জসিম জুয়েল: মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ফতুল্লার থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন এ বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমরাও বক্তব্যটি শুনেছি। প্রতিটি বিষয়ই আমরা তদন্ত করছি। ঘটনাটি কিভাবে আসলো? কে প্রচার করলো? পুরোটি জিনিসই আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে আমরা রিপোর্ট দিবো।’ গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে সোনারগাঁয়ের কাচপুর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে পুলিশ সুপার এসব কথা জানান। পুলিশ সুপার বলেন, এটি একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হচ্ছে। আশা করি নিরপক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। পুলিশ সুপার পরিশেষে বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থেকে থাকে, তবে অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেবো। প্রসঙ্গত, গত শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর দেওভোগ দুই নং বাবুরাইল এলাকায় জনকল্যাণ সংসদ এর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মেয়র আইভী বলেন, আমি আমার বাবার কথা বলবোই। আমি ওই ওসির বিরুদ্ধে মামলাও করবো। জামাতের এক আমিরকে নিয়ে এই শহরের নির্দেশদাতা, শহরের সবচেয়ে বড় স্টুপিড লোক যিনি শহরে অরাজকতা তৈরী করার চেষ্টা করেন, সেই ভদ্র লোকের নির্দেশে যদি একজন ওসি বলেন, আলী আহম্মদ চুনকার জামাতের সাথে সংশ্লিষ্টতা ছিল! মেয়র বলেন, আলী আহম্মদ চুনকাকে এই শহরের এমন কোন মানুষ নেই যে, না চিনত! আমার নামে বিভিন্ন কথা বলা হয় ‘বলুক’। কিন্তু আলী আহম্মদ চুনকাকে নিয়ে যখন বলে যে, তিনি রাজাকারের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তখন তো এই শহরের দুই চার, পাঁচজন মানুষের উচিৎ নয় কি এ বিষয়ে কথা বলা! এত ভয় কেন? মেয়র আক্ষেপ করে বলেন, ৪০ বছর আগে আমার বাবা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এ মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। যারা মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তাঁরা তো দেখেছে, তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। কত রক্তপাত ঠেকিয়েছেন। আজ তার বিরুদ্ধেই কথা বলা হয়! আর আমরা চুপ করে থাকি! আমার বাবা তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাকে রাজাকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়! তাহলে তো আমি মনে করি এই শহরের সকল মুক্তিযোদ্ধার রাজাকারের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর মেয়র আইভীর নাম ও তার বাবা আলী আহম্মদ চুনকাকে সংযুক্ত করে জামাতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার আমীর মঈনুদ্দিনের ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর জবানবন্দি নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়। পুলিশের হেফাজতে আসামীর দেয়া বক্তব্য কি করে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হলো, কে কোন উদ্দেশ্যে জামাত নেতার সাথে আইভীকে জড়ানোর চেষ্টা করেছেন এসবের কোনটির সদুত্তর দিতে পারেনি জবানবন্দি নেয়া ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মো.মঞ্জুর কাদের। পুুলিশের কাছে দেয়া আসামীর জবানবন্দি কি করে বাইরে সহজলভ্য হলো এমন প্রশ্নে ওসি মঞ্জুরের উত্তর, ‘এটা তো আপনারা ভালো জানেন, কি করে লিক হলো? কেমনে এডা লিক হইলো এইডা আপনারা ভালো জানেন, আমরা জানিনা। যারা জবানবন্দি নিয়ে লিক করে প্রচার করছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। এ ঘটনা আইনশৃঙ্খলবাহিনীর গোপনীয়তা রক্ষার জন্য হুমকিস্বরুপ বলে মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নে ওসি মঞ্জুর বলেন, ‘আমি কিছুই মনে করিনা। কেমনে করছে, যারা করছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন।’