আজ - সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - বিকাল ৩:২৮

সাংগঠনিক রদবদল কংগ্রেসকে ঢেলে সাজালেন সোনিয়া গান্ধী

সংগঠনকে ঢেলে সাজালেন কংগ্রেসের অন্তবর্তকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বদল করা হয়েছে দলের নীতি নির্ধারক কমিটি অর্থাৎ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিকে। তেমনি বদল ঘটানো হয়েছে ‘অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি’ (এআইসিসি)’এর কয়েকটি সাধারণ সম্পাদক পদেও। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গসহ একাধিক রাজ্যে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বদল করা হয়েছে।

গত মাসেই নেতৃত্ব বদল চেয়ে সোনিয়াকে চিঠি লেখেন ২৩ জন বিক্ষুব্ধ নেতা। এরপরই সংগঠনে এই রদবদল সোনিয়ার। এই বিক্ষুব্ধদের অনেকে যেমন বাদ পড়েছেন তেমনি কেউ কেউ নতুন সংগঠনে বড় দায়িত্বও পেয়েছেন। শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই দলে আমূল পরিবর্তন আনে দলনেত্রী সোনিয়া।

দলের সংগঠনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হল সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সিনিয়র নেতা ও রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেতা গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ গুলাম নবি আজাদ-কে সরিয়ে দেওয়া। হরিয়ানায় দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকেও আজাদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিবেক বনসালকে। গুলাম নবি আজাদের মতোই দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মোতিলাল ভোরা, অম্বিকা সোনি ও মল্লিকার্জন খাড়গে, লুইজিনো ফালেরিও’এর মতো সিনিয়র নেতাদের।

পরিবর্তে সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মুকুল ওয়াসনিক, হরিশ রাওয়াত, ওমান চন্ডী, তারিক আনোয়ার, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, জিতেন্দ্র সিং, কে.সি.বেণুগোপাল এবং অজয় মাকেন-কে। ওয়ার্কিং কমিটিতেও বদল আনা হয়েছে। সেখানে ২২ জন স্থান পেয়েছেন। সোনিয়া গান্ধী ছাড়াও সেখানে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, রাহুল গান্ধী, এ.কে.অ্যান্টনি, আহমেদ প্যাটেল, অম্বিকা সোনি, গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, হরিশ রাওয়াত, কে.সি.বেণুগোপাল, মল্লিাকার্জুন খাড়গে, মুকুল ওয়াসনিক, ওমান চন্ডী, অজয় মাকেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, পি চিদাম্বরম, জিতেন্দ্র সিং, তারিক আনোয়ার, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, গৈখাঙ্গাম, রঘুবীর সিং মীনা এবং তরুণ গগৈ।

এদিন ছয় সদস্যের এক বিশেষ কমিটিও তৈরী করেন সোনিয়া। যাদের কাজ হবে সোনিয়াকে সংগঠনের কাজে সহায়তা করা। সেখানে স্থান পেয়েছে বিদ্রোহীদের অন্যতম নেতা মুকুল ওয়াসনিক। এছাড়াও ওই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন গান্ধী পরিবারের পাঁচ অনুগত- এ.কে.অ্যান্টনি, আহমেদ প্যাটেল, অম্বিকা সোনি, কে.সি.বেণুগোপাল ও রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা।

নেতৃত্ব বদল চেয়ে সোনিয়াকে চিঠি লিখেও দলে পদোন্নতি হয়েছে অন্যতম বিদ্রোহী নেতা জিতিন প্রসাদ’এর। তাকে দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামান ও নিকোবর আইল্যান্ডের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব।  তেলেঙ্গানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাহুলের অনুগত মনিক্কাম টেগোরকে। ঠিক তেমনি পাঞ্জাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হরিশ রাওয়াত, কেরালা ও লাক্ষাদ্বীপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারিক আনোয়ার, আসামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জিতেন্দ্র সিং’কে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের দায়িত্ব পেয়েছেন ওমান চন্ডী। গোটা উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সোনিয়া কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে।

সোনিয়া সংগঠনে যে পরিবর্তন করলেন তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে যাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই হয় রাহুল অথবা গান্ধী পরিবারের অনুগত। সেক্ষেত্রে অনেকেরই অভিমত দলের আসন্ন অধিবেশনে দলের দলের পূর্ণ সভাপতির পদে রাহুলের পথ পরিষ্কার করতেই সংগঠনে এই রদবদল।

আরো সংবাদ