মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ভাবানিপুর গ্রামে একটি টিউবওয়েলের হাতলে চাপ বা কোন ইলেকট্রিক সংযোগ ছাড়াই নিরবিচ্ছিন্ন পানি বের হয়ে চলেছে। বিষয়টি অলৌকিক ভেবে টিউবওয়েল থেকে নির্গত পানিতে মানুষের রোগ মুক্তি হচ্ছে বলে ওই এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে করোনা মহামারীসহ নানা রকম জটিল রোগ মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ ওই টিউবওয়েলের পানি নিতে দলে দলে ছুটে যাচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এক পানিতেই সকল রোগের মুক্তি মিলবে এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে বসেছে মেলার দোকান। এখানে খেলাধুলার সামগ্রীসহ মেয়েদের প্রসাধনী ও সাজ-সজ্জার নানা পণ্য বিক্রি করছে ফেরিওয়ালা। সেখানে টিউবওয়েলটির পাশে গিয়ে মানুষ পানি পান করাসহ ভরে নিয়ে যাচ্ছে বোতলে করে। যারা যেতে পারছেন না তারা নিকট আত্মীয়সহ কাছের মানুষের মাধ্যমে পানি বোতলে করে বাড়িতে নিচ্ছেন। তবে ওই পানি পান করে কারো রোগ মুক্তি হয়েছে এমন কোন খবর পাওয়া যায়নি। তারপরেও নারী-পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী শ্রেণি-পেশার মানুষ পানি নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এনিয়ে এলাকার মানুষ নানা রকম মন্তব্য করেছেন।
এলাকাবাসির দাবি, অলৌকিকভাবে টিউবওয়েলে পানি উঠায় রোগ মুক্তি হবে বলে আমরা পানি নিয়ে পান করছি। যাতে আমাদের করোনা না হয় এবং ক্যান্সারসহ অন্যান্য গোপন রোগ থেকে মুক্তি লাভ করি। টিউবওয়েলের মালিক আনারুল ফকির জানান, অটো পানি বের হওয়ার বিষয়টি ছেলেরা মোবাইলে ভিডিও করে ফেসবুকে দেওয়ায় এখন লোকজন পানি নিতে আসছে। একটি ছেলে এই পানি খেয়ে নাকি সুস্থ হয়েছে। তার মাধ্যমে রোগ মুক্তির বিষয়টিও ছড়িয়ে পড়েছে। এখন মানুষ দলে দলে পানি নিতে আসছে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, টিউবওয়েলের পানি স্বাস্থ্য সম্মত কি না পরীক্ষার পর বলা যাবে। এ পানিতে রোগ নিরাময় হবে এ ধরনের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। রবং এ পানিতে আর্সেনিক থাকতে পারে। পানি পান করার পর ডায়রিয়া হতে পারে। রোটা ভাইরাস ইনফেকশন হয়, যা জনগণের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনবে।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. মাহফুজুর রহমান জানান,অতিবৃষ্টির কারণে পানির লেয়ার উপরে উঠে যায়। একারণে কখনও কখনও অনবরত পানি বের হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আবার গ্যাস থাকার কারণে চাপ বাড়লে পানি বের হতে পারে। এটা উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।