ডেস্ক রিপোর্ট : নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে । জ্বর, কাশি, পেটে সমস্যা, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে চর্মরোগ ও মানসিক অবসাদে ভুগছেন করোনা রোগীরা। ভাইরাসের রুপ (স্টেন) পরিবর্তন ও রোগী ভেদে নতুন নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেছেন, দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নতুন নতুন কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। ভাইরাসের ধরন পাল্টানোর ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভাইরাসের ধরন পাল্টালে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের রোগীদের মধ্যে এরকম নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। ভাইরাসের স্টেন পাল্টালে এরকম নতুন উপসর্গের উৎপত্তি হয়। ভাইরাস স্টেন পাল্টালে সাধারণত দুই ধরনের সমস্যা তৈরি হয়।
প্রথমত, ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন স্টেন অনুযায়ী তৈরি করা হয়। তাই ভাইরাস যদি তার স্টেন পাল্টে ফেলে তাহলে ওই ভ্যাকসিনের কার্যকিরতা নষ্ট হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, ভাইরাসের একটি স্টেনে কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হলে তার শরীরে ওই স্টেনের বিপরীতে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সে ব্যক্তি ভাইরাসের ওই স্টেনে দ্বিতীয়বার আর আক্রান্ত হয় না। কিন্তু স্টেন পাল্টালে আক্রান্ত ব্যক্তির পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে স্টেন পরিবর্তনের ফলে সঠিক ভাবে ভ্যাক্সিন আবিষ্কার বিশেষজ্ঞদের জন্য চিন্তার বিষয়
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে। জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেটে সমস্যায় ভুগছেন করোনা আক্রান্তরা। তিনি আরো বলেন, দেশে অনেক করোনা রোগী ঘ্রাণ পাচ্ছেন না। কিন্তু সব রোগীর উপসর্গ এক রকম না। প্রথমদিকে করোনা আক্রান্তদের উপসর্গের মধ্যে ছিল জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট। কিছুদিন পর করোনা আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশের পেটে সমস্যা দেখা গেলেও আস্তে আস্তে করোনার কারণে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক হওয়া রোগী বেশি আসতে শুরু করল। এর পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের চর্ম রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে রোগীদের শরীরে। ইদানীং অনেক করোনা রোগীর নিউরোলজির সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে। তারা মানসিক অবসাদে ভুগছেন। করোনা নেগেটিভ হলেও মানসিক অবসাদ কাটছে না তাদের। করোনা শুধু শারীরিকভাবে নয় মানসিক ভাবেও মোকাবিলা করতে হবে। রোগীর শারীরিক অবস্থা ভেদে রোগের উপসর্গে পরির্বতন দেখা যায়। অনেকের জ্বর জ্বর থাকে, অনেকের পুরো গায়ে লাল ফোসকা দেখা যায়। সব রোগীর উপসর্গ এক রকম হয় না। অনেক রোগীর রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হয়ে থাকে এই ভাইরাসের কারনে। তিনি আরো বলেন, রোগীর শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর উপসর্গের মৃদু কিংবা তীব্রতা নির্ভর করে। অধিকাংশ রোগীর জ্বর, গলাব্যথা থাকে। ফুসফুস আক্রান্ত হলে কাশি বেশি হয়। অনেক রোগীর রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক কিংবা হার্ট অ্যাটাকও হচ্ছে। এমন অনেক রোগীও পেয়েছি যাদের পায়ের গোড়ালি লাল হয়ে ফুলে গেছে। এটাকে ‘কভিড টো’ বলা হচ্ছে। এক রোগীর পুরো শরীরে সমপরিমাণে ফোসকা পড়েছে। অনেক রোগীর পেটে দেখা দিচ্ছে সমস্যা। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।