স্টাফ রিপোর্টার।। বাবার মৃত্যুর পর মা ছিল দুই ভাইয়ের শেষ আশ্রয়স্থল। সেই মা আজ সড়ক দুর্ঘটনায় পরপারে চলে গেছে।
মায়ের লাশ যখন হাসপাতালের মর্গে তখন ওবায়েদ আলী হৃদয় পরীক্ষার হলে। পরীক্ষা শেষে মর্গে মায়ের লাশ দেখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। তার আহাজারিতে হাসপাতাল চত্বরে উপস্থিত স্বজন, বন্ধুরাও অশ্রুসিক্ত হন। হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
রোববার সকালে যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের শানতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন মা তানিয়া খাতুন (৪২)।
তিনি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রামের বাসিন্দা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ব্র্যাকের চুড়ামনকাটি শাখার হিসাব রক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ওই দুর্ঘটনায় যশোর সদর উপজেলার দৌলতদিহি গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে ফার্নিচার ব্যবসায়ী হাসান (৩২) নিহত হন।
রোববার দুপুরে এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষে যশোর জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে এসে মায়ের জন্য বুকফাটা আহাজারিতে ভেঙে পড়ে ওবায়েদ আলী হৃদয়। সে এবার যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তার বড় ভাই জোবায়েদ আলী জীবন ঢাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
হাসপাতাল চত্বরে আহাজারিতে ওবায়েদ আলী হৃদয় বলে, ‘বাবার পরে মা-ও চলে গেল। আমি এখন কার কাছে থাকব, কি নিয়ে বাঁচব?’ তার আহাজারিতে হাসপাতাল চত্বরে উপস্থিত সবাই অশ্রুসিক্ত হন।
ব্র্যাক যশোরের জেলা প্রতিনিধি অমরেশ চন্দ্র দাস জানান, তানিয়ার স্বামী ওয়াজেদ আলীও ব্র্যাকে চাকরি করতেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তিনি প্যারালাইজড হয়ে যান। পরে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবারটির অবস্থা বিবেচনায় মানবিক কারণে তানিয়া খাতুনকে ২০১১ সালে ব্র্যাকে চাকরি দেয়া হয়। চাকরি করে তিনিই তার দুই সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করছিলেন।
তিনি বলেন, তানিয়া খাতুনের বড় ছেলে জোবায়েদ আলী জীবন ঢাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ছোট ছেলে ওবায়েদ আলী হৃদয় এবার যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। রোববার পরীক্ষা দিয়ে দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে মায়ের মৃত্যুর খবর জানতে পারে। এ সময় হাসপাতালে এসে হৃদয় কান্নায় ভেঙে পড়ে সে।