আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - বিকাল ৪:৫৭

বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছাড় দিচ্ছে আওয়ামী লীগ

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছাড় দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি দলীয়ভাবে এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে দলের আগামী প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ কারণে ইউপি নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে নতুন কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র জানায়, আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে দলের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। অর্থাত্ দলের নেতাদের অংশগ্রহণের বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে অনেকটা উন্মুক্তই রাখা হচ্ছে। এসব সার্বিক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে। গণভবনে শিগিগরই এই বৈঠকের আয়োজন করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। তখনো উল্লিখিত পদ্ধতিতে নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। ইউপি নির্বাচন পরিচালনাবিধি অনুযায়ী, দলীয় প্রার্থীদের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত হতে হবে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে তা লাগবে না। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যোগ্যতা থাকলে যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে আগ্রহীদের নির্বাচনি এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন তালিকা দেওয়ার বিধি রয়েছে।

আসন্ন ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলে মনোনয়নপ্রত্যাশীর ছড়াছড়ি। প্রতি ইউনিয়নে গড়ে ৭ থেকে ১০ জন বা তারও অধিক দলীয় নেতা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চান। দলীয় প্রতীক পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ করছেন তারা। বিএনপি না থাকলে আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হলে সেটা সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে কি না, তা নিয়েও চিন্তিত দলের নীতিনির্ধারকেরা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ইউপিতে ত্যাগী, যোগ্য ও দলের জন্য নিবেদিত নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। আগে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী বা তাদের সমর্থক ছিলেন, তাদের এবার দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে বড় এই নির্বাচনে নিজেদের সাফল্য ধরে রাখতে উপযুক্ত দলীয় প্রার্থী খুঁজছে আওয়ামী লীগ। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে সুপারিশ পাঠাতে ইতিমধ্যে তৃণমূলে চিঠি পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগের আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য সংগঠনের সব জেলা-মহানগর শাখাকে তৃণমূলের রেজ্যুলেশন পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশনা প্রদান করেছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন আগামী ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপে ২০টি জেলার ৬৩টি উপজেলার ৩২৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একইভাবে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন ধাপে সারা দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সুনির্দিষ্ট গঠনতান্ত্রিক বিধি মোতাবেক তৃণমূলের রেজ্যুলেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউপির মধ্যে আগামী ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপে ৩২৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে বলে ইতিমধ্যে তপশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে ৪১টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে। আইন অনুসারে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকেই হতে যাচ্ছে।

আরো সংবাদ