**সোস্যাল যোগাযোগ মাধ্যমে পরস্পর বিরোধী মন্তব্য।
** ফের সংঘাতের আশংকা।
** ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন।
যশোর প্রতিনিধি: গেল ৫ সেপটেম্বর যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে মেয়ে ঘটতি ব্যাপার নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ছাত্রলীগ সভপতি ও সাধারন সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে। এ ঘটনায় রক্তাক্ত জখম হয় পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ছাত্রলীগ সভপতি শাহেদ হোসেন পলাশ সহ তার ৬/৭ সমর্থক। সাধারন সম্পাদক গ্রুপের একজন এবং বহিরাগত একজন সহ দুজন আহত হয়।
ছাত্রলীগ সভপতি শাহেদ হোসেন পলাশ বলেন জানালার গ্লাস ভেঙ্গে আমাদের উপর হামলা চালাতে গেলে ভাঙ্গা গ্লাসে তাদের ২ জনের হাত কেটে যায়।
সাধারন সম্পাদক ইমরান শিকদার বলেন সভপতি গ্রুপের ছেলেরা মেয়েদের ইভটিজিং করছিলো প্রতিবাদ করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে।
ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন ঘটনাটি নেক্কারজনক, ওরা ( সভাপতি গ্রুপ ) হটাৎ দৌড়ে এসে আমার রুমে প্রবেশ করে জানালা দরজা বন্ধ করে দিয়ে বলে আমাদের বাঁচান স্যার। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাইরে থেকে আমার রুমের জানালার গ্লাস ভাঙ্গা শুর করে এবং দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। আমি তাৎক্ষনত বিষয়টি পুলিশ কে অবহিত করি। পুলিশ আসার আগেই তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। তারপর পুলিশ ও শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যস্থততায় পরিবেশ শান্ত হয়।
ছাত্রলীগ সভাপতি পলাশ জানান, বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ক্যাম্পাসের ভেতরে শহীদ মিনারের উপরে বসে বহিরাগত জনৈক কালা আরিফ ৫-৭ জনকে নিয়ে সিগারেট খাচ্ছিল, নেশা করছিল। এ সময় কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তাদের বাইরে যেতে বলেন এবং ক্লাস চলাকালে ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ করেন। তখন জুয়েল,বক্কার, কালা আরিফ, মাইমুন,রাহুল, টিপু সহ কয়েকজন তার ওপরে চড়াও হয়। এরপর ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে ধাওয়া করে কালা আরিফসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের বের করে দেয়। পলাশ আরো জানান, ঘণ্টা দুয়েক পর কালা আরিফের নেতেৃত্বে ২০-৩০ জন ক্যাম্পাসে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঢুকে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় সংগঠনের সভাপতি শাহেদ আলী পলাশ, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পারভেজ, ছাত্র মঞ্জুরুল ইসলাম মুগ্ধ, মাহবুবুর রহমান জনি, মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল্লাহ, সাহেব আলী (হামলা কারী ) সহ ১২ জন কমবেশি আহত হন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে ৯ তারিখ মানববন্ধন করে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ছাত্রলীগের একাংশ। মানববন্ধনে বহিরাগত সন্ত্রাসী জুয়েল,বক্কার, কালা আরিফ, মাইমুন,রাহুল, টিপু সহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম প্রদান করা হয় এবং আটক না করা পর্যন্ত ক্লাস পরিক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ্ অনিমেশ পালের কাছে লিখিত স্মারক প্রদান করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। ঐদিন সন্ধ্যায় কোতয়ালি মডেল থানার ওসি অপূর্ব হাসানের অনুরোধে ক্লাস পরিক্ষা বর্জনের ঘোষণা প্রত্যাহারও করেন তারা।
