আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১২:০২

যশোরে এক সপ্তাহে ৩ হত্যা।

যশোরে গত এক সপ্তাহে ছুরিকাঘাতে নারীসহ ৩ জন খুন হয়েছেন। যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা সার গোডাউন এলাকা, খোলাডাঙ্গা ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন মসজিদের পাশে ও সদর উপজেলার শেখহাটি আদর্শপাড়ায় এ তিনটি ঘটনাটি ঘটে। একটি খুনের ঘটনায় পিবিআই দুইজনকে আটক করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪ নভেম্বর (সোমবার) এশার নামায শেষ নিজের স্যানিটারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন খোলাডাঙ্গার আজিজুল ইসলাম ওরফে মিন্টু মুন্সির ছেলে জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজল (৪৪)। এ সময় সার গোডাউনের পিছনে পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান তাকে (সজল) মৃত ঘোষণা করেন।

স্বজনদের অভিযোগ, খোলাডাঙ্গা রেললাইনের পাশের একটি জমি নিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী খোঁড়া কামরুলের সাথে সজলের বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে কামরুলের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা তাকে খুন করতে পারে। ৫/৬জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। সজল খুনের প্রতিবাদে রাতে লাশ নিয়ে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ যশোর জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। নিহত সজলের শরীরে অন্তত ১৩ টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিলো।

গত ২ (শনিবার) নভেম্বর ভোরে খোলাডাঙ্গা ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন মসজিদের পাশের রাস্তা থেকে স্থানীয়রা ছুরিকাহত আসাদুল ওরফে আসাদকে (৩৫) যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি খড়কি দক্ষিণপাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় ট্রাকের হেলপার ছিলেন। ১ নভেম্বর (শুক্রবার) রাতের কোন এক সময় আসাদকে ছুরিকাঘাতের পর ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।

এর আগে ৩১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি আর্দশপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে শাহানারা বেগমের (৬০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারই বাড়ির ভাড়াটিয়া দুই ভাই গলাকেটে তাকে খুন করে। শাহানারা বেগম শেখহাটি আর্দশপাড়া এলাকার ইজবাইক চালক আতিয়ার রহমানের স্ত্রী।

আতিয়ার রহমান জানান, ৩০ অক্টোবর সকালে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে যশোর ডায়াবেটিক হাসপাতালে যান। ডাক্তার দেখানো শেষে তারা বাড়ি ফিরে আসেন। বিকেলে তিনি ইজিবাইক চালানোর উদ্দেশ্যে শহরে চলে যান। বাড়িতে শাহানারা বেগম একাই ছিলেন।

আতিয়ার রহমান জানান, তিনি রাতে বাড়ি ফিরে দেখতে পান প্রধান ফটক ও ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। তার ছেলে ইউসুফকে নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেন। এরপর ৩১ অক্টোবর সকাল ৮ টার দিকে তিনি (আতিয়ার) তার ছেলে ইউসুফ ও সোহেল বাড়ির দেয়াল বেয়ে ভিতরে যান। এসময় তারা বসত ঘরের দরজার সাথে রক্ত মাখা কাপড়ের টুকরা দেখে তালা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে শাহানারা বেগমের রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ১ নভেম্বর রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ঝাউডাঙ্গা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ২ জনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। আটককৃতরা হলেন, যশোর সদর তালবাড়িয়া খালপাড় এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে বাবলা (৩০) ও নিহত শাহানারার মামাতো ভাই সুমন ইসলাম (৩২)।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আমিনুল ইসলাম সজল ও আসাদুল ওরফে আসাদের ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখে মনে হয়েছে পেশাদার খুনিরা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ইতিমধ্যে শাহানারা খাতুন হত্যার সাথে জড়িত দুই জন আটক হয়েছে। সজল ও আসাদ হত্যাকারীদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।

আরো সংবাদ