আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - ভোর ৫:৩৫

কীভাবে বুঝবেন আপনি অপচয়ী

লাইফস্টাইল ডেস্ক: আপনার বন্ধুরা প্রায়ই আপনাকে বলে, কি ব্যাপার তুই যে এতো টাকা কামাস, সেগুলো কই যায়! পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ একটাই, আর্থিকভাবে আপনি এতো এলোমেলো কেন। এই প্রশ্নগুলো নিশ্চয়ই এমনি এমনি আপনার কাছে আসে না। আপনি অর্থ উপার্জন করেন, অথচ সেই অর্থ যে কই যায়, কীভাবে কার জন্য খরচ হয় সেটা আপনিই বুঝতে পারেন না। এতে দিন, মাস, বছর শেষে আপনি পড়েন বিপাকে। কাউকে বোঝাতেও পারেন না, জীবনটাকে গোছাতেও পারেন না আর্থিকভাবে।

এমন ঘটনা অনেকেরই আছে। যারা আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করে, অর্থের হিসাব রাখতে পারে না, তাদের এককথায় আমরা অপচয়ী বলতেই পারি। আরেকভাবে বলতে গেলে টাকা ওড়ানো। আপনার নিজের সঙ্গে যদি এমনটা ঘটে, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনিও হয়তো অপচয়ীদের কাতারে। কীভাবে বুঝবেন যে আপনি আসলেই অপচয়ী, সেটা নিয়েই থাকছে আজকের আলোচনা-

আপনি হিসাব করতে পছন্দ করেন না

অনেকেরই হিসাব করে চলার প্রতি কোনো ঝোঁক থাকে না। টাকা আসবে টাকা আসবে, টাকা তো খরচ করার জন্যেই- এগুলো কথা মাথায় থাকে অনেকের। টাকা আসছে আর যাচ্ছে, এর মাঝে সব খরচ হয়ে যাচ্ছে। সময় শেষে দেখলেন আপনার হাতে অবশিষ্ট কিছু নেই।

আপনার ঋণ বাড়ছে

প্রয়োজনে ঋণ করাই। খুব দরকার, কাছের মানুষগুলোর কাছে আপনি সাহায্য নিতেই পারেন। কিন্তু প্রয়োজনের বাইরে আস্তে আস্তে শখ মেটাতে গিয়ে, উপহার দিতে গিয়ে, অন্যের জন্যে খরচ করতে গিয়ে দেখবে আয়ের চেয়ে আপনার খরচ হয়ত বেশি হচ্ছে। সেই খরচ মেটাচ্ছেন বিভিন্ন খাত থেকে ঋণ নিয়ে। অর্থাৎ বুঝতে হবে আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই খরচের প্রতি।

আপনার কোনো সঞ্চয় নেই

আমাদের আয় যাই হোক না কেন, ভবিষ্যতের কথা ভাবতে গিয়ে নিশ্চয়ই আপনি একটু একটু করে টাকা আলাদা করে রাখতে চাইবেন। যাতে কোনো বিপদে কারো কাছে হাত পাততে না হয়। কিন্তু আপনি আয় ভালোই করছেন, খরচও করছেন ভীষণ। ওদিকে দেখলেন আপনার একটা টাকাও কোথাও জমছে না। মানে আপনি সব অপচয় করে ফেলছেন।

আয়ের চেয়ে বেশি বা বাজে খরচ

সবারই নির্দিষ্ট একটা আয় থাকে। চাকরিজীবীদের আয় সীমাবদ্ধ, ব্যবসায়ীদের আয় নির্দিষ্ট নয় বলা যায়। কিন্তু আপনার তো অনুমান আছে যে আপনার আয় অনুযায়ী খরচ কেমন হয় প্রতিমাসে বা বছরে। তবে আপনি যদি সেই আয়সীমার বাইরে গিয়ে হাত খুলে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে বেশি খরচ করেন তাহলে বুঝতেই হবে আপনি অপচয় করেন।

ব্যাকগ্রাউন্ড না ভেবে মানুষের কথা শোনা

আমাদের সবারই নির্দিষ্ট একটা স্ট্যাটাস থাকে। তার মধ্যেই আমাদের সবকিছু। কিন্তু অনেকেই চায় স্ট্যাটাস থেকে বেরিয়ে আরও জাঁকজমকভাবে জীবন কাটাতে। সেক্ষেত্রে মানুষ আশেপাশে যাদের সঙ্গে চলে তারাও প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। যেমন বন্ধু, আত্মীয় বা সহকর্মী সার্কেলের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া, তাদের মতো হতে চেষ্টা করা। নিজেকে বড় করে উপস্থাপন করতে গেলে বুঝবেন আপনি অপচয়ী।

শৃঙ্খলা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব

ধনী তো সবাই হতে চায়, কিন্তু সেটা তো নিশ্চয়ই নিজের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে নয়। আপনি কেমন সেটা আপনিই ভালো জানবেন। কিন্তু ধনী প্রমাণ করতে গিয়ে যদি আপনার মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ কমে যায়, জীবনযাপন নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় তাহলে বুঝবেন আপনি অপচয় করেন।

আপনার আর্থিক লক্ষ্য না থাকলে

সবারই একটা আর্থিক লক্ষ্য থাকে জীবনে। এই যেমন আর ৫বছর পরে আমি নিজেকে অমুক ভালো জায়গায় দেখতে চাই, আমার চাকরিটা ভালো হোক, ব্যবসাটা মন দিয়ে করি, আয়ের লক্ষ্য যেন এমনটা হয়। এই পরিকল্পনাগুলো থাকলে আপনি আর্থিক জীবনকে সাজাতে পারবেন। আর লক্ষ্য না থাকলে বুঝে নেবেন আপনার কোনো পরিকল্পনা নেই, জীবন চলছে অপচয় করেই।

সময়ের আগেই দেখবেন পকেট খালি

আপনার তো নিশ্চয়ই একটা হিসাব থাকে যে এই সময়ের মধ্যে এই টাকাটা খরচ করবো। কিন্তু সেই সময়ের আগেই পকেটে হাত দিয়ে দেখলেন সেটা প্রায় খালি। অথচ দিন পড়ে অনেক। অথচ হিসাবই করতে পারছেন না যে আপনার এতো টাকা কোথায় গেলো, কেমনে খরচ হলো! যে খাতে খরচ করার কথা, সেই খাতে খরচ না করে অন্যখাতে বেশি করে ফেলছেন। অর্থাৎ আপনি বেহিসেবি এবং অপচয়ী।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত