আজ - শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:০০

ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞায় ২২ দিন।

মা ইলিশ রক্ষায় দেশের সাগর ও নদীগুলোতে মাছ শিকারের ক্ষেত্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু করে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নদী ও সাগরে জারি থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা। এ সময় নদী ও সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, মওজুদ ও পরিবহন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

শরণখোলা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে বিজ্ঞান ভিত্তক প্রজনন সময় বিবেচনা করে আশি^ন মাসের পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার পাশাপাশি মাইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ও বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৎস্য বিভাগ। এছাড়া ইলিশ সহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইতোমধ্যে নৌকা ও ফিশিং ট্রলারসহ সাগরের জেলেরা মাছ ধরার সরঞ্জামাদি নিয়ে উপকূলের দিকে আসতে শুরু করেছে। আইন অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন ইলশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে দায়ি ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

অন্যদিকে, এ বছর সাগরে বার বার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও নিম্ন চাপের কারনে জেলেরা আশানুরূপ মাছ ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে ও মহাজনদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। কারন লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে লাভবান না হওয়ায় অনেকেই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

শরণখোলায় দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য ব্যবসার সাথে জড়িত মোঃ জামাল হোসেন ও তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে তারা বেশ কয়েকবার বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছেন। উত্তাল সাগরে মাছ ধরতে না পেরে খালি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন ফলে তারা বিপুল আর্থিক লোকসানে পড়েছেন ।

শরণখোলা ফিশিংট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, সাগরে মাছ ধরতে ফিশিংবোট পাঠাতে একেকটি বোটের পিছনে কমপক্ষে তিন চার লাখ টাকা ব্যয় হয়। এবছর সাগরের আবহাওয়া নয় দফা খারাপ হওয়ায় জেলেরা মাছ ধরতে পারেনি ফলে বিপুল পরিমাণ লোকসান হওয়ায় জেলে মহাজনদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। প্রতি বছর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গিয়েই জেলেরা বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পরে বর্তমানে আবার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার খবরে বেকার হওয়া জেলেদের মাঝে হতাশা ও উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে বলে আবুল হোসেন মনে করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শরণখোলার অনেক ট্রলার মালিক বলেন, বাংলাদেশের জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মান্য করে চললেও ভারতীয় জেলেরা এ সুযোগে বাংলাদশের সীমানায় এসে মাছ ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন।

শরণখোলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইলিশের প্রজনন ও মা ইলিশ রক্ষার জন্য ২২ দিনের ইলিশ অবরোধ ঘোষণা করা হয়েছে। অবরোধ চলাকালীন সময়ে সারাদেশে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ করে রাখা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ইতোমধ্যে জেলেদের সচেতন করার লক্ষ্যে শরণখোলা সহ উপকূলীয় অঞ্চলে মাইকিং, লিফলেট বিতরণকরা হয়েছে এবং গ্রাম সিমিতির মাধ্যমে সচেতনতা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া এ সময়ে শরণখোলা উপজেলার ৪৮৯৫ জেলের মধ্যে ২৫ কেজি করে সরকারি বরাদ্দের চাল ২/৩ দিনের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান।

আরো সংবাদ