আজ - বৃহস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১২:৪৭

কুইন্স হসপিটালে অবস্থান করে ফায়দা লুটের চেস্টা দুই বোনের।

বিভিন্ন জনকে ফাঁদে ফেলে অর্থ ও মালামাল হাতিয়ে নেয়া যেনো দুই বোন ফাতেমাতুস জোহরা ওরফে ইরানী ওরফে মিম ও রাবেয়া বশরী ওরফে মায়শা ওরফে সাথীর নেশা। তাদের সুস্থ মা মাহমুদা খাতুনকে (৫২) অসুস্থ সাজিয়েও ফায়দা লুটতে তারা পিছু পা হননা। দুই বোনের রোষানলে পড়ে আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লোন অফিস পাড়ার মতিয়ার রহমান কুরবান ও তার ছেলে শেখ জিয়াউর রহমার জিকো। বুধবার (১০ জুলাই) তারা সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন। তাদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। বিগত দিনে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তাদের ধারণা, এখন এই চক্রের টার্গেটে রয়েছে কুইন্স হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে জিম্মি করা।
জিয়াউর রহমান জিকো জানিয়েছেন, যশোর শহরের বকচর মসজিদ পাড়ার মতিউর রহমানের মেয়ে ফাতেমাতুস জোহরা ওরফে ইরানী ওরফে মিমকে (২৮) ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট তিনি বিয়ে করেন। পরিবার বিয়ে মেনে না নেয়ায় তারা লোন অফিস পাড়ার খাজাসিটিতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। তার গর্ভে একটি কন্যা সন্তানও জন্মগ্রহণ করে। এরপর মায়ের অসুস্থতার দোহাই দিয়ে দুই বছর আগে তার স্ত্রী মিম মায়ের কাছে বকচরে চলে যান। তবুও প্রতিমাসে ৩৫ হাজার টাকা ভরণ পোষণ দেয়া হয়।
জিকো আরও জানান, ২০২৪ সালের ১৫ মে কুইন্স হসপিটালের নিচ তলায় দাঁড়িয়ে তার কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা নেয় তার স্ত্রী মিম। মায়ের চিকিৎসার নাম করে এই টাকা হাতিয়ে নেন। পরে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে। দিতে না পারায় ১ জুলাই মিম ও তার বড় বোন রাবেয়া বশরী খাজা সিটিতে গিয়ে এসি, ফ্রিজ ,ওভেন, সোফাসেটসহ বিভিন্ন মালামাল ও ওয়ারড্রপে থাকা ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
জিকো জানান, তারা দুই বোন মায়ের অসুস্থতার অজুহাতে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে। বিভিন্ন জনকে ফাঁদে ফেলে ও জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া তাদের নেশা।
জিকোর পিতা মতিয়ার রহমান কুরবান জানিয়েছেন, তার বউ মা মিম ও তার বড় বোন রাবেয়া বশরীর চরিত্র ভালো না । বিভিন্ন জনের সাথে গোপন সম্পর্ক গড়েও তারা অর্থ হাতিয়ে নেন। জিকোর সংসারে থাকাকালীন সময়েরও মিম পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এই কাজে তাকে সহায়তা করেন বড় বোন রাবেয়া। মতিয়ার রহমান কুরবান জানান, তার ছেলেকে আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলহাজতেও পাঠানো হয়েছে। দুই বোনের অপকর্মের ঘটনায় তিনি গত ৩০ জুন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তিনি আরও জানান, এখন পত্রিকায় দেখলাম তাদের মাকে অসুস্থ সাজিয়ে ৫৩ দিন কুইন্স হসপিটালের কেবিন দখল করে রয়েছেন। মূলত দুই বোনের টার্গেট এবার কুইন্স হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া। কেননা এর আগেও বিভিন্ন জনের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে মিম ও রাবেয়া লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন ।
কুইন্স হসপিটালের এডমিন আইটি হাসান ইমাম শিমুল জানান, মাহমুদা খাতুন পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন। তার পরও তার দুই মেয়ে রোগী নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন না। বিভিন্ন ভাবে হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে নাজেহাল করছেন। ছাড়পত্র দিতে গেলেও মারমুখী আচরণ করা হচ্ছে। মোট ৫৪ দিন তারা হসপিটালের ৭০৩ নম্বর কেবিন জোর করে দখলে রেখেছেন।
এই বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য মাহমুদা খাতুনের দুই মেয়ে রাবেয়া বশরী ও মিমের কাছে গেলে তারা কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কেবিনের দরজা লাগিয়ে দেন। পরে সাংবাদিক পরিচয়ে দরজা খোলার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও সাড়া দেননি।

আরো সংবাদ