খুলনায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে দুই ডজনের বেশি নেতা-কর্মীকে। একই সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় থাকা নেতা-কর্মীদেরও বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনের প্রচারণাকে ঘিরে হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। গতকাল কয়রায় দক্ষিণ বেতকাশি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা নৌকা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার মাইক ভাঙচুর করে। এ সময় হামলায় নৌকা প্রার্থী শামসুর রহমানের আটজন সমর্থক আহত হয়। একইভাবে দীঘলিয়ার সেনহাটি ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় ৪ জন আহত হয়। তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এ ছাড়া বটিয়াঘাটার আমিরপুর ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। ১৫-২০ জন আহত হয়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে। আমিরপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল ইসলাম খান গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে প্রচারণা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান। তিনি অভিযোগ করেন, প্রচারণায় নামলে তাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকে।
জানা যায়, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপে খুলনার ৩৪টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ১১ এপ্রিল ৩৫টি ইউনিয়নে নির্বাচনের কথা ছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে ২১ জুন নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায়। পাইকগাছার হরিঢালী ইউনিয়নের এক চেয়ারম্যান প্রার্থী করোনায় মারা যাওয়ায় সেখানে নির্বাচন স্থগিতাদেশ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রথম ধাপে দিঘলিয়ার ৬টি, কয়রার ৭টি, দাকোপে ৯টি, পাইকগাছায় ৯টি ও বটিয়াঘাটায় ৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দলের বিদ্রোহীদের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী জানান, কোনো অবস্থায় নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না। যারা নৌকা চেয়ে পাননি কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাদের স্ব স্ব দলীয় পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে কেন তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করলে তাদের আগামী ৩ দিনের মধ্যে নৌকার পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তারাও সাময়িক বহিষ্কার হবেন।