে মোহিত নাথ ও তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ম্যানসেল, রাকিব, ডিম রিপন, পেচো, শিশির, শুভ, নয়ন, পিচ্চি ইয়াসিন, মোমিন, রবিউলসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যায় জড়িতদের আটক ও শাস্তি দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ৪ নভেম্বর জেলা ছাত্রলীগ, ৫ নভেম্বর সব উপজেলা শাখা ও ৬ নভেম্বর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করা হবে।

গত সোমবার রাত ১১টার দিকে যশোর শহরের বেজপাড়া গুরগুল্লার মোড় এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে ছাত্রলীগ যশোর জেলা শাখার সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমন খুন হন। এ ঘটনার পর যশোর আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপ এমপি কাজী নাবিল আহমেদ পক্ষ ও দলের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার পক্ষ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

আরো সংবাদ