আজ - বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১১:৩৯

যশোর উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্যাতনের শিকার প্রধান শিক্ষক।

যশোরের আদর্শ বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল আমিনকে নিয়োগ বাণিজ্যের সুযোগ করে না দেওয়া ও ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ক্যাডাররা দেড় ঘন্টা ধরে নির্যাতন করেছেন। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক আহত হয়েছেন।

বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে চেয়ারম্যানের বাড়িতে ডেকে নিয়ে এ নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর প্রধান শিক্ষক যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

জানা যায়, আগামি ডিসেম্বরে যশোর আদর্শ বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। নিয়ম অনুযায়ি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু নিয়োগ বাণিজ্যের সুযোগ করে না দেওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হন। এজন্য প্রধান শিক্ষককে একাধিকবার ফোন করে ও ক্যাডার পাঠিয়ে হুমকি দেন।

নির্যাতনের শিকার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, “নিয়ম অনুযায়ি বিদ্যালয়ে তিনজন কর্মচারি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিয়োগের আগেই উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে ফোন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য বলেন। পরবর্তীতে নিয়োগ হয়ে গেলে তিনি ফোন করে আমাকে নিয়োগ প্রাপ্তদের তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু কর্মচারীরা না যাওয়ায় তিনি আমাকে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে আমি তার বাসভবনে যাই। সেখানে আমাকে গালিগালাজ করা হয়। পরে ক্যাডারদের দিয়ে দেড় ঘন্টা ধরে নির্যাতন করা হয়।”

এ ঘটনায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবিব বলেন, “প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনকে দেড় ঘন্টা ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্যাতন চালিয়েছেন। ঘটনাটি আমি প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নির্যাতনের শিকার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, “আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছি। শিক্ষকতা জীবনে আমি কোনো অন্যায় করিনি। নিষ্ঠার সঙ্গে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। আর এই বয়সে এসে আমি একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন নির্যাতনের শিকার হবো, তা কখনো কল্পনাও করিনি। আমার বিচার চাওয়ার ভাষা নেই। হত্যার হুমকির হুলিয়া নিয়ে দিন পার করছি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কারও কাছে বিচার চাইতেও পারছি না। আমি প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে ন্যায় বিচার কামনা করছি।”

অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন করেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরো সংবাদ