আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:১০

আজ যশোর মুক্ত দিবস

খান জাহান আলী 24/7 নিউজ: আজ রবিবার, ৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস। গৌরবময় দিনটি পালনে সকাল থেকে যশোর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠন শহরের বকুলতলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করে।

সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে র‌্যালিটি শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে গিয়ে শেষ হয়। এরপর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেনসহ অনেকে।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর  রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দেশের প্রথম জেলা হিসেবে যশোর হানাদার মুক্ত হয়।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন

যশোরের চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজারে হানাদার বাহিনী তৈরি করে অগ্রবর্তী ঘাঁটি। এসময় যশোর সেনানিবাসের তিনদিকেই মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসে। প্রতিরোধ যুদ্ধের শেষ অভিযান চলে ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর। এসময় মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে ৫ ডিসেম্বর থেকে তারা পালাতে শুরু করে। এদিন বিকালেই পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা বুঝে যান, যশোর দুর্গ আর কোনোভাবেই রক্ষা করা সম্ভব নয়। বেনাপোল অঞ্চলে দায়িত্বরত লে. কর্নেল শামসকে নওয়াপাড়ার দিকে দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন ব্রিগেডিয়ার হায়াত। আর নিজের ব্রিগেড নিয়ে রাতের আঁধারে খুব গোপনে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনি পালিয়ে যান খুলনার দিকে। পালানোর সময় ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শহরতলীর রাজারহাটসহ বিভিন্নস্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের প্রচণ্ড লড়াই হয়। ৬ ডিসেম্বর বিকেলে মিত্রবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল বারাতের নেতৃত্বে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী সেনানিবাসে ঢুকে তা দখলে নেন।

.

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন
সংস্থাপন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘যশোর গেজেটিয়ার’-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘৬ তারিখ সন্ধ্যা হতে না হতেই পাকিস্তানি বাহিনীর সবাই যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ৮ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর ও মিত্রবাহিনীর নবম ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল দলবীর সিং যশোরে প্রবেশ করেন। তখনও তারা জানতেন না যে যশোর ক্যান্টনমেন্ট শূন্য। তারা বিস্মিত হন কোনও প্রতিরোধ না দেখে।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যশোর জেলার সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমদ বলেন, ‘৬ ডিসেম্বরেই আমরা যশোর শহর থেকে শত্রু সেনাদের বিতাড়িত করি। কিন্তু, সেদিন যশোর শহর ছিলো জনশূন্য। ফলে পরদিন ৭ ডিসেম্বর বিজয় মিছিল বের হয়।’

যশোর মুক্ত দিবস
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে ৭ ডিসেম্বরকেই যশোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হতো। কিন্তু, মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাসবিদদের দেয়া তথ্যমতে- ২০১০ সাল থেকে ৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

আরো সংবাদ