যশোর পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মারামারিতে তিন বন্দি কিশোর আহত হয়েছে। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। গুরুত্বর অবস্থায় আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলার মরিচাল গ্রামের ছওয়াব হোসেনের ছেলে হুসাইন (১৭), বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দির লাভলু হোসেনের ছেলে লিমন হোসেন (১৮) এবং ফরিদপুর জেলার নগরকান্দার ইকরাম হোসেনের ছেলে ইমারত শেখ (১৮)।
আহতদের এর মধ্যে হুসাইন হত্যা মামলা, লিমন চুরি ও ইমারত শেখ অপহরণ মামলার অপরাধে আদালতের মাধ্যমে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি রয়েছেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহম্মেদ তারেক শামস জানিয়েছেন, আহত তিন কিশোর শঙ্কামুক্ত।
জানা যায়, যশোর শিশু শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ভিতর বন্দি তপু ও পাভেলের বাহিনী রয়েছে। তারা কেন্দ্রর ভিতর দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তাদের কেউ কোনো কথা না শুনলে নির্যাতন করে।
রোববার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ তারা হুসাইন নামে এক বন্দিকে মারধর করে। তার পর হুসাইন কেন্দ্রর উপ-পরিচালক জাকির হোসেনের কাছে অভিযোগ দেয়। সোমবার দুপুরে হুসাইনকে পাভেল ও তপু বাহিনী দেখে হাতুড়ি-রড় দিয়ে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে লিমন ও ইমারত হুসাইনকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও রড় ও হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
আহতরা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের আনসার সদস্যদের সামনেই তাদের মেরেছে। কিন্তু তারা আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। গেল বছরের যে বন্দি তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করে সেই ঘটনায় এই পাভেল ও তপু বাহিনীর যুক্ত ছিল।
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন বন্দিকে গুরুত্বর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কি নিয়ে বন্দিরা মারামারি করেছে সেটা জানতে পারেনি। এই ঘটনায় কারা জড়িত সেটা তদন্ত চলছে।
উল্লেখ, ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন বন্দি কিশোরের হত্যা ও ১৫ জনের আহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছিল। একাধিক বার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে কেন্দ্রে বার বার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।