আজ - বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - বিকাল ৫:৫৯

আইনের উর্দ্ধে থাকা সেই শহীদের বলির পাঠা ৩! মৃত্যু শয্যায় ১।

খানজাহান আলী 24/7 নিউজ টিম : যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের এড়েন্দা গ্রামের এক ব্যক্তির টাকা আত্মসাৎ করে নানা টালবাহানা করছে সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিদুজ্জামান শহীদ ওরফে প্রতারক শহীদ ওরফে চিটার শহীদ। অনুসন্ধানে জানা যায়, এড়েন্দা গ্রামের বাসিন্দা আকরাম হোসেন (৪৮) এর ১২ (বার) লক্ষটাকা আত্মসাৎ করেছে শহীদ। মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিস ( এমইএস) ও বিমান বাহীনিতে চাকরি দেয়ার কথা বলে নগদ বার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। গেল বছরের নভেম্বরে এ ঘটনা ঘটেছে। আকরাম হোসেন জানান মাসের উপর মাস গড়িয়ে গেলেও মেলেনি চাকরি না মিলেছে টাকা। টাকা চাইতে গেলে আজ নয় কাল করে করে কালক্ষেপণই করে যাচ্ছে প্রতারক শহীদ। আকরাম হোসেন টাকা খোয়ানোর দুঃশ্চিতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরণ করে বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর দিন গুণছেন। আকরাম জানান, টাকা গুলো আমার নিজের নই, আমার ভাগ্নে মোমিনুর রহমানের কাছ থেকে আমি নিয়েছিলাম। মোমিনুরের এক ভাই ও এক ভাগ্নে মোট দুজনের চাকরির জন্য ১৫ লক্ষ টাকা চুক্তি হয় শহীদের সাথে। মোমিন টাকা গুলো আমাকে বিশ্বাস করে আমার হাতে তুলে দেয়। চাকরি হয়ে গেছে কিন্তু টাকা না পেলে অফিসার স্বাক্ষর করছেনা বলে নগদ ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে যায় শহীদ বাকী ৩ লক্ষ টাকা কিছুদিন পর দিতে বলেন। টাকা নেয়ার পর আকরামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে নানা টালবাহানা করতে থাকে শহীদ।

এভাবেই বিছানায় শুয়ে দিনাতিপাত করছেন আকরাম

সব শেষে শহীদের বাড়ীতে টাকার জন্য তাগিদ দেয়া শুরু করলে শুধু দিন ই মেলে টাকা আর মেলেনি। আত্মসম্মান ও লোকলজ্জ্বার ভয়ে দিনে দিনে অসুস্থ হয়ে শেষ পরিণতি পঙ্গুত্ব বরণ করে এখন বিছানায় শুয়ে দিনাতিপাত করছেন আকরাম। আকরামের ভাগ্নে মোমিনুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিঁনি জানান, লেনদেন বিষয়ক সব কিছুর মাধ্যম ছিলো আমার ফুফা আকরাম হোসেন। আমার ফুফা এখন মৃত্যুশয্যায়। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ই মে) আমি শহীদ কে ফোন করেছিলাম আজও তিনি পূর্বের মত করেই বলেন আগামি এক মাসের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেবে। মুমিনুল আরো জানান এই বিষয়টি নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় আমাদের দিন কাঁটছে। তবে এইবার টালবাহানা করলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


নজরুল ইসলামের ছেলে তুহিন

অন্যদিকে একই ইউনিয়নের হালসা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে তুহিন (২৭) এর বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনায়ও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ রয়েছে শহীদের বিরূদ্ধে। ১১ ই জানুয়ারি ২০১৮ তে পুলের হাটের তপসিডাঙ্গায় এক মেয়েকে বিয়ে করেন তুহিন, সাংসারিক বনিবনা না হওয়ায় তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত এ মামলায় ৩৩ দিন কারাবাসও করেন তুহিন। পরে আদালত কাবিন ও খোরপোষর এক লক্ষ দশ হাজার টাকা মেয়ে কে দিতে নির্দেশ দিলে নগদ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সময় নেন তুহিন। তুহিনের দূর সম্পর্কের আত্মীয় শহীদ নিজেকে থানা আ’লীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে মেয়েকে বাকী টাকা বুঝিয়ে দেবেন বলে তুহিনের কাছ থেকে আরোও ৮০ হাজার টাকা নেন। তুহিনের সাবেক স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি মাত্র ৪০ হাজার টাকা পেয়েছি।

নিহত দাদা রিপন

এখানেই শেষ নই সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দাদা রিপন হত্যা মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামি শাহজানের ভ্যান চালক বাবা করিমের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক শহীদ। মামলার চার্জশিট থেকে শাহজানের নাম বাদ দিয়ে দিবেন বলে এই টাকা হাতিয়ে নেন শহীদ। পরে চার্জশিটে নাম থেকেই যায় শাহজানের। তখন শাহজানের বাবা করিম সে টাকা ফেরত চাইলে তাঁর সাথে দূর্ব্যবহার করেন শহীদ। তিনি এমপি নাবিলের লোক বলে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন কারো কাছে গিয়ে কোন লাভ হবেনা। আর এভাবেই কেঁটে যাচ্ছে ভ্যানচালক করিমের ১০ টি বছর।

এ সকল ব্যাপারে অভিযুক্ত শহীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল ব্যাপার অস্বীকার করে বলেন, তাঁদের সাথে আমার কোন লেনদেন নেই। পাল্টা প্রশ্ন করলে তিঁনি
খানজাহান আলী 24/7 নিউজ টিমের সাথে অসৌজন্যমূলক আচারন করেন এবং উত্তেজনা দেখিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

আরো সংবাদ