বিয়ে বাড়ির খাওয়া-দাওয়া শেষে বরের হাত ধুইয়ে দেয়ার বকশিস নেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বর ও কনেপক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের দেবিদ্বার ও মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিয়ে সম্পন্ন না করেই বরপক্ষ কনের বাড়ি থেকে ফিরে গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় মুরাদনগর উপজেলার ১৮নং ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের আমির হোসেন মেম্বারের বাড়ি সংলগ্ন হাজী বাড়িতে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের পাইঞ্জত আলী মুন্সী বাড়ির মো. ইসমাইল মুন্সীর ছেলে মো. সাদেক হোসেনের (২৬) সঙ্গে মুরাদনগর উপজেলার নেয়ামতকান্দি গ্রামের মো. শানু মিয়ার মেয়ে মোসা. সোনিয়া আক্তারের (১৮) গতকাল রোববার পারিবারিক ভাবে বিয়ের দিন ধার্য ছিল। দুপুরের পর বরযাত্রী কনের বাড়িতে গেলে, গেটের সালামি নিয়ে প্রথমে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। পরে খাওয়া-দাওয়া শেষে বরের হাত ধোয়ানোর টাকা নিয়ে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষ হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়।
এতে বরের পক্ষের প্রায় ২০ জন ও কনে পক্ষের ১০ জনের মতো আহত হয়। আহতদের মধ্যে সাইফুর ইসলাম, সায়মা বেগম, কামাল হোসেন, ফয়েজ আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, বাবু, হেলালসহ কয়েক জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষের কারণে বিয়ে সম্পন্ন না করেই ফিরে যান বরযাত্রীরা।
কনের বড় ভাই মো. গিয়াস উদ্দিন মুরাদনগর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, বরপক্ষ ১৫০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসার কথা থাকলেও তারা ১৬০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসেন। তাদের খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর বরের হাত ধোয়ার বকশিস নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে মেয়েদেরকে বরপক্ষের লোকজন অকথ্যভাষায় গালমন্দ, মারধর ও শ্লীলতাহানি করে। এ অবস্থায় আমাদের বাড়ির লোকজন বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে তারা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের লোকদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিয়ের কনেসহ আমাদের ৮-১০ জন মারাত্মক আহত হয়। বরপক্ষের লোকজন কনের কক্ষে ঢুকে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বরের ভাই মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিয়ে বাড়ির গেটে আসার পর বখশিসের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমরা পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকার পর আরও পাঁচশ টাকা দিলে কনেপক্ষের লোকজন গেটের চেয়ার-টেবিল ছুঁড়ে ফেলে দেয়। বরযাত্রী ১৩০ জন যাওয়ার কথা থাকলেও ১২০ জন গিয়েছি। তারপরও বরপক্ষের লোকদের খাবার দিতে পারে নাই। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বরের শেরওয়ানী ছিঁড়ে ফেলে। আমাদের নারী সদস্যদের ওপর মারাত্মক হামলা চলে। আমি থামাতে গেলে মারধরের আঘাতে অচেতন হয়ে পড়ি।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, কনের বাড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।