আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ৬:৪৫

যশোরের আলোচিত কেশবপুরের মেয়র রফিকুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে

যশোরের কেশবপুর পৌরসভার বহুল আলোচিত মেয়র রফিকুল ইসলামের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর কেশবপুরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় বিকেল তিনটায় হবে এ তদন্ত। স্থানীয় সরকার খুলনা বিভাগের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক নোটিশ থেকে এ তথ্য জানাগেছে। ওই নোটিশের স্মারক নম্বর ০৫.৪৪.০০০০.০০৪.১৯.০০১.২১-৪৯২। কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল আজিজের অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হচ্ছে এই তদন্ত।

এদিকে ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আরও একটি অভিযোগ করা হয়েছে। পৌরসভার কাউন্সিলর আফজাল হোসেন বাবু এই অভিযোগ করেছেন। গত ২৫ জুলাই চার পাতার ১৩ টি অভিযোগ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠিয়েছিলেন এই কাউন্সিলর।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, মেয়র রফিকুল ইসলাম প্রথম মেয়াদে রাজস্ব খাতের দেড় কোটি টাকা বিভিন্ন প্রজেক্ট এবং কোটেশন করে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আবুল হোসেনকে দিয়ে উত্তোলন করে নেন। বিষয়টি কাউন্সিলররা জানার পর তিনি চার মাস মাসিক মিটিং না করে কর্মচারীদের কাউন্সিলরদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করেন। তারপরও ২,৩,৪,৫ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা স্বাক্ষর করেননি।

গত ঈদুল আযহায় অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাত লাখ টাকা আসে। কিন্তু মেয়র সেই টাকা বিতরণ না করে প্রতি ওয়ার্ডে ৩০-৪০ জনকে ১০ কেজি করে চাল এবং ১০-১৫ জনকে পাঁচশ’ করে টাকা দিয়ে বাকিটা আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালে পৌরসভার রাজস্ব খাত থেকে আয় হয় ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তারপরও পৌরসভায় উন্নয়নমূলক কোনো কাজ হয়নি। আদায়কারী আবুল হোসেনকে দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প ও কোটেশন করে মেয়র বিপুল অঙ্কের এই টাকা আত্মসাৎ করেন। করোনাকালীন সাহায্য দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের নামে আবেদন করে টাকা উত্তোলন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন কাউন্সিলর আফজাল হোসেন বাবু।

২০২০-২০২১ অর্থ বছরে এলজিএসপি এবং ওটিএমের পাঁচটি কাজের টেন্ডার হয়। সমুদয় কাজ মেয়র তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলম এন্টারপ্রাইজের নামে নিয়ে নেন। এলজিএসপির আট লাখ টাকা ১০ টি সোলার বাবদ রেখে দেন তিনি। পরবর্তীতে তারই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডার করিয়ে নেন।

মেয়র পৌরসভায় তিনটি ডিজিটাল সাইনবোর্ড স্থাপন বাবদ ১১ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। এই কাজও তিনি তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়ে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাউন্সিলর বাবু।

এ বছরের জুন মাসে মেয়র দশটি টিআর প্রকল্প করেন। প্রত্যেকটি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় দুই লাখ ৬২ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পের কাজ না করে যাদের নামে টিআর প্রকল্প করা হয় তাদেরকে পাঁচ হাজার করে টাকা দিয়ে বাকিটা আত্মসাৎ করেন মেয়র রফিকুল ইসলাম। তিন লাখ টাকা করে নিয়ে পৌরসভায় ১০ থেকে ১৫ জনকে মেয়র নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন কাউন্সিলর আফজাল হোসেন বাবু। মেয়র রফিকুল পৌরসভায় তার রুম ডেকোরেশনের নামে ১৫ লাখ ব্যয় দেখিয়েছেন কোনো রকম সভা ছাড়াই।

মেয়র রফিকুলের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, উপসচিব (পৌর-১) স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিভাগীয় কমিশনার খুলনা, চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক যশোর, বিভাগীয় পরিচালক, খুলনা বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কমিশন ও উপপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, যশোর বরাবর দেয়া হয়েছে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত