আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ১০:০৩

যশোরে চেয়ারম্যান সোহরাবের গোডাউন থেকে ২০ বস্তা সার জব্দ।

যশোরে হামিদপুরের নয়ন ইন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকান থেকে বিপুল পরিমাণ বিএডিসির এমওপি সার উদ্ধার ঘটনায় হৈচৈ শুরু হয়েছে। ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দ করা ওই সার দোকানে আসা ও গোপনে বিক্রি প্রক্রিয়া নিয়ে আসছে নানা তথ্য।

ঘটনার নেপথ্যে স্থানীয় ফতেপুর ইউপি চেয়াম্যান সোহরাব হোসেনের নাম উঠে আসছে। কৃষকদের জন্য বরাদ্দ সার আত্মসাত করে বিক্রির উদ্দেশে রোববার নসিমনযোগে চেয়ারম্যান স্থানীয় নয়ন এন্টারপ্রাইজে পাঠান বলে অভিযোগ। আর এ অভিযোগেই স্থানীয় জনতা সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেয়। এরপর পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত করে এবং আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তুতি নেয়।

হামিদপুর ও ফতেপুর এলাকার একাধিক সূত্র থেকে তথ্য এসেছে, রোববার এদিন সন্ধ্যায় এলাকার নসিমন চালক সাইফার আলী ২০ বস্তা সরকারি এমওপি সার নিয়ে বাজারের নয়ন এন্টারপ্রাইজে আসেন। সার, সিমেন্ট ও কীটনাশক বিক্রেতা শাহাব উদ্দিন আহম্মেদের দোকানে ওই সার পৌঁছালে স্থানীয় কৃষক-জনতা খবর পেয়ে দোকান ঘেরাও করে। ঘণ্টা খানেক কৃষকরা ওই দোকানের সামনে হট্টোগোল করে। পরে স্থানীয় চানপাড়া ফাঁড়ি ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

নসিমন চালক সাইফার আলী আরো জানান চেয়ারম্যান সোহরাবের গোডাউনে আরো কয়েকশ বস্তা সার মজুদ আছে।

স্থানীয় কৃষক রমজান আলী জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন তার একটি গুদামে ওই এমওপি সার গোপনে রেখে দিয়েছিলেন। রোববার একটি নসিমনযোগে ওই সার নয়ন এন্টারপ্রাইজে পাঠান বিক্রি করতে। এর কিছুদিন আগে কৃষকদের মধ্যে ওই সারের একটি অংশ বিতরন করা হয়। অনেক কার্ডের অনুকুলে সার না দিয়ে প্রতারণা করে আত্মসাৎ করে বিক্রি করেছে। তা রোববার সন্ধ্যায় ধরা পড়েছে।

এদিকে, রাতে স্থানীয় কয়েকজন যুবলীগ নেতা জানিয়েছেন, এটা কৃষি প্রণোদনার সার। বিনামূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য। কিন্তু চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন তা আত্মসাৎ করে বিক্রি করেন নয়ন এন্টারপ্রাইজের কাছে। এলাকার নসিমন চালক ও সার বহনকারী সাইফার আলী এবং দোকানি তাদের কাছে চেয়ারম্যানের সার বলে স্বীকারও করেছেন।
পুলিশ ও জনতার হেফাজতে নসিমন চালক সাইফার জানিয়েছেন, তিনি চেয়ারম্যানের গুদাম থেকে ওই ২০ বস্তা সার এনেছেন নয়ন এন্টারপ্রাইজে। চেয়ারম্যানের গুদামে আরও সার আছে।

এদিকে, ঘটনাস্থলে যাওয়া যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) পলাশ কুমার জানিয়েছেন, ‘এটা বিএডিসির বস্তায় সরকারি সার। স্থানীয় জনতার সন্দেহ ওটা কৃষকদের জন্য সরকারি বরাদ্দের সার। আর জনতার অভিযোগে তিনিসহ পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে যান। বিএডিসির সরকারি সার হওয়ায় এখনো সব ঘটনা পরিস্কার হতে পারেননি। ঘটনাস্থলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসবেন। তিনি আসলেই সব পরিস্কার হবে।’

সরকারি এমওপি সার উদ্ধার ঘটনায় অভিযোগ সংক্রান্তে স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের বক্তব্য নেয়ার জন্য কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এছাড়া নয়ন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাব উদ্দিন আহম্মেদের কাছে তিন দফা ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
রাত সাড়ে ৯টায় সার উদ্ধার ঘটনাস্থল হামিদপুরের নয়ন এন্টারপ্রাইজের সামনে জনতা, পুলিশ ও মিডিয়া কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সরকারি এই এমওপি সারের সাথে সম্পৃক্ত কিনা তা নিয়ে চলছিল নানামুখি গুঞ্জন। আর জড়িত হলে তিনি আটক হবেন কিনা এনিয়ে চলছিল শোরগোল।

আরো সংবাদ