আজ - বুধবার, ৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১১:৫২

যশোর ডিসি অফিস চত্ত্বর – দেখার কেউ নেই।

  • সামনের অংশ ঝকঝকে হলেও ময়লার ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে পূর্ব পার্শ্ব
  • দীর্ঘদিনের জঞ্জাল হলেও দেখার কেউ নেই।
  • মূত্রত্যাগ ,ময়লা ফেলার কারনে দিনে দিনে অঘোষিত ময়লা খানা ও দূর্গন্ধযুক্ত স্থানে রূপনিচ্ছে স্থানটি।
  • আইনের সীমাবদ্ধতা কোথায়?

মুনতাসির মামুন, জেষ্ঠ প্রতিবেদক: যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখা ভবনের সামনে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে জরাজীর্ণ যানবাহন। ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে স্থানটি। জায়গাটির সৌন্দর্য ধরে রাখার অভিপ্রায় জেলা প্রশাসক মহোদয় নিজেও ব্যক্ত করেছেন। স্থাপন করেছেন একটি নোটিশ বোর্ডও ।


নোটিশ বোর্ড

নোটিশ বোর্ডে লেখা আছে ‘এখানে ময়লা ফেলা ও প্রস্রাব করা সম্পূর্ণ নিষেধ। আদেশ অমান্যকারীদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদেশক্রমে জেলা প্রশাসক যশোর।;

কে শোনে কার কথা? ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে খোঁদ নোটিশ বোর্ড সম্বলিত স্থানটিই। অনেকটা আইনের চোখে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিরত্ব দেখানোর মত করেই চলছে ময়লা ফেলার কাজ, মূত্রত্যাগ তো পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই বোঝা যায়। বাংলাদেশের সর্ব প্রথম স্বাধীন জেলা যশোর সদরের চিত্তাকর্ষক স্থাপনার মধ্যে ডিসি অফিস ভবনটি অন্যতম। আইনের সীমাবদ্ধতা নাকি অবহেলায় বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে সে ঐতিহ্য?

যশোর কালেক্টরেট ভবন। বর্তমানে ডিসি অফিস যশোর, যেখানে রোজ অফিস করেন মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় । এই ভবনটির রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস ঐতিহ্য

কালেক্টরেট ভবন যশোর

অবিভক্ত বাংলায় যশোরকে জেলা ঘোষণা করা হয় ১৭৮১ সালে। যশোরের আওতায় ছিল আজকের বিভাগীয় শহর খুলনা (যা তথন ছিল খুলনা মহাকুমা)। এছাড়া ফরিদপুর, পাবনা, নদীয়া ও চব্বিশ পরগনা জেলার বেশিরভাগ এলাকা ছিল যশোরের সঙ্গে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজস্ব সংগ্রহের জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের দিকে গুরুত্ব দেয়। ১৭৮৬ সালের ৪ঠা এপ্রিল প্রথম কালেক্টর মি. টিলম্যান হেঙ্কেলের হাতে যশোর কালেক্টরেটের যাত্রা শুরু হয়। সেইসময় মুড়লির একটি পুরাতন কুঠিবাড়িতে তিনি তাঁর কার্যক্রম শুরু করেন। ১৭৯৩ সালে মুড়লি থেকে কসবায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় সরিয়ে আনা হয়। ১৮০১ সালে যশোর জেলার প্রথম কালেক্টরেট ভবন বর্তমানের স্থানে গড়ে তোলা হয়। ১৮৮৫ সালে বর্তমান ভবনটির একতালা নির্মাণ করা হয়। ৩৬০ দরজার এই ভবন ছিল তৎকালীন বাংলার দীর্ঘতম ভবন।


গাড়ির স্তুপ, জঞ্জাল

ঐতিহ্যবাহী কালেক্টরেট ভবনের পূর্বপার্শ্ব দিয়ে ঢুকতে অকেজো গাড়ির স্তুপ, জঞ্জাল ও আবর্জনার বিরূপ প্রভাবে ঐহিত্য হারাতে বসেছে ভবনটি। দূর্গন্ধে দর্শনার্থী বা পথচারীদের নাভিশ্বাষ উঠে যায়। এদিকে দখল দারেরা তাঁর পাশে অবৈধ ভাবে টং দোকান স্থাপন করে যশোর কালেক্টরেট চত্ত্বরেরে পূর্বপার্শ্বটি ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে অপরিচিত করে তুলেছে।

পূর্ব পাশে অনেক জায়গা জুড়ে বিভিন্ন মামলায় বিচারাধীন পুরানো গাড়ি রাখায় ভবনের সুন্দর্য বিলীন হচ্ছে। এসব গাড়িগুলোর পাশে সাধারণ পথচারীরা প্রস্বাবখানা ও ময়লা আর্বজনার স্তুপে পরিণত করেছে। কয়েক যুগ ধরে গাড়িগুলো এভাবে থাকায় মূলত এখানে ডাস্টবিন তৈরী হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা এসব প্রাইভেট কার, মোটরযান ও মোটরসাইকেল শুধু ভবনের সৌন্দর্য নষ্ট করছে না আশেপাশের পরিবেশকে নষ্ট করছে। এখানে থেকে উৎপত্তি হচ্ছে মশা-মাছি সহ বিভিন্ন পোকামাকড়। প্রথম কেউ দেখলে মনে করত এটা ময়লার ভাগাড়। নতুন প্রজন্মের কাছে ভবনের অবস্থা দেখে ঐতিহ্য ও ইতিহাসের প্রতি দিন দিন আকর্ষণ হ্রাস পাচ্ছে।


অবৈধ ভাবে টং দোকান

যশোরের ইতিহাস ঐতিহ্যসমৃদ্ধ এই ভবনটির পূর্বপার্শ্বের গাড়ির স্তুপ, জঞ্জাল, অবৈধ দখলদার ও আবর্জনার প্রভাবমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যশোরবাসী।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত