আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১:৩০

স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় গৃহবধূকে মেরে হাসপাতালে পাঠালো স্বামী।

  1. স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় গৃহবধূকে মেরে হাসপাতালে পাঠালো স্বামী।

স্বামীর পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় এবং যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন খাদিজা খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূ। আহত অবস্থায় শশুর বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবারের সদস্যরা। শনিবার (১জুলাই) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

খাদিজা খাতুন সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হামিদপুর চাঁদপাড়া গ্রামের তানজীর মাবিয়া পলাশের স্ত্রী ও একই গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে। এদিকে এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই গৃহবধু রোববার স্বামীসহ তার শশুরবাড়ির পাঁচ জনকে বিবাদী করে কোতোয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, পারিবারিকভাবে ২০১৫ সালে পলাশের সাথে খাদিজার বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটা ৩ বছর ৪ মাস বয়সের কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামীর বিভিন্ন মহিলাদের সাথে পরকীয়ার বিষয়টি টেরপেয়ে খাদিজা প্রতিবাদ করলে একাধিকবার স্বামীসহ, নন্দায় মাসুদ, ননদ মুক্তা ও শাশুরি তাহিদা হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি।

সংসারে নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন করত স্বামী, ননদ, নন্দায় ও শশুড়ি। তাছাড়া সে পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে স্ত্রী ও সন্তানের ঠিকমতো ভরন পোষন না দিয়ে উল্টো স্ত্রীকে বেধরক মারধর করত।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত খাদিজা খাতুন বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী পলাশ অনেক মহিলাদের সাথে পরকিয়ায় আসক্ত ছিলো। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকে রড, বেল্ট দিয়ে মারধর নির্যাতন করত। যৌতুকের দাবি করেও আমার নির্যাতন করত আমার শশুরবাড়ীর লোকেরা। ঈদের দিন বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) আমি জানতে পারি আমার স্বামী প্রিয়া নামে একটি মেয়েকে নিয়ে আমার ননদ মুক্তার বাড়ি অবস্থান করছে। খবর শুনেই আমি আমার ননদ মুক্তার বাড়িতে গিয়ে ঘরে ঢুকেই দেখি অন্য একজন  মেয়েসহ পলাশ এক বিছানায় শুয়ে আছে। আমি কিছু জিঙ্গাসা করতে যাওয়ার আগেই আমাকে আমার স্বামী, ননদ, ও নন্দায় মারধর করে ঘরে আটকে রাখে।

নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ আরো বলেন, সবশেষে আমাকে মেরে ফেলার উদ্দ্যেশে শনিবার (১জুলাই) আমাকে বাড়ি থেকে অন্য জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যেতে চায়। বিষয়টি আমি বুঝতে পেরে না যেতে চাওয়া আমাকে বেধড়ক চড়-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করে আহত অবস্থায় ফেলে রাখলে আমার বাবার বাড়ির লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

খাদিজার পিতা সাইদুল ইসলাম বলেন, অনেক সহ্য করেছি। জামাইকে অনেক বুঝিয়েছি। তাতেও কোন কাজ হয়নি। অবৈধ সম্পর্কের বিষয় জেনে যাওয়ায় আমার মেয়েকে প্রতিদিন নির্মমভাবে নির্যাতন করে জামাই। একাধিক মীমাংসা করেও কাজ হয়নি। আমি এবার আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার মেয়ের নির্যাতনকারীদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, আমি ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল, যেতে পারিনি। দোষীদের বিচার হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত