নিজেস্ব সংবাদদাতা: যশোর – ৩ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটো আর নেই। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছেন চাচাতো ভাই যশোর কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক হোসেন শিম্বা।
শিম্বা সাংবাদিকদের জানান, খালেদুর রহমান টিটো শনিবার রাতে মারা যান। কিন্ত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেন রোববার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, “পরিবারের পক্ষ থেকে মরদেহ আনার জন্য সিএমএইচ এ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পরিবারের সদস্যরা গেছেন। মরদেহ আসার পর পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের সাথে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
এর আগে খালেদুর রহমান টিটো আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর বাড়িতে ফিরে আসেন, পরে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ভারতে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে কিছুদিন বাড়িতে ছিলেন। সেখানে গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অসুস্থ হলে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ওই সময়ই যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচএ) এ স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষিয়ান এ রাজনীতিক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর। ২০০৭ সালে স্ত্রী রওশন মারা যান। খালেদুর রহমান টিটো তিন ছেলে সন্তানের জনক।
খালেদুর রহমান টিটো জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে যশোর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। সে মেয়াদে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলেও কাজ করেছেন। তিনি ২০০০ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল উপহার দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এদিকে, খালেদুর রহমান টিটোর মৃত্যুর খবরটি দ্রুত যশোরে ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বত্র এ নিয়ে রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক অনুসারী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ-সবার চোখেই পানি গড়িয়ে পড়ে। যে যার মতো করে খবরটি অন্যকে দেয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে ফোন করে নিজের মতো করে দুঃসংবাদটি জানার চেষ্টা করেছেন। তাঁর শহরের ভোলা ট্যাংক রোড়ের বাড়িতে ছুটতে শুরু করেন রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ।
সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটোর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রাজশাহী বিভাগের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ খুলনা বিভাগের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবু মোহিত কুমার নাথ,যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শাহারুল ইসলাম। একই সঙ্গে তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।