কিন্তু স্নায়ু দ্বন্দ থামেনি- সোস্যাল যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরকে ব্যাক্তিগত আক্রমন করেই চলেছেন। বিশেষ করে সম্পাদক গ্রুপের এক্টিভিটি বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
“ক্ষমতার ব্যবহার মানেই যে সব যথাযথ ভাবে হচ্ছে তা বলা যাবেনা এবং যায়না । সুন্দর এবং ন্যায়সংগত ভাবে ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহারের মাত্রাটা অনেক বেশী।
তারই বাস্তব প্রমাণ পাওয়া গেলো তৃনমূল এক ছাত্রলীগ এর সভাপতির দ্বারা।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখা, যশোর জেলা ছাত্রলীগ এর একটি শক্তিশালী ইউনিট।
সেই কমিটির “সভাপতি” পদে আছেন “শাহেদ আলী পলাশ”।
চুয়াডাঙ্গাস্থ প্রত্যন্ত এক গ্রাম থেকে উঠে আসা এক অতি সাধারন ছেলে আজ “সভাপতি”।
স্থানীয় এক শীর্ষ সন্ত্রাসী মুমেল বাহিনীর ছত্রছায়ায় কলেজ এ সভাপতি পদে বহাল আছেন পলাশ।
কিন্তু যেই ক্ষমতা “বঙ্গবন্ধুর” আদর্শ বাস্তবায়ন এর জন্য সেই ক্ষমতা আজ ব্যবহার হচ্ছে তার নিজস্ব কুকর্ম চরিতার্থ করতে।
অতীতে একাধিকবার তার মেয়ে ঘটিত কর্মকান্ড ফাসঁ হওয়ার দরূন কলেজ প্রশাসন তাকে বহিস্কার করার পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু স্থানীয় এক নেতার হাতে পায়ে ধরে পার পেয়ে যায়। একাধিক বার তার
বিরুদ্ধে মেয়ে ঘটিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।
“কিন্তু চোরে মানে না ধর্মের কথা”।
আবারও সে কলেজ এ সুন্দরী মেয়েদের কে কামনার দৃষ্টিতে ইভটিজিং শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক,অভিবাবক কেউ প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী মুমেল বাহিনীর রোষানলে পড়তে হয়।
বিগত ০৫-০৯-১৮ তারিখে একজন মেয়ে কে ইভটিজিং করায় প্রতিবাদ করলে কলেজ ছাত্রলীগ এর সম্পাদক পক্ষের দুইজন ছাত্রলীগ কর্মী কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পলাশ ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা।
উল্লেখ্য থাকে যে, কলেজ এর মহিলা হোস্টেল এ ছাত্রীরা উঠতে পারে না সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে। কারন, সভাপতি পলাশ ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের নোংরা ও কুরুচিপূর্ণ চরিত্র।
এদের ভয়ে শিক্ষক, কর্মচারীরা আতংকে থাকে।
এদের কাছে সাধারন ছাত্রছাত্রীরা জিম্মি।
এমনকি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেয়।
এলাকার সাধারন মানুষ ও অভিবাবক গন তাদের সন্তানদের পলিটেকনিক কলেজে যেতে দিতে চায় নাহ।
“এত শক্তির উৎস কোথায় সবাই জানতে চাই।”
সভাপতি গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয় এভাবে : তোদের লজ্জা হবে কবে? মিথ্যা কারা প্রচার করে? থুথু উপরের দিকে ছুড়লে নিজের গায়ই পড়ে!! তাই মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের হিটলিষ্টে থাকা,ইমরান শিকদারকে নিয়ে কিছু না লিখে,তার আদর্শের ভাইয়ের ও ভাই এর ফ্যামিলির কিছু কীর্তি লিখলাম প্রমাণসহ!!! আর জুয়েলের বিবাহের সংখ্যা অনিদিষ্ট!!৷
এ ব্যাপারে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এমএম রবিউল ইসলাম বলেন , জুয়েল তো সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা ও মাদকের মামলা রয়েছে ওর বিরূদ্ধে । জুয়েল চায়না পলিটেকনিক ছাত্রলীগ ইউনিটটা সুসংগঠিত থাক। ছাত্রলীগ সাভাপতি পলাশের গায়ে আঘাত করা নেক্কার জনক ঘটনা। নির্বাচন সামনে এসব ঘটনা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে জুয়েলকে সংযত থাকার পরামর্শদেন রবিউল। জুয়েল আমাদের জেলা কমিটির সাংগাঠনিক সম্পাদক ছিলো রানিং কমিটিতে বহাল থাকা অবস্থাতেই অস্ত্র ও মাদক মামলায় আটকও হয়েছিলো।
