আবুল বারাকাত : যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানকে যোগ্য সমাজসেবক হিসেবে স্বর্ণপদক সম্মাননা স্মারক প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বিইউপিএফ)।
কোভিড -১৯ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ এবং লকডাউনে থাকা মানুষের পাশে থেকে মরণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবেলার স্বীকৃতিস্বরুপ তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননা স্মারকে আনিছুর রহমানকে যোগ্য সমাজসেবক হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বিইউপিএফ)।
এবছরের ১৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের আওত্তাধীন ১৯ টি গ্রামের ৮ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেছেন চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ার আগ মুহুর্ত থেকেই নিজে হ্যান্ড মাইক নিয়ে বেরিয়ে করোনার ভয়াবহতা বিষয়ক সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চালিয়েছিলেন এই তরুন চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান। প্রথমত তিনি ইউনিয়নের ভ্যান,রিকশা,নসিমন চালক সহ বিভিন্ন পরিবহন চালকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও করোনা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এরপরে লকডাউনে বন্ধ থাকা চায়ের দোকানী সহ স্থানীয় কাঠ মিস্ত্রি, রং মিস্ত্রি, শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা পৌছে দিয়েছেন তিনি। লকডাউনের সময় সীমিত পরিসরে চলা সাইকেল, মোটর সাইকেল, ভ্যান, নসিমনে জীবানু নাশক স্প্রে করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভুমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে বিদেশ ফেরত বা অন্য জেলা বা শহর থেকে আসা লকডাউনে থাকা পরিবারের প্রতি সার্বিক সহযোগিতা আলোচনায় এনেছে দেয়াড়া মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানকে। করোনাকালীন সময়ে ঈমাম ও মুয়াজ্জিমদের মাঝে নগদ অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা পৌছে দিয়েছিলেন তিনি।
দেয়াড়া ইউনিয়নে লকডাউনে থাকা একটি পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতে করোনা পরিস্থিতির নিয়মিত খোজ খবর রেখেছেন। একই পরিবার বা ব্যাক্তিকে সর্বোচ্চ তিন থেকে চার বার ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন তিনি। লকডাউনে থাকা পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সাথে তিনি মুঠোফোনের মাধ্যমে একাধিক বার যোগাযোগ রেখেছেন এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি করোনা সুরক্ষার যাবতীয় উপকরণ প্রদান করেছেন।
দেয়াড়া ইউনিয়নের একজন সিনিয়র আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, “আনিছ স্বর্ণপদক পাওয়ার উপযুক্ত। বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বিইউপিএফ) কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আনিছের মত একজন সৎ, যোগ্য চেয়ারম্যান পেয়ে আমরা গর্বিত। এই স্বর্ণপদক আমাদের ইউনিয়নের জন্য গর্বের।
এ বিষয়ে আনিছুর রহমান বলেন, লকডাউনের সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাতের অন্ধকারে আট হাজার পরিবারের মধ্যে দু’ থেকে চারবার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া তাদের মধ্যে করোনা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পাউডার বিতরণ করা হয়। দোকানিদের খাদ্য সামগ্রী দিয়ে ৬৩ আনসার সদস্য পুরো ইউনিয়নের বিভিন্ন মোড়ে লকডাউন সফল করতে দিনরাত পরিশ্রম করে। এমনকি তিনি নিজেও করোনার মধ্যে মানুষের পাশে থাকতে ১১ দিন ইউপি পরিষদেই রাত কাটিয়েছেন। যার ফলে দেয়াড়া ইউনিয়নে সাতজনের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। এ কাজে ১২ জন ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ এলাকার তরুন ছেলেরা তাকে সহায়তা করে। স্বর্ণপদক ও সম্মাননা স্মারক অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান।