আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সন্ধ্যা ৭:৪৭

প্রথম দিনই এক ডজনের বেশি নির্বাহী আদেশ দেবেন বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসেই এক ডজনের বেশি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন জো বাইডেন।

অভিবাসন থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ে গত চার বছরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আয়োজন থাকছে এসব নির্বাহী আদেশে। আসন্ন বাইডেন প্রশাসনের চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইনের বরাত দিয়ে সিএনএনসহ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

রন ক্লেইনের স্মারক উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারের সময় বাইডেন যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা রক্ষা করার প্রথম প্রমাণ শুরুর দিনেই জানান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

মুসলিমপ্রধান বিভিন্ন দেশ থেকে আমেরিকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি প্রথম দিনই বাতিল করবেন বাইডেন।

জলবায়ু-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে এনেছিলেন ট্রাম্প। বাইডেন তাঁর প্রথম কর্মদিবসেই এই চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেবেন।বিজ্ঞাপন

বাইডেন প্রশাসনের প্রথম কর্মদিবসের নির্বাহী আদেশের মধ্যে আরও রয়েছে—করোনা পরিস্থিতি চলাকালীন শিক্ষা ঋণ পরিশোধ স্থগিত রাখার নির্দেশ। অর্থনৈতিক কারণে বাড়ি ভাড়া দিতে না পারার কারণে ভাড়াটেদের উচ্ছেদ স্থগিত রাখার আদেশ।

বাইডেন আগেই জানিয়েছেন, তিনি তাঁর ক্ষমতার প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশে ফেডারেল স্থাপনায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করবেন।

প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রতি বাইডেনের নির্দেশনামূলক কিছু আদেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন রন ক্লেইন।

ক্ষমতার ১০০ দিনের মধ্যে ব্যাপক অভিবাসন সংস্কার আইন নিয়ে কাজ করার জন্য আইনপ্রণেতাদের কাছে প্রস্তাব তুলে ধরবেন বাইডেন।

আমেরিকার ভেঙে পড়া অভিবাসন-ব্যবস্থাকে ট্রাম্প একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করে আরও জটিল করে তুলেছেন। বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি লাখ লাখ নথিপত্রহীন অভিবাসীর জন্য আমেরিকার নাগরিকত্বের পথ উন্মুক্ত করবেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন প্রথম সপ্তাহের আইনপ্রণয়ন প্রক্রিয়ায় করোনা পুনরুদ্ধারে তাঁর ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবটি নিয়ে কংগ্রেসকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেবেন।

বাইডেন বক্তৃতায় স্পষ্ট করেছেন, তাঁর প্রথম আইনপ্রণয়নের উদ্যোগের মাধ্যমে আমেরিকার অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত নাগরিকদের সহযোগিতায় আইন পাস করা হবে।

রন ক্লেইন জানিয়েছেন, সব সমস্যা কেবল নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়। আইনপ্রণেতাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব পদক্ষেপ দ্রুততার সঙ্গে গ্রহণ করা হবে।

সিনেটে রিপাবলিকানদের সঙ্গে বাইডেনের সুসম্পর্ক এসব ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।বিজ্ঞাপন

শুরুতেই প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদগুলো সিনেটে শুনানির মাধ্যমে নিশ্চিত করাই হবে বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অন্যতম জরুরি কাজ।

রন ক্লেইনের স্মারক থেকে জানা যায়, ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাইডেন যেসব আদেশ জারি করবেন, তার মধ্যে রয়েছে সরকারের সব পর্যায়ে আমেরিকার পণ্য ক্রয় করা। এই সময়ের মধ্যেই আমেরিকার ফৌজদারি অপরাধের বিচারব্যবস্থাকে (ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম) সংস্কার করার নির্দেশনা দেবেন বাইডেন।

ক্ষমতা গ্রহণের শুরুর সপ্তাহেই আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের পুনরায় একত্রীকরণ করতে ফেডারেল এজেন্সিকে নির্দেশ দেবেন বাইডেন।

স্বাস্থ্যসেবা বর্ধিত করবেন বাইডেন। অধিকসংখ্যক লোক যাতে স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকার পায়, সে জন্য নির্দেশনা জারি করবেন তিনি।

রন ক্লেইন বলেছেন, এসবই বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের কাজের শুরু মাত্র। করোনা মোকাবিলা, অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা, আমেরিকায় চলমান বর্ণবাদ ও অসাম্য মোকাবিলায় আরও অনেকগুলো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

চরমপন্থীদের হুমকি মোকাবিলা, জলবায়ু সমস্যাসহ অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রন ক্লেইন।

রন ক্লাইন বলেছেন, বাইডেনের নেতৃত্বে আমেরিকা যে আবার সঠিক পথে ফিরে এসেছে, তার প্রমাণ ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

আরো সংবাদ