ডেস্ক রিপোর্ট : ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়া প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা পদত্যাগ করেছেন। ব্যাপক আলোচনার মধ্যে বঙ্গভবনের পক্ষ থেকে শনিবার দুপুরে বিচারপতি সিনহার পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা জানানো হয়।
এর আগে শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, বিচারপতি সিনহার কোনো পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছায়নি।
একই সময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরেক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি বিচারপতি সিনহার পদত্যাগের বিষয়ে কিছু জানেন না। দুপুর ১টায় রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, “উনার পদত্যাগপত্র আজই বঙ্গভবনে এসেছে।”
বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের ঘটনা এটাই প্রথম।
ষোড়শ সংশোধনের বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত ৩ অক্টোবর ছুটি নিয়ে ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় যান বিচারপতি সিনহা। সেখানে তার মেয়ে থাকে। পরে তার স্ত্রীও ঢাকা থেকে অস্ট্রেলিয়া যান।
প্রায় এক মাস অস্ট্রেলিয়ায় বড় মেয়ের কাছে কাটিয়ে বিচারপতি সিনহা সিঙ্গাপুর হয়ে কানাডায় ছোট মেয়ের কাছে রওনা হন শুক্রবার।
তার আগে তিনি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠান।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি সিনহার চাকরির মেয়াদ ছিল আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বিচারপতি সিনহা ছুটিতে যাওয়ার পর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধান বিচারপতি দায়িত্বে ফেরা না পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী বিচারপতি ওয়াহহাব মিয়াই ওই দায়িত্ব পালন করে যাবেন বলে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন।
বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ ওঠার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ওই সব অভিযোগের ‘গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা’ তিনি না দিতে পারায় সহকর্মীরা তার সঙ্গে এজলাসে বসতে নারাজ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলে আসছিলেন, সহকর্মীরা বসতে না চাওয়ায় এস কে সিনহার প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ফেরা ‘সুদূর পরাহত’।