আজ - রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - দুপুর ২:৩৪

অভয়নগরে নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙ্গে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ‘বিশেষ এলাকার উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গৃহহীনদের জন্য নির্মিত বসতঘর ভেঙ্গে পড়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের ঋষিপাড়ার গোপাল দাসের বরাদ্দ দেয়া ঘরটি ভেঙ্গে পড়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ভিত ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে ওই বসতঘরটি। ঘর বরাদ্দের জন্য অনৈতিক সুবিধা নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণঘরে বসবাস করতে অনিহা প্রকাশ করেছেন উপকারভোগী। তবে পুনঃনির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গোপাল দাসের নিজ জমিতে ভিত না করে মাটির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে বসতঘর। নিম্নমানের ইট দিয়ে গাঁথা হয়েছে দেওয়াল। ধুলাবালির সাথে মেশানো হয়েছে নিম্নমানের সিমেন্ট। ঘরের মাঝের দেওয়ালসহ বারান্দার সম্পূর্ণ অংশ ভেঙ্গে পড়েছে।

এসময় উপস্থিত উপকারভোগী গোপাল দাস জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি (২০২১) তারিখ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মিস্ত্রিরা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শুরু থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা দাবি করে রাজমিস্ত্রি নয়ন। টাকা দিতে না চাইলে ইউএনওকে বলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার হুমকিও দেন। এমনকি লাল তালিকায় নাম দিয়ে বরাদ্দ বাতিলের ভয় দেখানো হয়। ভয় ও আতঙ্কে নয়ন মিস্ত্রিকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা নগদ দিতে হয়েছে। ইটের খোয়া, সিমেন্ট ও রড কিনতে দিতে হয়েছে আরো ১০ হাজার টাকা।

তিনি আরো জানান, এই টাকা দিতে বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছি। চোখের সামনে নির্মাণাধীন ঘর ভেঙ্গে পড়ায় চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে পরিবার নিয়ে কিভাবে বসবাস করব এমন প্রশ্ন করেন তিনি ? এসব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও রাজমিস্ত্রি নয়নের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অন্যত্রে বদলী হয়ে যাওয়া ইউএনও নাজমুল হুসেইন খান ও তার সহযোগী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মোঃ রুবেলের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বসতঘর ভেঙ্গে পড়ছে। এসব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ।

এ ব্যাপারে চলিশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাদির মোল্যা মুঠোফোনে জানান, এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। নবাগত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রিজিবুল ইসলাম জানান, যেসব বসতঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে সেইসব ঘরের কাজ বন্ধ করা হয়েছে। পুনঃরায় নির্মাণ করা হবে।

নবাগত ইউএনও মোঃ আমিনুর রহমান জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। বসতঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে ১১টি ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। এগুলো পুনঃনির্মাণ করা হবে।

আরো সংবাদ