যশোর প্রতিনিধি :: বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ৪ঠা নভেম্বর বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
এসময় যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক তরিকুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে মরহুমের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বক্তব্যে তিনি বলেন, “তরিকুল ইসলাম নিজেই একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। তিনি আমৃত্যু রাজনীতির সাথে জড়ীত ছিলেন। যশোর জেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আজকের স্মরণসভায় উপস্থিত সকলেই তরিকুল ইসলামের আদর্শ ধারণ করেন ।“
এসময় খুলনা বিভাগীয় বিভিন্ন জেলা উপজেলা ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলামের সাথে কাটানো কিছু মুহুর্তের কথা তুলে ধরেন মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তরিকুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) সবচেয়ে রাজনৈতিক ভীত শক্তিসম্পন্ন ব্যাক্তি।“
আজ দুপুরে নিউইয়র্কে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তরিকুল ইসলামের আত্বার শান্তি কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর।
তরিকুল ইসলাম ঢাকার এপোলো হাসপাতালে ৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তরিকুল ইসলাম ১৯৬২ সালে যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজের জরাজীর্ণ শহীদ মিনার মেরামত করলে তৎকালীন সামরিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে। তিনি ১৯৬৩-১৯৬৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে মাইকেল মধুসূদন কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৬৮ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন করে নয় মাস রাজশাহীত এবং যশোরে কারাভোগ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ায় আবারো কারাভোগ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগদান করেন। সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধে।ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে প্রথমে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল পরে জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন ।বি এন পির প্রথম আহ্বায়ক কমিটির ৭৬ সদস্যের অন্যতম সদস্য তিনি। তিনি যশোর জেলা বি এন পির প্রতিষ্ঠাকালীন আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । এ ছাড়াও তিনি বিএনপির যুগ্মমহাসচিব, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, ভাইস চেয়ারম্যান ও ২০০৯ সালের বাংলাদেম জাতীয়তাবাদী দলেন পঞ্চম কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ফেব্রুয়ারী ১৯৯৬ সালের ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর -৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের সময় তিনি সমাজকল্যান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোটসরকারের সময় তিনি প্রথমে তথ্যও পরে পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
আজকের স্মরণসভায় উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু সহ খুলনা বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেবকদল,কৃষকদল সহ অন্যান্য অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।