আজ - বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১১:৪৯

ইনডেমনিটি বিল করে বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বিচার বন্ধকরে দেন জিয়া: নাবিল আহমেদ।

মুনতাসির মামুন: আগস্ট মাস এলেই দেশে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয় মন্তব্য করে যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী নাবিল আহমেদ যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন, যেন ষড়যন্ত্রকারীদের কূটকৌশল আর কখনোই সফল না হয়; আর যেন কোনও ১৫ আগস্ট কিংবা ২১ আগস্টের জন্ম না হয়।’

শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকালে যশোর শহরের চিত্রা মোড়ে জেলা আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত শোক সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘৫০ ও ৬০-এর দশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপসহীন নেতা; যিনি বাঙালিকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। আরাম-আয়েশ-বিলাসিতা ত্যাগ করে তিনি জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটিয়েছেন। বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন তিনি; যার জন্ম না হলে বাংলাদেশই হতো না।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জামায়াত, আল-বদর, আল-শামস আর তাদের প্রেতাত্মা—যারা কখনোই বাংলাদেশ স্বাধীন হোক চায়নি, তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল।’

যশোর সদর আসনের এমপি বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে তিনি (বঙ্গবন্ধু) যখন পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলেন; বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড় করাতে চাইছিলেন, ঠিক সেই সময় ঘাতকের বুলেট তাকে নিস্তব্ধ করে দেয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।’

জিয়াউর রহমানকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর কোনও দেশে হত্যাকাণ্ডের বিচার রহিত করতে কোনও আইন না থাকলেও তিনি ইনডেমনিটি বিল পাসের মাধ্যমে ঘাতকদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের ব্যবস্থা করেন। তিনি বাঙালির বিজয় স্লোগান—জয় বাংলা পরিবর্তন করে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রেডিও বাংলাদেশ চালু করেন।’

এমপি বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের অওতায় এনেছেন। ইতোমধ্যে ১১ জনের মধ্যে ৫ জনের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাকি ছয়জন—যারা নিজেদের চেহারা, নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে বিদেশে পালিয়ে রয়েছে, তাদের দেশে ফেরত এনে আদালতের রায় কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

যশোর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশাল সমাবেশে কাজী নাবিল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রুখতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘাতকদের সেই অভিলাষ পূরণ হয়নি। বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি নন্দিত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করেছেন। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বেই আমরা ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। ২০৪১ সালে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রকাশিত হবে।’

জননেত্রী শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন-প্রগতি-শান্তি মন্তব্য করে যশোরসহ সারাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য সবার প্রতি আহ্বানও জানান কাজী নাবিল।

শোকসভায় উপস্থিত জনতা

১৫ আগস্টের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর ও ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলার নায়কদের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান চুন্নু, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির, সদর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, কাজী আব্দুস সবুর হেলাল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী, শ্রমিক লীগের সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন, যুব মহিলা লীগের সেক্রেটারি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী, ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি সৈয়দ মেহেদি হাসান, যুবলীগ নেতা মঈনুদ্দিন মিঠু, আলাউদ্দিন মুকুল প্রমুখ। সমাবেশে জেমকন গ্রুপের পরিচালক, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের সহধর্মিণী ডা. মালিহা মান্নান আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

আরো সংবাদ