মোহাম্মদপুরের দুর্গা মন্দিরের গলিতে রাত ৮টার দিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন নুর ইসলাম (২৬)। তিনি বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফির কাজ করতেন। এ সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা এবং দুই হাতে কুপিয়ে জখম করে। পরে রাত ১০টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মাস্ক পরে দেশীয় অস্ত্র হাতে নুর ইসলামকে ধাওয়া করে কয়েকজন যুবক। নুর ইসলামও জীবন বাঁচাতে ছুটতে থাকেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। এ সময় তার কাছ থেকে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
নুর ইসলাম বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব সুজন কাঠি গ্রামের আবুল ফকিরের ছেলে।
নিহতের বড় ভাই ওসমান গনি বলেন, ‘আমার ছোটভাই বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফির কাজ করত। রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদপুরের দুর্গা মন্দিরের গলিতে দাঁড়িয়ে ছিল সে। এ সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা এবং দুই হাতে কুপিয়ে জখম করে। আমরা খবর পেয়ে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক জানান আমার ভাই আর বেঁচে নেই।’
এদিকে, রাত সোয়া ৮টার দিকে ধানমন্ডির জিগাতলায় দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মো. আলভী (২৭) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তিনি ড. মালেকা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম (২১) নামে আরও এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আশরাফুল একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
আলভীর বাবার নাম মশিউর খান পাপ্পু ও আশরাফুলের বাবার নাম মোহাম্মদ মাসুদ। তারা হাজারীবাগের বিজিবি ৫ নম্বর গেট এলাকায় থাকেন।
নিহত আলভীর মামী মাহি বেগম বলেন, ‘আলভী ড. মালেকা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষে লেখাপড়া করত। আজ রাত সোয়া ৮টার দিকে আলভী ও তার বন্ধু আশরাফুল জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিল। এ সময় অজ্ঞাত তিন থেকে চারজন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আলভীকে মৃত ঘোষণা করেন।’
মাহি বেগম বলেন, এ ঘটনায় নিহত আলভীর বন্ধু আশরাফুল জরুরি বিভাগের চিকিৎসাধীন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক দুটি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহ দুটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে।