আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:৪২

যশোরে চাঞ্চল্যকর ১৭ লাখ টাকা ডাকাতি মামলার চার্জশিট, অভিযুক্ত ৯

গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রকাশ্যে যশোর শহরের এমকে রোডস্থ জেস টাওয়ারের বিপরীতে ইউসিবিএল ব্যাংকের সামনে এক ফল ব্যবসায়ীর চাঞ্চল্যকর ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা দুইটি মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।

আলোচিত এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোর সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তুষার কুমার মন্ডল বুধবার আদালতের সংশ্লিষ্ট দফতরে চার্জশিট জমা দিয়েছেন।

ডাকাতির ঘটনায় একটি এবং বোমা ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করার অভিযোগে বিস্ফোরক আইনে অপর একটি চার্জশিট দেয়া হয়।

উভয় চার্জশিটে ৯জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলো, নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাক ওরফে জামায় রাজ্জাক (৩৫), শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকার শফি দারোগার বাড়ির ভাড়াটিয়া মুনসুর মোল্লার ছেলে টিপু (২৩), বারান্দী মোল্লাপাড়া কবরস্থান পাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে সাইদ ইসলাম শুভ (২৪), ধর্মতলা হ্যাচারিপাড়ার রুহুল আমিনের ছেলে বিল্লাল হোসেন ওরফে ভাগ্নে বিল্লাল (২২), সিটি কলেজ পাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে রায়হান (২৮), পূর্ব বারান্দিপাড়ার মৃত মুফতি আলী হোসেনের ছেলে ইমদাদুল হক (২১), শহরতলীর ধর্মতলা খ্রিস্টান কবর স্থানের পাশের তবিবর রহমানের ছেলে সোহেল শেখ (২৮), ধর্মতলা খ্রীষ্টান পাড়ার লিটনের ছেলে আরাফাত ওরফে রাজু (২৮)এবং তার মা মেহেরুন্নেছা (৪৫)।

মামলা সূত্রে জানাগেছে, যশোর মনিহার প্রেক্ষাগৃহের সামনের ফলপট্টির ফল ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেনের আরআই এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ফলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। এছাড়া আরএন রোডে আগমণী মটর অ্যান্ড ইলেকট্রিক নামে আরো একটি দোকান আছে। ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে তিনি তার ভাই এনামুল হক এবং শ্যালক একই এলাকার এমাদুল হকের ছেলে ইমনকে দিয়ে ফল ব্যবসার ১৭ লাখ টাকা জমা দেয়ার জন্য ইউসিবিএল ব্যাংকে পাঠান। তারা দুইজনে একটি মোটরসাইকেলে করে ব্যাংকের সামনে যান। দুপুর দুইটার দিকে ব্যাংকের সিঁড়িতে উঠা মাত্রই ছিনতাইকারীদের একজন এনামুলের হাতে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় দুইজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হলে অপর এক ছিনতাইকারী তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। পরে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমাটি ব্যাংকের নিচতলায় এটিএম বুথে লাগে। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন গার্ড (প্রহরী) মোস্তাফা কামাল। বোমার আঘাতে এটিএম বুথের গ্লাস চুর্ণবিচুর্ণ হয়ে যায়। বোমার স্পিøন্টারের আঘাতে জখম হন প্রহরী মোস্তফা কামাল। পরে ওই তিনজন টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি একটি মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর তুষার কুমার মন্ডল জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই ডাকাতদের আটকের ব্যাপারে পুলিশ সতেষ্ট হয়। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামায় রাজ্জাক বাদে সকল আসামিকে আটক করে। এ ঘটনার মূল নায়ক রাজ্জাক এখনো পলাতক রয়েছে। এদের মধ্যে ৪জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। বিস্ফোরক আইনে অপর একটি চার্জশিট দেয়া হয়েছে। ডাকাতি মামলার সকল আসামিকে বিস্ফোরক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আলাতম ধংসের (ব্যাগ পুড়িয়ে দেয়া হয়) অভিযোগ আনা হয়েছে ২০১ ধারায়। আর আরাফাতের মায়ের কাছ থেকে ডাকাতির টাকা উদ্ধার হওয়ায় চার্জশিটে ৪১২ ধারা আনা হয়েছে। আর ডাকাতি মামলার ধারা ৩৯৫/৯৭। চার্জশিটভুক্ত জামায় রাজ্জাক বাদে সকল আসামি আটক রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

আরো সংবাদ