৫২ বছর ধরে অভিনয় করছেন বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। যে কোনো অভিনেতার জন্যই এ এক দারুণ দৃষ্টান্ত ও প্রাপ্তি। তাই উদযাপন তো হওয়া চাই! কিন্তু তাতে বাদ সেধেছে করোনা মহামারি। তাই আপাতত নেটমাধ্যমেই সোনালি স্মৃতি রোমন্থন করে ভক্তদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন তিনি।
অমিতাভকে বলা হয় বলিউডে প্রথম ‘রাগী যুবক’। তিনিই এ ইমেজ প্রথম চলচ্চিত্রের পর্দায় তৈরি করেছিলেন। যদিও সেই তকমা কিংবদন্তি অভিনেতা সরিয়ে নিয়েছেন অনেক দিন। প্রতিটি ছবিতে ক্রমাগত নিজেকে ভাঙছেন তিনি। নানা স্বাদের চরিত্রে নতুনভাবে মেলে ধরছেন নিজেকে।
তাঁর এই রূপ বদল দর্শকেরা গ্রহণ করেছেন অনায়াসে। কিসের জোরে ৭৮ বছরেও বলিউডের ‘শাহেনশা’ তিনি? তারই ছোট্ট বিশ্লেষণ নেটমাধ্যমে তুলে ধরলেন বিগ বি নিজেই।
অমিতাভ ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন একটি ছবি। তার ক্যাপশনে লিখেছেন অনেক কথা, ‘১৯৬৯ থেকে ২০২১-৫২ বছর একই জায়গায় কাটিয়ে দেওয়া মুখের কথা নয়! সবটাই সম্ভব হয়েছে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের জন্য।’
সেই পোস্টে বিগ বি-কে শুভেচ্ছা জানাতে জড়ো হয়েছেন ৫ লক্ষেরও বেশি অনুরাগী। সেখানে রয়েছেন শিল্পা শেঠির মতো তারকারাও। তার মন্তব্য, ‘আপনার মতো অভিনেতা বলিউডে দ্বিতীয় আর কেউ নেই। আপনিই প্রথম আপনিই শেষ’।
মন্তব্যের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন অমিতাভ অভিনীত নানা চরিত্রের ছবির কোলাজ। ‘আনন্দ’, ‘জঞ্জির’, ‘শোলে’, ‘সিলসিলা’, ‘ত্রিশূল’, ‘শক্তি’, ‘শাহেনশা’, ‘সূর্যবংশী’, ‘বাগবান’ হয়ে সাম্প্রতিক ‘গুলাবো সিতাবোঁ’- প্রায় সব সিনেমার ছবিই সেই কোলাজে জায়গা করে নিয়েছে। দেখা গেছে, ‘বুডঢা হোগা তেরা বাপ’ ছবিতে অভিনীত চরিত্রও।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তি ১৯৪২ সালের ১১ই অক্টোবর উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের এক হিন্দু-শিখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হরি বংশ রাই বচ্চন একজন নামকরা হিন্দি কবি ছিলেন। তার মা তেজি বচ্চন ফৈসলাবাদের এক শিখ-পাঞ্জাবী ছিলেন।
মাত্র বিশ বছর বয়সে অভিনেতা হওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতার ব্ল্যাকার এন্ড কোং নামক জাহাজ কোম্পানির কাজে ইস্তফা দিয়ে মুম্বাই আসেন। অনেক পথ পেরিয়ে ১৯৬৯ সালে মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ সিনেমায় ধারা বর্ণনাকারী হিসেবে কাজ করেন। এরপর একই বছর ‘সাত হিন্দুস্তানি’ নামক একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। যদিও ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি, তবুও অমিতাভ এই ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেতা হিসেবে তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।