নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বুধবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়েছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু ককটেল, মারামারির কাজে ব্যবহৃত লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে আগের দিন মঙ্গলবার বিকেলে ও রাতে সংঘর্ষের কারণে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বসুরহাটে। পৌরসভা এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার কারণে বাজারে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম। বসুরহাট বাজারের বেশির ভাগ দোকানপাটই বন্ধ। সাধারণ মানুষ ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারির পর বসুরহাট-দাগনভূঞা সড়কের মহাজনদিঘি, বসুরহাট-কবিরহাট সড়কের লোহার পোল এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কে কাদের মির্জার অনুসারীরা ব্যারিকেড দিয়েছেন। ফেনী ও কবিরহাট এলাকা থেকে কেউ যাতে বসুরহাটে না আসতে পারে, সে জন্য তাঁরা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং যাত্রীবাহী বাস আড়াআড়ি করে রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। আজ সকাল নয়টা নাগাদ পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় প্রতিবন্ধকতাগুলো সরিয়ে নেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে নয়টায় বসুরহাট বঙ্গবন্ধু চত্বর ও পৌরসভা ভবন এলাকায় কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গতকাল রাত ১২টার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামে। অভিযানের সময় একটি পিকআপ ভ্যানে থাকা একসঙ্গে ২৭ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের বেশির ভাগই তরুণ ও যুবক।বিজ্ঞাপন
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা আজ ২৭ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বসুরহাট-চাপরাশিরহাট সড়ক থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বহনকারী পিকআপ ভ্যান থেকে বেশ কিছু ককটেল, ইটপাটকেল ও লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল থেকে বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় টহল দিচ্ছে র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা। থানা-পুলিশের পাশাপাশি জেলা থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নতুন করে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। বসুরহাটের মেয়র কাদের মির্জা তাঁর কিছু অনুসারীকে নিয়ে পৌরসভা ভবনে অবস্থান করছেন। আর অপর পক্ষ মিজানুর রহমানের অনুসারীদের কাউকে সকাল থেকে বসুরহাট এলাকায় দেখা যায়নি। তবে মানুষের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চরম আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।