পলিটেকনিক ছাত্রলীগের পরস্পর বিরোধি মন্তব্য প্রসঙ্গে রবিউল বলেন, এসব কর্মকান্ড এখনই বন্ধ না করা গেলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাঁধাতে পারে। যশোর জেলা আ’লীগ সম্পাদক ঢাকা সফরে রয়েছেন তিনি ফিরলে বিষয়টি নিয়ে বসবেন।
প্রসঙ্গত পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সভাপতি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুমেল হোসেন ও সাধারন সম্পাদক কাজী তৌহিদুর রহমান জুয়েলের অনুসারি। তবে বর্তমানে জুয়েল গ্রুপ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য বহুলালোচিত। জুয়েল গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্যরা হলো
শেখহাটি লিচুতলা এলাকার কাজী আলমগীর হোসেনের ছেলে কাজী তৌহিদুর রহমান জুয়েল, মুদি দোকানি মারুফ, শিক্ষাবোর্ড স্কুল এ্যান্ড মডেল কলেজের ছাত্র শরীফ হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি। ২০১৪ সালের ১২ই ডিসেম্বর জুয়েলের দেশী শর্টগান সহ র্যাবের হাতে আটক হয় জুয়েলের স্ত্রী সাথী ও ফুপাতো ভাই নাজমুল ইসলাম মন্জু । ২০১৬ সালের ১৮ই মে গভীর রাতে ২টি ওয়ান শুর্টার গান,২টি এয়ার গান, ও ১টি রাইফেল, ৫০০ পিচ গুলি, ২০০ পিচ ইয়াবা সহ র্যাবের হাতে আটক হয় জুয়েল ও তার দুই সহযোগী। হত্যা, অস্ত্র ও মাদক মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজন খানেক মামলা রয়েছে। বর্তমানে ইয়বা সম্রাট বনে গেছেন তিনি জমি দখলেও পিছিয়ে নেই চক্রটি। শেখহাটী কালীতলা বা তার আশে পাশের কোন জমি কেনা বা বেচতে গেলে তার মাধ্যমে বিক্রি করতে বা কিনতে হয় না হলে বড় অংকের চাঁদা দিতে হয়।
শেখহাটি জামরুল তলার আরিফ ওরফে কালা আরিফ মুদি দোকানি মারুফ, শিক্ষাবোর্ড স্কুল এ্যান্ড মডেল কলেজের ছাত্র শরীফ হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি। এছাড়া একাধিক অস্ত্র ও মাদক মামলার আসামি।
শেখহাটি তামালতলার আবুল হোসেনের ছেলে আবু বক্কার শেখহাটী হাইকোটমোড়ের মুদি দোকানিমারুফ কে গুলি বোমা ও ছুরিকাঘাত করে,হত্যা মামলার আসামি এবং ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখ তমালতলা হঠাৎপাড়ার সাগরের বাড়ি থেকে ১টি ওয়ান সুটারগান, কয়েকটি রামদা সহ র্যাবের হাতে আটক হয়। এছাড়াও ঘরে নিজ স্ত্রী সন্তান রেখে আপন ছোট ভাইয়ের সুন্দরী বউ কে ধর্ষনের পর বিয়ে করে দুই বউ নিয়ে সংসার করছেন। ছোট ভাইকে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে চুপ থাকতে বলেন তিনি।
শেখহাটী দ: পাড়ার মোবারেক হোসেনের ছেলে মাইমুন সেও মুদি দোকানি মারুফ ও তেপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় বাস্তহারালীগ নেতা মনজুর রশিদ হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি
ছোট শেখহাটির নাজির সরদারের ছেলে টিপু সরদার বেশ কয়েক বছর যাবত এলাকায় ইয়াবা ব্যাবসায়ী হিসাবে পরিচিত। টিপু অস্ত্র ও মাদক মামলার আসামি এছাড়া স্বর্নপদক প্রাপ্ত মৎস্য ব্যাবসায়ী ইউসুফ মিয়া মৎস্য লুটের একটি মামলা করেন টিপুর নামে।
যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাইমুর রহমান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন। রাজনৈতিক কারনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনকরা হয়নি। পলিটেকনিক ছাত্রলীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষ ও পরস্পর বিরোধি মন্তব্যকে ভবিষৎ অসনি সংকেত বলে মনে করেন তিনি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সত্ত্বর ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।