রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে গিয়ে গণপিটুনিতে হত্যার শিকার তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারকে কেন ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না জানতে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এর আগে সোমবার হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনুসহ সারা দেশে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের রক্ষা করতে না পারাকে কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা বলে ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
২৬ জুলাই রেনুর পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়েছিল।
রিটে তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেনুর পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, তথ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও বাড্ডা থানার ওসিকে রিটে বিবাদী করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জুলাই সকালে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন তাসলিমা বেগম। তার দুই সন্তানের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে স্কুলের গেটে কয়েকজন নারী তাসলিমার নাম-পরিচয় জানতে চান। পরে লোকজন তাসলিমাকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বাইরে কয়েকশ লোক একত্র হয়ে তাসলিমাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের করে নিয়ে যায়।
স্কুলের ফাঁকা জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট করে গুরুতর জখম করে। পরে উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তাসলিমার বোনের ছেলে সৈয়দ নাসিরউদ্দিন বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা চারশ থেকে পাঁচশ মানুষকে আসামি করে মামলা করেন।
নিহত তাসলিমার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। মহাখালীতে চার বছরের মেয়ে তুবা ও মাকে নিয়ে থাকতেন তাসলিমা। দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাহসিন নামে ১১ বছরের এক ছেলেও আছে নিহত তাসলিমার।