আজ - শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:৫৪

ফের কাঠেরপুলে গরুর মাংস ৫৫০ টাকা- আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি!

যশোর বড়বাজার কাঠেরপুলে মূল্য তালিকা প্রদর্শিত না থাকায় জরিমানা করার পর আবারও আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন মাংস বিক্রেতারা। গতকাল একজন দোকানি ছাড়া আর কারও দোকানে মূল্য তালিকা দেখা যায়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর দু দিন মাংস বিক্রেতারা তাদের নিজ নিজ দোকানে নির্ধারিত মূল্য তালিকা ঝুলিয়েছিলেন।


বড়বাজার কাঠেরপুলে গরুর মাংস বিক্রেতাদের স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে এর আগে স্থানীয় পত্রিকায় বেশ কয়েকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পৌর এলাকায় পশু জবাইখানা না থাকায় যে যেখানে পারছেন সেখানে গরু জবাই করে পরিবেশ দূষিত করছেন। জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। রোগাক্রান্ত ও দুর্বল গরুর মাংস বিক্রির অপরাধে এখানকার বিক্রেতাদের জেল-জরিমানাও হয়েছে। হাটে বাজারে গরুর মূল্য কমবেশি যাই হোক না কেন এখানকার শক্তিশালী বিক্রেতা সিন্ডিকেট মাংসের দাম নির্ধারণ করে থাকে। তাদের বেঁধে দেয়া দরে ক্রেতারা মাংস কিনতে বাধ্য হন। যশোর পৌর এলাকার মধ্যে এত বড় গরুর মাংসের বাজার দ্বিতীয়টি নেই।

সঙ্গত কারণেই শহর ও শহরতলীর মানুষজন এখান থেকে মাংস কিনতে পছন্দ করেন। প্রতি শুক্রবার জুমার দিন এখানে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ মণ মাংস বিক্রি হয়। মাংস বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম ও ক্রেতাদের সাথে প্রতারণার বিষয়ে লোকসমাজ পত্রিকায় তথ্যভিত্তিক একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এখানে মাংস কিনতে আসা অনেক ক্রেতা এসব অনিয়ম দূর করার জন্য বহুবার জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এমনই পরিস্থিতিতে গত ১৪ জুলাই দুপুরে কাঠেরপুলে গরুর মাংসের দোকানগুলোয় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিন এখানকার মাংস বিক্রেতাদের দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানো না থাকায় দু জন বিক্রেতাকে মামলা দিয়ে জরিমানা করা হয়। যশোর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামশেদুল আলম এ অর্থদণ্ড প্রদান করেন। তিনি প্রতি দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দেন। এর পরপরই মাংস বিক্রেতারা তাদের দোকানে প্রতি কেজি গরুর মাংসের মূল্য ৫ শ টাকা সম্বলিত সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শেষে তিন/চার দিন মাংস বিক্রেতারা মূল্য তালিকা টাঙিয়েছিলেন।

এরপর তারা আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন। গতকাল শুক্রবার জুমার দিন কাঠেরপুলে গরুর মাংসের জমজমাট বিকিকিনি চলে। তবে অবাক ব্যাপার, মাত্র একজন বিক্রেতা ছাড়া বাকি সব বিক্রেতাকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়। এ সময় ‘যশোর বিফ হাউস’ এ প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা দর ছাড়া আর কোনো মাংসের দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানো ছিল না। এদিন গরুর মাংস কিনতে আসা জনৈক আব্দুল জলিল এ প্রতিবেদককে জানান তিনি এক কেজি মাংস কিনেছেন ৫৫০ টাকায়। কাঠেরপুলে প্রশাসনের নজরদারির ওপর জোর দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, একমাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালতের তাৎক্ষণিক বিচারই পারে এখানকার অসাধু বিক্রেতাদের দমন করতে। মাংসের মান ও ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে জেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে এমনটাই আশা করেন তিনি।

মুনতাসির মামুন / যশোর।

আরো সংবাদ