র্যাব বলছে, ভুয়া চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য থামছে না খুলনায়। নকল ডিগ্রি ব্যবহার করে চকচকে ভিজিটিং কার্ড ও সাইন বোর্ড লাগিয়েরোগীদের প্রতারিত করা তাদের মূল লক্ষ্য। এ সব চিকিৎসকদের সহযোগীতার জন্য সক্রিয় রয়েছে কিছু দালাল চক্র।
র্যাব-৬ এর মিডিয়া সেলের শাখা ইনচার্জ এসআই বজলুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সোমবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়ায় তন্ময় অধিকারী (২৭) নামে এক জনকে কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মেডিকেল অ্যাসিট্যান্ট হওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসক পরিচয়ে অনুমোদনহীন অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা দেওয়ার অপরাধে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ওবায়দুর রহমান তাকে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনার রূপসা এলাকায় মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়া চিকিৎসা দেওয়ার অপরাধে দুজন ভুয়া চিকিৎসককে এক বছর করে বিনাশ্রম কারদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরা হলেন- পূর্ব রূপসা বাজারের অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক এ বি এম আতাউর রহমান ও দন্ত চিকিৎসক মো. আলমগীর হোসেন শেখ।
বজলুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব রূপসা বাজারে মাদারীপুর ক্লিনিকের ব্যানারে আতাউর কোনো ধরনের মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়াই চিকিৎসার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। র্যাব খবর পেরে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালায় এবং অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আতাউরকে দণ্ড দেয়।
একই অভিযোগে উপজেলার ইলাইপুর মোড়ে আঁখি ডেন্টাল কেয়ারে অভিযান চালিয়ে ভুয়া চিকিৎসক জাবুসা এলাকার আলমগীর হোসেন শেখকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২ সেপ্টেম্বর খুলনার বটিয়াঘাটার বাইনতলা এলাকায় ভুয়া চিকিৎসক আজিম উদ্দিন খানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ‘মেডিকেল সহকারী’ পদে উত্তীর্ণ হলেও নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।
একই দিনে ওই এলাকায় গাজী হোমিও কেয়ার সেন্টারের মালিক শফিউল্লাহ গাজীকে (৩২) ডাক্তার পদবি ব্যবহার করায় ২০ হাজার টাকা ও আরিফ মেডিকেল হল ফার্মেসির মালিক আরিফ হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গত ২৫ অগাস্ট খুলনা জেলার রূপসা উপজেলাধীন নৈহাটি এলাকায় রেজিস্ট্রেশন বিহীন অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পরিচালনার অভিযোগে খুলনার আরাফাত হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সিলগালা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কামরুজ্জামানকে দণ্ড দেওয়া হয় বলে র্যাব কর্মকর্তা বজলুল জানান।
এ বিষয়ে খুলনা বিএমএর সভাপতি ডা. বাহারুল ইসলাম বলেন, ওই সব নামধারী চিকিৎসকেরা দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে আসছে। তাদের অপচিকিৎসায় অনেক রোগী মারাও যাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবদেন করে কেউ কোনো স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান চালাতে পারবেন না। এটা আইনগতভাবে অপরাধ।